শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৪৮ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
নিয়ামতপুরে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকিশিল্প

নিয়ামতপুরে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকিশিল্প

শাকিল হোসেন (নিজস্ব প্রতিবেদক) নিয়ামতপুর :
ও বউ ধান ভানে রে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া। ঢেঁকির পাড়ে পল্লীবধূদের এমন গান বাংলার গ্রামীণ জনপদে সবার মুখে মুখে শোনা যেত। ধান থেকে চাল, তা থেকে আটা। এক সময়ে চাল আর আটা প্রস্তুতের এক মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। নবান্ন এলেই ঢেঁকির পাড়ে ধুম পড়তো নতুন ধানের চাল ও আটা তৈরির। আর শীতের পিঠা তৈরি চলতো গ্রামের প্রায় সব বাড়িতে। তবে কালের বিবর্তনে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকিশিল্প। আর নতুন প্রজন্মের কাছে ঢেঁকি শব্দটি অতীতের গল্প মাত্র।

তবে বাস্তবে এর দেখা মেলা ভার। দেশের দু-এক জায়গায় থাকলেও ব্যবহার তেমন একটা নেই। আশির দশক থেকে ক্রমে বিলুপ্তির পথে ঢেঁকি। ঢেঁকিতে তৈরি করা আটা দিয়ে ঘরে ঘরে প্রস্তুত হতো পুলি, ভাপা, পাটিসাপটা, তেলে ভাজা, চিতইসহ নানা ধরনের বাহারি পিঠা পুলি। পিঠার গন্ধ ছড়িয়ে পড়তো এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপন করা হতো নবান্ন উৎসব।

গ্রামীণ জনপদগুলোতে এখন বিরাজ করছে শহুরে আবেশ। তাই গ্রামে গ্রামে আর ঢেঁকি নেই, নেই পল্লীবধূদের মন মাতানো গান। কিছু জায়গায় নবান্ন উৎসব হলেও পিঠা-পুলির সমাহার আর চোখে পড়ে না। গ্রাম বাংলার এমন চিরায়ত সব ঐতিহ্য এখন শুধুই স্মৃতি। ঢেঁকি ছাঁটা চাল শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী হওয়ায় তা দিয়ে গ্রামের শিশুদের জন্য তৈরি করে খাওয়ানো হতো।

সভ্যতার প্রয়োজনে ঢেঁকির আবির্ভাব ঘটেছিল। আবার গতিময় সভ্যতার যাত্রায় প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে ঢেঁকি বিলুপ্ত হচ্ছে। একে না মেনে নিয়ে উপায় নেই। দেশের গ্রামগুলোতে ঘুরলে একটি ঢেঁকিরও দেখা মেলে না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ঢেঁকির জায়গা দখল করে নিয়েছে বিদ্যুৎচালিত মেশিন। গ্রামগঞ্চে গড়ে উঠেছে মিনি রাইস মিল। ফলে ঢেঁকির অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। ঢেঁকিছাঁটা চাল ও চিড়া আজ আর নেই। এখন আর আগের মতো ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চোখে পড়ে না। ভোরের স্তব্ধতা ভেঙে শোনা যায় না ঢেঁকি ঢেঁকুর ঢেঁকুর শব্দ। চোখে পড়ে না বিয়েশাদি উৎসবে ঢেঁকিছাঁটা চালের ক্ষীর পায়েস রান্না। অথচ একদিন ঢেঁকি ছাড়া গ্রাম কল্পনা করা কঠিন ছিল। এক সময় গ্রামের প্রায় সব সভ্রান্ত পরিবারেই ঢেঁকি ছিল।

ধান ভাঙা কল আমদানির পর গ্রামাঞ্চল থেকে ঢেঁকির বিলুপ্তি শুরু হয়। ফলে গ্রামের মানুষ ভুলে গেছেন ঢেঁকিছাঁটা চালের স্বাদ। যান্ত্রিক সভ্যতা গ্রাস করেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঢেঁকিশিল্পকে। বর্তমান যুগের অনেকেই ঢেঁকি চেনে না। কালের পাতায় স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি। যেখানে বসতি সেখানেই ঢেঁকি, কিন্তু আজ তা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থেকে মুছে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে কিছু কিছু বাড়িতে ঢেঁকি থাকলেও তা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। আগে তা হতো না। ঢেঁকি শিল্প এখন রূপকথার গল্পের মতো। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.