শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:০৯ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা
বাংলার ইতিহাসে ১০ জানুয়ারি এক অবিস্মরণীয় দিন : জান্নাতুল শিফা (সম্পা)

বাংলার ইতিহাসে ১০ জানুয়ারি এক অবিস্মরণীয় দিন : জান্নাতুল শিফা (সম্পা)

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি পকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাঁতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে। বিশ্বজুড়ে জাঁতি পরিচিতি পায় বীর বাঙালি হিসেবে। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। জাতির জনক পাকিস্তানিদের হাত থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে। ক্যালেন্ডারের পাতায় ততক্ষণে ৮ জানুয়ারি।

এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে একটি উড়োজাহাজে তুলে দেয়া হয়। সেখান থেকে স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। সকাল ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দীন আহমদ, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজে করে পরদিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন বঙ্গবন্ধু। ১০ তারিখ সকালে দিল্লিতে অবতরণ করেন শেখ মুজিব। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও তার গোটা মন্ত্রিসভা, স্থানীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতা ও জনগণের কাছে তাদের সহায়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। নিজের এ স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে তিনি আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।

১০ জানুয়ারি বেলা ১টা ৪১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ঢাকা ফিরে আসেন। বিমানবন্দর ও রাস্তার দুপাশে তখন অপেক্ষমাণ লাখো জনতা। সবার কণ্ঠে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ যে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবনবাজি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেই মাটিতে পা দিয়েই আবেগে কেঁদে ফেলেন। বিমানবন্দরে অস্থায়ী সরকারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সবাই অশ্রুসজল নয়নে বরণ করেন ইতিহাসের মহানায়ককে। তেজগাঁও বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করার পর খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে জনসমুদ্রের ভেতর দিয়ে রেসকোর্স ময়দানে এসে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে নিজের পরিবারের কাছে না গিয়ে সরাসরি জনগণের কাছে ফিরে এসেছিলেন। লাখো মানুষের সামনে তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘আমার বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে। আমার জীবনের স্বাদ আজ পূর্ণ হয়েছে। আমার বাংলার মানুষ আজ মুক্ত হয়েছে।’ আবেগঘন ভাষায় বললেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাবার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ বক্তৃতায় তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বললেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মীয়ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে- গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র।’ ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মদান স্মরণ করে বেদনা-ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাংলায় আজ বিরাট ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে।’ পরিশেষে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করে তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধজননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি।’ কবিগুরুর কথা মিথ্যা প্রমাণ হয়ে গেছে। আমার বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে।’

সেদিনকার রেসকোর্স ময়দান ছিল লোকে লোকারণ্য। বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১৭ মিনিট বক্তব্য দেন, যা ছিল জাতির জন্য দিকনির্দেশনা। বাংলাদেশের আদর্শগত ভিত্তি কী হবে, রাষ্ট্রকাঠামো কী ধরনের হবে, পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যারা দালালি ও সহযোগিতা করেছে তাদের কী হবে, বাংলাদেশকে বহির্বিশ্ব স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ, মুক্তিবাহিনী, ছাত্রসমাজ, কৃষক, শ্রমিকদের কাজ কী হবে, এসব বিষয়সহ বিভিন্ন দিক নিয়ে নির্দেশনা। তিনি ডাক দিলেন দেশ গড়ার সংগ্রামে। জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল- বাংলাদেশ স্বাধীন করা এবং দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা। আমাদের তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন। তার প্রথম স্বপ্ন তিনি পূরণ করেছেন।

আরেকটি স্বপ্ন যখন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছিলেন, তখনই বুলেটের আঘাতে সপরিবারে জাতির জনককে হত্যা করা হয়। ফলে প্রতিবছর এ দিবসটি উপলক্ষে, বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এবং প্রতিবছরের মতো এ বছরও নানা কর্মসূচি মাধ্যমে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হবে। যেন নতুন প্রজন্ম সমস্ত বিভ্রান্তি ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। বঙ্গবন্ধু আজ বিশ্ববন্ধু। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আমাদের সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করুক। সূত্র : এফএনএস

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.