রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৫৩ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি এবারও ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে ইতোমধ্যেই ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন।
তবে এবার তার প্রতিদ্বন্ধি হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রবীন রাজনীতিবিদ অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। কাঁচি প্রতীক নিয়ে তিনি ভোট করবেন।
ফজলে হোসেন বলছেন, মানুষ নৌকা প্রতীক দেখে তাকে ভোট দেবেন। আর শফিকুর রহমান বলছেন, তিনি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় দলটির কর্মী-সমর্থকেরা তার পক্ষে থাকবেন এবং তারা তাকেই ভোট দেবেন।
রাজশাহীর ভোটের মাঠে এখন আলোচনার শীর্ষে দুই বাদশা। সবার ধারণা, আসনটিতে এবার দুই বাদশার লড়াই জমবে ভালো।
সোমবার বিকেলে নগরের কাশিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরুতে ফজলে হোসেন বাদশা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলছেন, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের নির্বাচনের আহ্বান গ্রহণ করছেন। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে বোঝা যায় যে তাদের সমর্থনটা কোন দিকে আছে। পরিবেশ স্বাভাবিক। এখানে কোনো রকম জবরদস্তিমূলক কিছু নেই।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে ফজলে হোসেন বাদশার ভাষ্য, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত যে প্রতিক্রিয়া, তাতে মনে হচ্ছে তাদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা অনেক বেশি। জনগণের অংশগ্রহণ যদি বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন তাদের অনুকূলেই রয়েছে। মানুষ চায়, এই সরকার আবার ফিরে আসুক। তাই তারা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবে।
ফজলে হোসেন বলেন, ১৪ দলীয় জোটের এই প্রার্থীর দাবি, মাঠের অবস্থা এবার আগের চেয়েও ভালো। আমি মনে করি, এই সময়ের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মানুষ উপলব্ধি করতে পেরেছে। আর গত ১৫ বছরে সরকারের যে উন্নতি এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, তা মানুষ নিজের চোখে দেখেছে। ফলে মানুষ মনে করে, এই সরকারের পুনরাবৃত্তি দরকার।
ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী-২ আসনে ১৫ বছর ধরে সংসদ সদস্য আছেন। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও এর প্রভাব ভোটে পড়বে বলে মনে করেন না তিনি। ফজলে হোসেন বলেন, বিএনপি সাধারণ জনগণকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে পারবে না। দলটির নেতাকর্মীরা হয়তো না-ও যেতে পারেন; কিন্তু সাধারণ মানুষ, যাদের ওপর বিএনপির কোনো প্রভাব নেই, তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।
এদিকে, আসনটিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বদশা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। উচ্চ আদালতের রায়ে দুপুরে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তবে তিনি এখনো প্রতীক পাননি। তিনি কাঁচি প্রতীক নিয়ে ভোট করতে আগ্রহি।
প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শফিকুর রহমান বাদশা। সেখানে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহীর মানুষ চেয়েছে, তিনি যেন নির্বাচন করেন। তার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার মাধ্যমে মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষার জয় হয়েছে।
ভোটে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী শফিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী রাজশাহী সদর আসনে ছিলেন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। উন্নয়নের ক্ষেত্রে মেয়রের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাজের সমন্বয় থাকা দরকার ছিল। কিন্তু সেটাও ছিল না।
তিনি বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের সময় স্লোগান ছিল ‘উন্নয়ন হয়েছে দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান’। মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের এই স্লোগান নিয়েই নির্বাচনে নেমেছি বলে জানান শফিকুর রহমান। নগর আওয়ামী লীগের ভোট তার ঘরেই আসবে।
এ আসনে এবার মোট সাতজন প্রার্থী রয়েছেন। দুই বাদশা ছাড়াও প্রার্থী রয়েছেন জাসদের আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী (মশাল), জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙল), বিএনএমের কামরুল হাসান (নোঙর), মুক্তিজোটের ইয়াসির আলিফ বিন হাবিব (ছড়ি) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির মারুফ শাহরিয়ার (ডাব)। রা/অ