সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৮ am

সংবাদ শিরোনাম ::
রাজধানীতে প্রেসক্লাবে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক, যান চলাচল বন্ধ একতরফা নির্বাচন গায়ের জোরে করতে চাই না কেউ : নতুন সিইসি গাজীপুরে দুর্ঘটনায় নিহর শিক্ষার্থী সাকিবের লাশ রাজশাহীতে দাফন কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে প্লাজমা ফাউন্ডেশনের ৯ম তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন আমবাগান থেকে বাঘায় দিনমুজুরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নগরীতে জেলা কৃষকলীগ সভাপতি তাজবুল ইসলামসহ ১৫ জন গ্রেপ্তার নাচোলে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ১৪৮তম শাখা উদ্বোধন গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা : সাকি তানোরে আলু বীজে মহাসিন্ডিকেট, দ্বিগুন দামে দিশেহারা চাষীরা! দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিক সরকারের দাফন সম্পন্ন দুর্গাপুরে বিএনপি’র আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপিত মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল
গোদাগাড়ীতে মাটিকাটার প্রতিবাদে গ্রামবাসির বিরুদ্ধে মামলার খড়গ

গোদাগাড়ীতে মাটিকাটার প্রতিবাদে গ্রামবাসির বিরুদ্ধে মামলার খড়গ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মার পানি শুকিয়ে যখন চর পড়ে, তখন সেই চরে ফসলের আবাদ করেন দরিদ্র মানুষেরা; কিন্তু সেই মাটিই কেটে নিয়ে যাচ্ছে বালু কারবারিরা। ফসলসহ এ মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করায় মামলার খড়গ পড়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সেখেরপাড়া ও বারোমাইল-বিদিরপুর গ্রামের লোকজনের ওপর।

বালুঘাট ইজারা গ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে আজাদ আলী নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি রাজশাহীর আদালতে গ্রামের ১০ জনের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেন। আদালত আসামিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান।

রোববার বিবাদীদের সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

নোটিশ পেয়ে রোববার সকালে বিবাদীরা রাজশাহীর আদালতে এসেছিলেন। তবে তারা একা নন, তিন গ্রামের অন্তত ৪০০ মানুষ এ দিন তাদের সঙ্গে এসেছিলেন আদালত চত্বরে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করায় তারা এর প্রতিবাদ জানান।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তারা বিক্ষোভ করেন। পরে তারা প্রতিকার চেয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন।

জেলা প্রশাসনের ইজারা দেওয়া এই বালুমহালটি গোদাগাড়ী উপজেলার সেখেরপাড়া গ্রামে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ ঘাটটি ইজারা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। আগে সেখেরপাড়া ওয়াবদা মাঠে এলাকার ছেলেরা খেলাধুলা করত কিন্তু এখন এ খেলার মাঠের ওপর দিয়েই বালুবাহী ট্রাক চলে। এলাকার যুবকেরা এখন আর ওই মাঠে খেলাধুলা করার সুযোগ পায় না।

বিক্ষোভে এসেছিলেন এলাকার কলেজশিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আবদুস সালাম। বালু কারবারিদের মামলায় তাকেও বিবাদী করা হয়েছে।

আবদুস সালাম বলেন, যেভাবে গ্রামের পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাতে কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। এলাকার মসজিদ, স্কুল থেকে শুরু করে সবই ভরা মৌসুমে পদ্মায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তারা মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসে মাটি কাটা বন্ধ করেন। একদিন মাটি কাটা বন্ধ রেখে মাপজোখ করা হয়। ইজারা গ্রহণকারীরা কোন দিকে কতটুকু বালু ও মাটি কাটবেন তা তিনি দেখিয়ে দিয়ে যান। এরপরও তারা গ্রামের পাশ থেকে মাটি কাটতে শুরু করে। তখন বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

এই বিক্ষোভে প্রেমতলী-কাঁঠালবাড়িয়া, সেখেরপাড়া-বারোমাইল ও বিদিরপুর গ্রামের প্রায় ৪০০ নারী-পুরুষ আসেন।

সেখেরপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকায় সরকারি বন রয়েছে। মাটি ও বালু কেটে নিয়ে যাওয়ার কারণে সামাজিক বনবিভাগের এই বনও হুমকির মুখে পড়েছে। এই বনের কর্মকর্তারা ঘুস খান। তারা কোনো প্রতিবাদ করেন না। আমরা সবকিছু রক্ষার জন্যই প্রতিবাদ করেছি। এজন্য আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে গ্রামবাসী বড় আন্দোলন গড়ে তুলবে। গ্রাম বাঁচাতে আমাদের কাছে আর কোনো পথ নেই।

গ্রামের বাসিন্দা গোলাম কবির খোকন বলেন, নদীর পানি নেমে যাওয়ার পর গ্রামের পাশে দরিদ্র লোকজন চাষাবাদ করেন। সেই জমিই ফসলসহ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটার জন্য। এর ফলে গ্রামের লোকজন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা চাষাবাদ থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি গ্রামের পাশে গভীর খাদ তৈরি হচ্ছে। আসছে ভরা মৌসুমে পানি এলেই ভাঙন শুরু হবে। এর ফলে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই আমরা চাই আমাদের গ্রামে যেন বালুমহাল করে ইজারা দেওয়া না হয়। তাহলে আমাদের ছেলেরা আবার খেলার মাঠে খেলবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।

গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে বালুমহাল ইজারা গ্রহণকারীদের একজন আনোয়ার হোসেন বলেন, বালুমহালে বালুর পাশাপাশি মাটিও কাটতে পারব। সিডিউলে মাটি কাটার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে কোথাও কোন কাজই শতভাগ নিয়ম মেনে করা যায় না। এখানেও একটু এদিক-সেদিক হয়েছে। এখন গ্রামের কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তি সুবিধা না পেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীকে বিক্ষুব্ধ করে তুলছেন। আজ গ্রামের লোকজন শহরে এসেছিলেন। তাদের মুরুব্বিরা আমার সঙ্গেও দেখা করেছেন। আগামী ২২ তারিখে তাদের সঙ্গে আবার বসতে চেয়েছি। সমস্যার আমরা সমাধান করে ফেলব। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.