শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৪ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ
সংসদে কারা হবে বিরোধী দল? স্বতন্ত্র নাকি জাতীয় পার্টি

সংসদে কারা হবে বিরোধী দল? স্বতন্ত্র নাকি জাতীয় পার্টি

ডেস্ক রির্পোট :
আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিবিহীন আওয়ামী লীগের জয় অনেকটাই নিশ্চিত। তবে কারা বিরোধীদলের আসনে বসবে, এ নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। এছাড়াও আসন্ন নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ও হতে বড় ফ্যাক্টর।

জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া ২৬ আসনে নৌকার প্রার্থী সরে দাঁড়ালেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৩ আসনে চ্যালেঞ্জে ফেলেছে লাঙ্গলকে। দুটি আসনে নিজ দলের এমপিরা স্বতন্ত্র হয়ে বিপদ বাড়িয়েছেন। শুধু লাঙ্গলের বিপদ নয়, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনে নৌকা ডোবাতে পারেন, এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ভীতি ছড়াচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলে। ফলে আগামী সংসদে সংখ্যায় জাপাকে ছাপিয়ে যেতে পারেন স্বতন্ত্র এমপিরা।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তবে অনিশ্চয়তার খেলা নির্বাচনে কারা জয়ী হবে, সেটা আগ থেকেই অনুমান করা গেলে ভোটারদের আগ্রহ কমে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, এইবার নানা কায়দায় প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ কিছু এসেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর, কিছু ডামি প্রার্থীর; আর কিছু নতুন করে তৈরি করা হয়েছে কিংস পার্টির নামে। এর ফলে প্রার্থীর সংখ্যা বাড়লেও ভোটারের সংখ্যা বাড়বে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় আছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হারুন অর রশীদ বলেন, ৩০০ আসনের ৩০০ আসনেই তো সমঝোতা হয়নি। জাতীয় পার্টির সাথে হয়েছে ২৬ আসনে আর ১৪ দলের সাথে হয়েছে ৬টি আসনে। এছাড়াও যে আসনগুলো আছে, সেখানে অনেক প্রভাবশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে গেছে। কাজেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাপাকে ৪২ আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। এর ৩৩টিতে জয় পায়। এসব আসনে নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন না। বাকি ৯ আসনের ছয়টিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে হেরে যান জাপা প্রার্থীরা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দলটিকে ২৬ আসন ছাড়ে আওয়ামী লীগ; এর ২১টিতে জয় পায় লাঙ্গল। দুটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল। দুটিতেই ভরাডুবি হয় লাঙ্গলের।

দশম সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগকে হারায় জাপা। উপনির্বাচনে দুটি আসনে নৌকাকে হারালেও, জাতীয় নির্বাচনে এটাই আওয়ামী লীগকে হারানোর একমাত্র উদাহরণ। গতবার যে ১৪৫ আসনে নৌকার বিরুদ্ধে লাঙ্গল ছিল, বৃহত্তর রংপুরসহ সব জায়গায় জাপার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এবারও তিন-চারটি আসন বাদে কোথাও নৌকার বিরুদ্ধে লাঙ্গলের জয়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

জাপার এক কো-চেয়ারম্যান বলেন, আগামী সংসদে বিরোধী দল হওয়া কঠিন। স্বতন্ত্রের কারণে তৃতীয় স্থানে নেমে যাবে জাপা।

রংপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, প্রধান বিরোধী দল হওয়া দূরের কথা ১০টি আসন পাবে না। যদিও জাপার তিন শীর্ষ নেতার একজন সমকালকে বলেছেন, তা হবে না। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর জোট বিরোধী দল হলে, আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।

তবে জাপার রওশনপন্থি এক নেতা বলেন, এ ধারণা ভুল। জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের বছর দুয়েক ধরে কড়া সমালোচনা করে সরকারকে বারবার বিব্রত করেছেন। আগামীতে জাপাকে বিরোধী দল করার পথ অনেকটাই রুদ্ধ।

এদিকে, ১৫ আসনে জাপার জেতা কঠিন হয়ে পড়বে। এরমধ্যে নীলফামারী-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী গোলাম মোস্তফা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেও জাপার এমপি রানা মো. সোহেলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে রয়েছেন গোলাম মোস্তফার স্ত্রী মার্জিয়া সুলতানা। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এর মাধ্যমে আদতে গোলাম মোস্তফাই ভোটে রয়েছেন।

নীলফামারী-৪ আসনে জাপার এমপি আহসান আদেলুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখসেদুল মোমিন। তিনি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়েছেন।

রংপুর-১ আসনেও প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছে লাঙ্গল। তবে এখানে আওয়ামী লীগ নেতা নন, জাপার এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। লাঙ্গলের হোসেন মকবুল শাহারিয়ারকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে বলে জানা গেছে।

কুড়িগ্রাম-২ আসনের এমপি পনির আহমেদের বিরুদ্ধে নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত হামিদুল হক খন্দকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, তাঁর প্রভাব রয়েছে ফুলবাড়ী উপজেলায়।

গাইবান্ধা-২ আসনে লাঙ্গলের আবদুর রশিদ সরকারকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুখে পড়তে হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ সারোয়ার কবিরের বিরুদ্ধে। কবির জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি এমপি হতে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদ ছেড়েছেন।

সাতক্ষীরা-২ আসনে লাঙ্গলের আশরাফুজ্জামান আশুর প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান এমপি মীর মোস্তাক আহমদে রবি। তিনি নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আশরাফুজ্জামানকে ছাড় দিতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবু। স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, তাঁর সমর্থন না পেলে জাতীয় পার্টির জেতা মুশকিল।

পিরোজপুর-৩ আসনে জাপার মাশরেকুল আজম রবি আওয়ামী লীগের ছাড় পেলেও নিজ দলের এমপি রুস্তম আলী ফরাজীকে মোকাবিলা করতে হবে। লাঙ্গল না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন চারবারের এমপি ফরাজী। ২০১৪ সালেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।

নৌকা সরে যাওয়ায় ময়মনসিংহ-৫ আসনে জাপার সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন মুক্তি ফাঁকা মাঠ পেয়েছিলেন। তবে নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় জাপা চাপে পড়েছে।

ময়মনসিংহ-৮ আসনে চাপ আরও বেশি। সেখানে লাঙ্গলের দুইবারের এমপি ফখরুল ইমামের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দু’বারের উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন। নৌকা না থাকলেও লাঙ্গল জিতবে কিনা, তা এখন আলোচনা চলছে।

মানিকগঞ্জ-১ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাপার সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামের সমর্থনে নৌকার প্রার্থী তুলে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখানে শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ। তাঁর বিরুদ্ধে লাঙ্গলের জয় পাওয়া কঠিন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জি এম কাদের তাঁর স্ত্রী শেরিফা কাদেরের জন্য ঢাকা-১৮ আসনে ছাড় নিশ্চিত করে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন। এই আসনে জাপার সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল। এখানে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্পবিষয়ক সম্পাদক খসরু চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের এমপি হাবিব হাসানের সমর্থন না পেলে লাঙ্গলের জেতা সম্ভব নয় বলে জাপা সূত্র জানিয়েছে। খসরু চৌধুরী বলছেন, অনায়াসে জিতবেন।

হবিগঞ্জ-১ আসনে জাপার সাবেক এমপি মুনিম চৌধুরী বাবুর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আরেক সাবেক এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। ভোটের মাঠে তাঁরই পাল্লা ভারী বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

না চেয়েও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আওয়ামী লীগের ছাড় পেয়েছে জাপা। তবে এখানেও পরিস্থিতি অনুকূলে নয়। জাপার দু’বারের এমপি জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি গত অক্টোবরের উপনির্বাচনে ৩৭ হাজার ভোট পান। ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৪০ হাজার ভোট পান। সেই নির্বাচনে ৭২ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা মঈনউদ্দিন মঈন নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। গত নির্বাচনে জাপার রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া শেষ সময়ে নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছিলেন। তিনি এবারও দলটির প্রার্থী।

ফেনী-৩ আসনে জাপার এমপি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর সমর্থনে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করা হলেও তাঁর জয় সহজ নয়। সাবেক এমপি রহিম উল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জাপাকে হারিয়ে এমপি হন।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠকে হারাতে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে মাঠে নেমেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম। সূত্র : বাংলা টাইমস

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.