বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৫৪ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক
গোদাগাড়ীতে মাটিকাটার প্রতিবাদে গ্রামবাসির বিরুদ্ধে মামলার খড়গ

গোদাগাড়ীতে মাটিকাটার প্রতিবাদে গ্রামবাসির বিরুদ্ধে মামলার খড়গ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মার পানি শুকিয়ে যখন চর পড়ে, তখন সেই চরে ফসলের আবাদ করেন দরিদ্র মানুষেরা; কিন্তু সেই মাটিই কেটে নিয়ে যাচ্ছে বালু কারবারিরা। ফসলসহ এ মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করায় মামলার খড়গ পড়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সেখেরপাড়া ও বারোমাইল-বিদিরপুর গ্রামের লোকজনের ওপর।

বালুঘাট ইজারা গ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে আজাদ আলী নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি রাজশাহীর আদালতে গ্রামের ১০ জনের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেন। আদালত আসামিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান।

রোববার বিবাদীদের সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

নোটিশ পেয়ে রোববার সকালে বিবাদীরা রাজশাহীর আদালতে এসেছিলেন। তবে তারা একা নন, তিন গ্রামের অন্তত ৪০০ মানুষ এ দিন তাদের সঙ্গে এসেছিলেন আদালত চত্বরে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করায় তারা এর প্রতিবাদ জানান।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তারা বিক্ষোভ করেন। পরে তারা প্রতিকার চেয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন।

জেলা প্রশাসনের ইজারা দেওয়া এই বালুমহালটি গোদাগাড়ী উপজেলার সেখেরপাড়া গ্রামে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ ঘাটটি ইজারা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। আগে সেখেরপাড়া ওয়াবদা মাঠে এলাকার ছেলেরা খেলাধুলা করত কিন্তু এখন এ খেলার মাঠের ওপর দিয়েই বালুবাহী ট্রাক চলে। এলাকার যুবকেরা এখন আর ওই মাঠে খেলাধুলা করার সুযোগ পায় না।

বিক্ষোভে এসেছিলেন এলাকার কলেজশিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আবদুস সালাম। বালু কারবারিদের মামলায় তাকেও বিবাদী করা হয়েছে।

আবদুস সালাম বলেন, যেভাবে গ্রামের পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাতে কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। এলাকার মসজিদ, স্কুল থেকে শুরু করে সবই ভরা মৌসুমে পদ্মায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তারা মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসে মাটি কাটা বন্ধ করেন। একদিন মাটি কাটা বন্ধ রেখে মাপজোখ করা হয়। ইজারা গ্রহণকারীরা কোন দিকে কতটুকু বালু ও মাটি কাটবেন তা তিনি দেখিয়ে দিয়ে যান। এরপরও তারা গ্রামের পাশ থেকে মাটি কাটতে শুরু করে। তখন বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

এই বিক্ষোভে প্রেমতলী-কাঁঠালবাড়িয়া, সেখেরপাড়া-বারোমাইল ও বিদিরপুর গ্রামের প্রায় ৪০০ নারী-পুরুষ আসেন।

সেখেরপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকায় সরকারি বন রয়েছে। মাটি ও বালু কেটে নিয়ে যাওয়ার কারণে সামাজিক বনবিভাগের এই বনও হুমকির মুখে পড়েছে। এই বনের কর্মকর্তারা ঘুস খান। তারা কোনো প্রতিবাদ করেন না। আমরা সবকিছু রক্ষার জন্যই প্রতিবাদ করেছি। এজন্য আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে গ্রামবাসী বড় আন্দোলন গড়ে তুলবে। গ্রাম বাঁচাতে আমাদের কাছে আর কোনো পথ নেই।

গ্রামের বাসিন্দা গোলাম কবির খোকন বলেন, নদীর পানি নেমে যাওয়ার পর গ্রামের পাশে দরিদ্র লোকজন চাষাবাদ করেন। সেই জমিই ফসলসহ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটার জন্য। এর ফলে গ্রামের লোকজন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা চাষাবাদ থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি গ্রামের পাশে গভীর খাদ তৈরি হচ্ছে। আসছে ভরা মৌসুমে পানি এলেই ভাঙন শুরু হবে। এর ফলে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই আমরা চাই আমাদের গ্রামে যেন বালুমহাল করে ইজারা দেওয়া না হয়। তাহলে আমাদের ছেলেরা আবার খেলার মাঠে খেলবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।

গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে বালুমহাল ইজারা গ্রহণকারীদের একজন আনোয়ার হোসেন বলেন, বালুমহালে বালুর পাশাপাশি মাটিও কাটতে পারব। সিডিউলে মাটি কাটার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে কোথাও কোন কাজই শতভাগ নিয়ম মেনে করা যায় না। এখানেও একটু এদিক-সেদিক হয়েছে। এখন গ্রামের কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তি সুবিধা না পেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীকে বিক্ষুব্ধ করে তুলছেন। আজ গ্রামের লোকজন শহরে এসেছিলেন। তাদের মুরুব্বিরা আমার সঙ্গেও দেখা করেছেন। আগামী ২২ তারিখে তাদের সঙ্গে আবার বসতে চেয়েছি। সমস্যার আমরা সমাধান করে ফেলব। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.