রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৫৬ pm
এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
আন্তর্জাতিক মানবাধিকতার দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন শেষে পাঁচ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী নগরের বাটার মোড় থেকে তাদের আটক করা হয় বলে কেন্দ্রীয় বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেছেন।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে মহানগর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, রাজপাড়া থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি শাহানুর ইসলাম মিঠু, রাজশাহী সিটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সভাপতি কচি নাম জানিয়েছে বিএনপি। অন্য দুইজনের নাম বলেনি।
তাদের আটকের পর তাৎক্ষণিকভাবে বাটার মোড়ে বুলবুল বলেন, আজকের কর্মসূচিটা কেবল শেষ করেছেন। এর মধ্যেই সরকারের বাহিনীর যে আচরণ তা বোধগম্য নয়। আজকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। ইতিমধ্যে পাঁচজনকে কর্মসূচি শেষ করে চলে যাওয়ার সময় পুলিশ আটক করেছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়) মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। নাশকতা মামলা আছে। তাদেরকে আটক করা হয়েছে। তবে কোন থানা পুলিশ কাকে বা কতজনকে গ্রেপ্তার করেছে তা তিনি জানাতে পারেননি।
এদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনযায়ী বেলা ১১টার দিকে নগরের বাটার মোড়ে রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে তার আগে থেকেই গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের স্বজনরা চলে আসেন। স্বজনদের অনেকেই প্রিয়জনের কারাগারে দুর্বিষহ সময় কাটানোর বর্ণনা দেন। কীভাবে কখন তাদের তুলে নেওয়া হয় সেই বর্ণনা অনেকেই কান্নাভেজা কণ্ঠে বলতে থাকেন। কারও স্বামী, কারও দাদা, কারও ছেলে, কারও চাচা কারাগারে। তাঁরা জানতে চান, কীসের ভিত্তিতে তাদের এই কারাবাস। তাঁরা অবিলম্বে মুক্তি চান স্বজনদের।
কর্মসূচির শেষ দিকে রাজশাহী জেলা ও মহানগরের নেতা, আইনজীবী নেতা, বিএনপির কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী, জেলার সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কাসেম প্রমুখ।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘গত এক মাসে বাংলাদেশে এই সরকার নির্বাচনের সিডিউল দিয়েছে। এই সিডিউল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে। গতকালকে ঢাকাতে মায়ের ডাকের মানববন্ধন ছিল। সেটিও করতে দেয়নি এই সরকার। বিচার বিভাগ সাধারণ মানুষের টাকায় চলে, তারা আজকে সাধারণ মানুষকে জামিন দিচ্ছে না। অথচ একজন ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে কিনে নৌকায় চড়িয়ে আজকে নির্বাচন করাচ্ছে। পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে তল্লাশি করছে, নিপীড়ন-নির্যাতন করছে, এমনভাবে মা-বোনের সঙ্গে আচরণ করছে, যেটা একাত্তর সালেও আমরা দেখি নাই। আপনারা শান্ত হোন। আগামী দিনে আপনাদের বোন বেটি বাবা-মা যেখানে আছেন, আপনারা যেভাবে গিয়ে আমাদের কর্মীদের সাথে আচরণ করছেন, এরপরে যে আগামী মাস থেকে আপনাদের বাড়িতে একই রকম আচরণ হবে কি না বলতে পারছি না।’
মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই সরকার এদেশের স্বাধীন সার্বভৌমকে, মানুষকে আজকে নিঃচিহ্ন করে দিয়েছে। গত ২৮ তারিখ থেকে, তার আগে থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশের কারাগারে ১ হাজার ৮০০-এর মতো নেতা-কর্মী আছে। সামনে নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনে অংশ নিবে না। ওই নির্বাচনের দিন সেন্টারগুলোতে বিশেষ চার পায়ের জন্তু ছাড়া আর কেউ যাবে না। আপনারা ভয় দেখান। এই গরীব বোনদের ঘরে গিয়ে কানের দোল দাবি করেন। টাকা না দিলে ধরে নিয়ে যান। তাদের কাছে প্রচুর টাকা দাবি করছে। এ ব্যাপারে একজন বিচারপতিকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ রা/অ