শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:২৪ pm
এইচএম.ফারুক, তানোর :
আলুর ভালো ফলন আশানুরূপ না হলেও চাহিদা ও ক্রেতা থাকায় রাজশাহীর তানোরে আলু চাষিদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। এ বছর আলুর বাজার ঠিক থাকলে লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন আলু চাষিরা। আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণী।
কৃষকরা জানায়, এ বছর পোকার আক্রমণ কম থাকলেও আলু ক্ষেতে নাবি ধ্বসা বা মড়ক রোগ দেখা দিলেও সময় মত পরিচর্চার জন্য আলুর ফলন ভালো হয়েছে। কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় রোগ সারাতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ গত বছরের চাইতে বেড়ে গেছে বহুগুণে।
১০ মার্চ রবিবার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ২৫.৫-২৭ টাকা দরে জমি থেকই বিক্রি করেছেন কৃষকরা। তবে প্রতিদিনই আলুর বাজার ওঠা নামা করছে। তবে এবছর মৌসুমের আলুর বাজার ঠিক থাকলে উপকৃত হবেন প্রান্তিক কৃষকরা এমনটাই জানান অনেক কৃষক।
কামারগাঁ ইউপির আলু চাষি মুনা সরদার জানান, প্রতিবার ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করি। গত মৌসুমে আগাম আলু বিক্রির জন্য লোকসান কম হয়েছিল । লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে এবারও আলু চাষ করেছি। আলু তোলা শুরু হয়েছে। সবকিছুর বাড়তি দাম। প্রতি বিঘায় ৫৫-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং বর্তমান বাজারে আলু বিক্রয় করলে বিঘায় ২০-২৫ হাজার টাকা মুনাফা হবে।
কলমা ইউপির কৃষক প্রভাষক সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত মৌসুমে ৮০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসান হয়। এবারো একই পরিমান জমিতে লাভের আসায় আলু চাষ করি, বাজারে যে দাম তাতে লাভের মুখ দেখা যাবে। আলু উত্তোলন চলছে। কীটনাশক সার ও সেচের অতিরিক্ত খরচ। বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম দ্বিগুণ হলেও আলুর বাজারে এমন থাকলে স্বস্থির নিঃশ্বাস পড়বে ।
এদিকে, উপজেলার আলু সংরক্ষনে ব্যক্তিমালিকানাধীন ছয়টি হিমাগার রয়েছে। যার ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৭ হাজার ১৭৫ টন। যার মধ্যে উপজেলার এএম হিমাগারে ১৪ হাজার ৯৫০, আল মদিনা সিড হিমাগারে ১০ হাজার ৭৩৫, তামান্না পটেটো হিমাগারে ১৯ হাজার ৫০০, রহমান ব্রাদার্স হিমাগারে ২২ হাজার, রহমান পটেটো হিমাগারে ২০ হাজার এবং সদ্যনির্মিত বিসমিল্লাহ হিমাগারে ২০ হাজার টন আলু সংরক্ষণ করা যাবে।
চাহিদা পূরণে উৎপাদিত আলু জমি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। কেউ ঋণ মেটাতে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন আবার কেউ সংরক্ষণ করছেন উপজেলার ও উপজেলার বাহিরের হিমাগারে।
উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ আকবর হোসেন বলেন, গত মৌসুমে পোকার আক্রমণ বেশি থাকলেও এ কৃষকদের মৌসুমে তেমন ছিলো না, তবে কিছু মাঠে আলু ক্ষেতে নাবি ধ্বসা বা মড়ক রোগ দেখা দিয়েছিলো আমরা সঠিক সময় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে কাজ করে তা নিয়ন্ত্রণে করতে সক্ষম হই। সময় মত পরিচর্চার জন্য আলুর ফলন ভালো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর আলুর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ২৯ টন হিসাবে আলুর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার ৩৩৫ টন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য রোগবালায় কম ছিলো। তবে বাজারে যে দাম আছে তাতে কৃষক খুশি। আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে রাখতে পারেন কৃষক। তানোরে উৎপাদিত আলু দেশের চাহিদা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। রা/অ