শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৩২ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
কাঁকনহাটে জালিয়াতি-প্রতারণা করে বিএনপি নেতা কারাগারে

কাঁকনহাটে জালিয়াতি-প্রতারণা করে বিএনপি নেতা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
একের পর এক জালিয়াতি আর প্রতারণা করে অবশেষে কারাগারে গেছেন রাজশাহীর কাঁকনহাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান। গত সপ্তাহেই মাছ চুরির মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিন নিয়ে এসে তিনি এবার প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার একের পর এক প্রতারণার ঘটনা সামনে এলেও বিএনপি কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি।

গত ২৫ জানুয়ারি হাফিজুর রহমান সরকার নামের এক মাছচাষি গোদাগাড়ী থানায় বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান ও তার ভাই ইসমাইল হকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ১৭ জানুয়ারি রাতে দুই ভাই হাফিজুরের পুকুর থেকে ১২০ মণ মাছ চুরি করে নিয়ে যান বলে মামলায় বলা হয়। এরপর গত ৩০ জানুয়ারি দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে যান হাবিবুর রহমান। এরপর গত রোববার বিকেলে হাবিবুর আবার র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন। পরে র‌্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাবিবুর লোকজনের কাছ থেকে প্রতারণামূলক দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। তখনও র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। হাবিবুর রহমান কাঁকনহাট পৌরসভার ব্রাহ্মণগ্রাম মহল্লার বাসিন্দা।

এই বিএনপি নেতার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। হাবিবুর রহমান এখন তার একসময়ের ব্যবসায়ীক অংশীদার নাহিদের মামলায় কারাগারে আছেন। নাহিদ জানান, পুকুর ইজারা নিয়ে হাবিবুরের সঙ্গে তিনি মাছ চাষ করতেন। এ জন্য বিভিন্ন সময় তাকে দিয়েছেন ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ২০২০ সাল থেকে হাবিবুর পুকুর থেকে মাছ বিক্রির কোনো টাকা তাকে দেননি।

এ জন্য নাহিদ বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চাইলে হাবিবুর না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। টাকা না দিতে হাবিবুর তার নামে তিনটি হয়রানিমূলক মামলা করেন। তথ্য-প্রমাণ না থাকায় আদালত মামলাগুলো খারিজ করে দিয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি নাহিদ তার টাকা ফেরত চান। তখন হাবিবুর তাকে হুমকি দেন যে, টাকা চাইলে তাকে ‘খুন করে লাশ গুম’ করে দেওয়া হবে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে তিনি টাকা আদায়ে মামলা করেন।

জানা গেছে, একই ঠিকানায় একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন হাবিবুর রহমান ও তার ভাই রবিউল হক এবং আবুল কালাম আজাদ। এ ব্যাপারে প্রাইম ব্যাংকের রাজশাহী শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে একটি অভিযোগও হয়েছে।

এরমধ্যে হাবিবুর রহমান কাঁকনহাট পৌরসভার ব্রাহ্মণগ্রাম মহল্লায় ঠিকানা দেখিয়ে ‘মা মৎস্য খামার’ নামে পৌরসভা থেকে একটি লাইসেন্স করেছেন। এই লাইসেন্স দিয়ে মা মৎস্য খামারের নামে ব্র্যাক ব্যাংকের রাজশাহী শাখা থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং এনআরবিসি ব্যাংকের কাশিয়াডাঙ্গা শাখা থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। অথচ ব্রাহ্মণগ্রাম মহল্লায় তার নিজের কোন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নেই। সেখানে তার বাড়ি।

হাবিবুর রহমান রাজশাহী নগরীর সপুরা বিসিকে ‘মা এন্টার প্রাইজ’ নামের আরেকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশন থেকে একটি লাইসেন্স নিয়েছেন। এই লাইসেন্স দিয়ে উত্তরা ব্যাংকের রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার শাখা থেকে ৬০ লাখ টাকা সিসি ঋণ এবং প্রাইম ব্যাংকের রাজশাহী শাখা থেকে ১৮ লাখ টাকা এসএমই ঋণ নিয়েছেন।

এদিকে হাবিবুর রহমান সপুরার যে ঠিকানা দিয়ে নিজের লাইসেন্স করেছেন, ওই একই ঠিকানা ব্যবহার করে আরও দুটি লাইসেন্স করেছেন তার ভাই আবুল কালাম আজাদ ও রবিউল হক। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এ লাইসেন্স দিয়ে তারাও নিজেদের নামে আলাদা আলাদা মোটা টাকা ঋণ নিয়েছেন।

এরমধ্যে রবিউল হক মেসার্স রিফাত এন্টার প্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী হয়ে অগ্রণী ব্যাংকের নিউমার্কেট শাখা থেকে ৬০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। আর আবুল কালাম আজাদ অগ্রণী ব্যাংকের একই শাখা থেকে তুলে নিয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। দুজনেরই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ধরণ মাছের খাবার ও খৈল-ভুষি বিক্রি। ঠিকানাও একই।

তিন ভাই সপুরায় যে ঠিকানা দিয়েছেন, সেখানে গিয়ে দেখা গেছে- শুধু একটিমাত্র গুদামঘর রয়েছে। তিন ভাইয়ের এই তিন প্রতিষ্ঠানের নামে বিসিক এলাকায় কোন সাইনবোর্ডও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এই ধরনের জালিয়াতি জানতে পেরে নড়েচড়ে বসেছে বলে জানা গেছে। তবে কোন ব্যাংকেরই ঊর্দ্ধতন কোন কর্মকর্তা এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাননি।

কারাগারে থাকায় এসব বিষয়ে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলা যায়নি। তবে হাবিবুরের ভাই রবিউল হকের দাবি, তার ভাই যে অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন সেগুলোর মীমাংসা করার চেষ্টা চলছিল। এরমধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সপুরায় একই ঠিকানায় তিন ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স এবং তা দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক এমনি এমনি আমাদের ঋণ দেয়নি। তারা দেখেশুনেই দিয়েছে।’ রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.