শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৪৯ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ
গভীররাতে মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটে তালা, শিক্ষার্থীরা রাস্তায়

গভীররাতে মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটে তালা, শিক্ষার্থীরা রাস্তায়

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর ‘মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউট’ নিয়ে বিভাগীয় শাস্তি হওয়া সেই এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী এবার ওই নার্সিং ইনস্টিউটে গভীর রাতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে নগরীর দেবিসিংপাড়ায় অবস্থিত সেই নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক, অফিস কক্ষ এবং ক্লাস রুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরে গতকাল বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়। এতে ওই প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ইনস্টিটিউটের বাইরে রাস্তায় অবস্থান করছে।

ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা জানায়, রাতের কোনো এক সময় মমতা নার্সিং ইনস্টিউটের প্রধান ফটকসহ অফিস ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর লোকজন। সকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে গিয়ে সেখানে তালা লাগানো দেখতে পায়। পরে তারা তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে এসপি আব্দুর রহিমের লোকজন শিক্ষার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এরপর থেকেই তারা বাইরে অবস্থান করছে।

সাইফ নামের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘সকালে আমরা কয়েকজন বন্ধু ইনস্টিটিউটে আসার পর দেখি অফিস এবং শ্রেণিকক্ষে তালা দেয়া। আমরা তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করি। এরপরই কয়েকজন বহিরাগত এসে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বের করে দেয় এবং নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। এমনকি ওই এসপির বোনও আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। অন্যায়ভাবে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পেশিশক্তি প্রয়োগ করে কেউ তালা ঝুলিয়ে দিক এটা আমরা মানবো না।

এই বিষয়ে মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এটি একটি সামাজিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।সেখানে এভাবে রাতের অন্ধকারে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা কোনোভাবেই আইনসিদ্ধ নয়। তিনি আইনের লোক হয়ে দীর্ঘদিন থেকেই এভাবে বেআইনি ও আর্টিফিয়িশাল ব্লেম করে আসছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ১৭ লাখ টাকা (ভর্তি ফি) তিনি আত্মসাৎ করেছেন।’

তিনি ফ্লাটের তখন অবধি মালিকানা স্বত্ব পাননি, ফলে অগ্রীম টাকা নিয়েও ভাড়া চুক্তি করেননা তিনি আরো বলেন, ‘তার অসত্য অভিযোগ যে, আমরা ভাড়া দিই না। সামাজিক বিচার শালীশ মানেননা বরাবরই ডিনি স্ববাবসুলভ মামলা বিলাশী মানুষ। বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করা মজ্জাগত, আদালতেও যান হরহামেশা। কিন্তু ইতোমধ্যে ভাড়া দাবি ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দায়ের করা কৃত্রিম মামলা বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দিয়েছেন।

জমিদখল, আপন মামাতো ভাই এর গাড়ী কেড়ে নেয়ায় জননিরাপত্তা বিভাগে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। তিনি এরুপ একটা ঘটনায় সরকার কতৃক তিরস্কার দন্ডও খেয়েচেন, রাজশাহীতে শত শত কৃষকের ধান নষ্টের অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনও হয়েছে। আজকের ঘটনাস্থল ওই ভবনের জমির মালিকদের সঙ্গেও ওই পুলিশ কর্মকর্তার মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদ্বন্দ্ব চলমান এবং এই মালিকানা নিয়ে সিটি কর্পোরেশনেও পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগ রয়েছে। ’ একজন পদস্থ কর্মকর্তার ব্যাক্তি স্বার্থ ও অপেশাদারি মনোভাব সভ্যতার সাথে সাংঘাতিক বেমানান।

তালা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাসায় তারা ভাড়া থাকে। ২৪ লক্ষ টাকা ভাড়া বাকি। এর আগেও স্বাক্ষর জালিয়াতির একটি মামলা রয়েছে। অনেকবার টাকা-পয়সা চাইলেও তারা সেই টাকা দিচ্ছে না।’
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, ওই ভবনের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে ইনস্টিটিউটে তালা দেওয়ার ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত নয়। আমি একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে জানাতে পারবো।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে টাঙ্গাইলের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী। এর আগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের মালিকানা দাবি ও উদ্যোক্তাদের হয়রানি করায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তাকে গুরুদণ্ডের (বেতন কমানো) সাজা দেয়।’

জানা গেছে, ঢাকায় পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) থাকাকালে রাজশাহীর ওই নার্সিং ইনস্টিটিউট পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে জড়িয়ে সেটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে রহিমের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগটি তদন্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এর সত্যতা পায়। এরপর তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গুরুদণ্ড দেয়।

সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আব্দুর রহিম রাজশাহীর বালিয়াপুকুর দেবীসিংপাড়ার জার্মিনেট প্লাজায় ‘মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউট’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনার সঙ্গে যথাযথ কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে সম্পৃক্ত হয়ে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করা, চেয়ারম্যান ও ভবন মালিক হিসেবে ৩০ শতাংশ অংশীদারত্ব দাবি করা, মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতপার্থক্য তৈরি করা ও তা দখল নেওয়ার চেষ্টা করা এবং এ প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে ২০২০ সালের ১৭ অগাস্ট কারণ দর্শানো নোটিস দেওয়া হয়।

২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর আব্দুর রহিম কারণ দর্শানোর জবাব দেন জানিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৪ মার্চ ব্যক্তিগত শুনানি নেওয়া হয়। অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সানা শামীনুর রহমানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দেন। সেখানে আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ প্রতীয়মান হয়েছে বলে জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অভিযোগ, লিখিত জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য, তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক দলিলপত্র পর্যালোচনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হলে তিনি তার জবাব দেন।

‘আনীত অভিযোগ, প্রথম ও দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব, শুনানিকালে উভয়পক্ষের বক্তব্য, তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক দলিলপত্রাদি বিবেচনায় বিধি মোতাবেক অসদাচারণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন বছরের জন্য আব্দুর রহিমকে ‘নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’ গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’ রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.