শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৩৯ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
সব জায়গায় আলো ভালো নয়! রাজু আহমেদ

সব জায়গায় আলো ভালো নয়! রাজু আহমেদ

শহরের মাছের বাজারগুলোতে এবং সব্জির পশরাগুলোতে এতো অধিক পরিমানের পাওয়ারফুল বাল্ব ব্যবহার করা হয় যে, ক্রেতার চোখ জলসে যায়! মাছের রঙ বোঝা যায় না। সবজির সতেজতা ধরা যায় না! মাছ তাজা নাকি পঁচা সেটা দেখার জন্য গালসি তুলে ফুলকা দেখতে হয়! অতিরিক্ত আলোর ঝলকানিতে সেটার কিছুই বোঝা যায় না। সবকিছুর এক রঙ! ফলে ক্রেতার ব্যাগে পঁচা মাছ ঢুকে যায়! দীর্ঘ সময় বরফের বাইরে রাখায় মাছের হাল যে বেহাল হয়ে যায়, সেটা যাতে ক্রেতা ধরতে না পারে-সেজন্যই এতো আলোর আয়োজন, এটা আমার ধারণা! কৃষকের থেকে পাঁচ টাকায় কেনা সবজি-ফল কীভাবে বাজারে আসতেই ৫০ টাকা হয়ে যায় সেটা আলোই বলে দেয়!

খাঁটি দুধ পাওয়া যায়, খাঁটি মধু পাওয়া যায়, খাঁটি ঘি পাওয়া যায়-এমন বিজ্ঞাপনে দেশ ছেয়ে গেছে! খাঁটি মানুষের সংকটে সবকিছুকে খাঁটি প্রমাণ করতে আজকাল চ্যালেঞ্জ ছুড়তে হয়! তারপরেও সে খাঁটিতে অধিক ভেজাল! সুন্দরবনে মৌয়াল বস্তায় বস্তায় চিনি নিয়ে প্রবেশ করে, বাজারে বিক্রি হওয়া দুধের ক্রিম উঠিয়ে নেয়া, ঘিয়ে ডালডা মেশানো-এক অদ্ভুত দেশে এসে পড়েছি! ভাবছেন, এসব ভূতে করে? খাঁটি জিনিসের বিজ্ঞাপন দেয়া ভেজাল মানুষের কাজ! বাজারে এখন আসল বলতে কিছু আছে কি-না সন্দেহ হয়!

বিগত কিছুদিন পর্যন্ত ভোক্তা অধিকারের অভিযানের ভিডিওগুলো দেখছি! এতোদিন যা খেয়েছি তা বমনে বের হয়ে আসতে চায়। বিরিয়ানিতে ব্যবহার হচ্ছে কাপড়ের রঙ, খাসির জায়গায় কুকুর, কেক তৈরিতে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসয়নিক। চালে মোমপালিস! যা মানবশরীরের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর। খেঁজুর গুড় তৈরি হচ্ছে অথচ সে কারবার খেঁজুরের রস জানেই না! ফলের জুস তৈরি হচ্ছে অথচ সে ফল বেখবর! কৃত্রিমতায় বাজার ছেয়ে গেছে। যা মানবশরীরের জন্য আত্মঘাতী। যা খেয়ে অন্যজাতি বেঁচে থাকে আমরা তা তাড়াতাড়ি মরার জন্য খাচ্ছি? ভোক্তা অধিকারের জনবল সংকটের জন্য তাদের অভিযান সীমিত, অভিযোগের প্রতিকার মন্থর।

সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরা হয়, শিংসহ কিছু মাছের কালার পরিবর্তনের জন্য কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করে দেশি মাছ বলে ভোক্তাকে ধরিয়ে দেয়া হয়! কৃষক অতি লাভের আশায় অপরিপক্ক ফসলে টনিক ব্যবহার করে পণ্য বাজারজাত করে, ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় পন্য মওজুদ করে জাতির সাথে মুনাফেকি করে। বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কারিশমাতির অন্ত নাই। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার সব ফাঁদ পাতা। বাজারে সব পণ্যের বিক্রেতাদের অভেদ্য সিন্ডিকেট। একসময় ব্যবসায়ীদের কাছে খদ্দের লক্ষ্মীর সম্মান পেতো। এখন বিক্রেতা প্রভূ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের চালে রাষ্ট্র-সরকার নাকাল হয়ে যায়! খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার হয় তাদের জীবন বিষিয়ে দেয়া হয়!

আমরা খাদ্যের নামে খাদ্য খাচ্ছি? নাকি বিষ! বিশ্বের অন্যকোন জাতি তাদের বেঁচে থাকার উপকরণে ভেজাল মেশায়, বিষ প্রয়োগ করে তেমন দৃষ্টান্ত বিরল। আমাদের যত রোগশোক তার অধিকাংশ ভেজাল খাবার গ্রহনের প্রতিক্রিয়া! সুস্থতার জন্য ওষুধ খাবেন সেখানেও ভেজাল! সামগ্রিকভাবে আমাদের যে নৈতিকতার অধঃপতন ঘটেছে তার চিত্র সর্বত্র! সবাই শর্টকাটে বড়লোক হতে চাইছে। নয়তো খাদ্যে ভেজাল মেশানোর মত গর্হিত অপরাধ কোন মানব সন্তান করতে পারে? যারা ভেজাল মেশায় তাদের সন্তানেরা এবং তারা কোন না কেনভাবে কি তেমন ভেজাল খায় না? যদি আজীবন উপোস থাকে তবে ভেজালমুক্ত থাকা সম্ভব! তাও দূষিত বাতাস থেকে নবজেকে বাঁচানো অসম্ভব!

মানুষ নিজেদের ফাঁদে নিজেরা আটকাচ্ছে। একজন চালে ভেজাল মেশাচ্ছে তো আরেকজন মাছে। মশলায় যে ভেজাল মেশাচ্ছে সে ভাবছে তার অপরাধ কম! অথচ সবার ভেজাল পাল্টাপাল্টি হয়ে প্রত্যেকের কাছেই যাচ্ছে। এজন্য ওষুধের গড় খরচ বাড়ছে। চিকিৎসায় রোগের আরোগ্য মিলছে না। মানসিক অস্থিরতা, আগ্রাসন কিংবা অসহিষ্ণুতা বেড়ে যাচ্ছে। খাদ্যে ভেজালের কারণেই মানুষের শারীরিক অক্ষমতা বাড়ছে। চিন্তায় বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হওয়ায় সৃজনশীলতা কমছে!

যারা খাদ্যে ভেজাল মেশায় তাদের দমনের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনকে আরো যুগোপযোগী করে শাস্তির মাত্রা বৃদ্ধি করতে হবে। সাথে সাথে বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে। বিশেষ করে মাছ ও সবজির বাজারে ব্যবহৃত অতিরিক্ত আলোর সংকোচন করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা গেলে প্রজন্মকে সুস্থভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখাতে পারি। অনেকদিন বেঁচে থাকার মাঝে আলাদা কোন কৃতিত্ব নাই যদি সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে না বাঁচা যায়। লম্বা গড় আয়ুর সুফল ঘরে তুলতে যে-কোন মূল্যে খাদ্যে ভেজাল রুখতেই হবে। কলাম লেখক, [email protected]

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.