শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের ফসলি মাঠের ১০-১২ জন কৃষকের প্রায় ৫০ বিঘা জমির আলু বীজের চারা গজায়নি। কৃষকেরা এসব জমিতে কারেজ জাতের আলুর বীজ রোপণ করেছিলেন। কোনো ক্ষেতে চারা গাছ ওঠার পর মাটির ভেতর আলুর বীজ পচেছে আবার কোথাও আলুর বীজের চারাই গজায়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলেছেন, আমরা ক্ষেতলালের ইটাখোলা বাজারের ওসমান উজ জামান মোল্লার দোকান থেকে ব্র্যাক কোম্পানির কারেজ জাতের আলুর বীজ কিনেছিলেন। ওসমান ব্র্যাক কোম্পানির আলুর বীজের ডিলার। আমরা প্রতি বছর ব্র্যাক কোম্পানির আলুর বীজ রোপণ করি। এবার ওই ডিলারের দোকান থেকে ব্র্যাকের কারেজ আলুর বীজ কিনে রোপণ করেছিলাম। কিন্তু আমরা এই আলুর বীজ রোপণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ডিলার আমাদের ব্র্যাকের আসল বীজ দিয়েছেন নাকি নকল দিয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, এবার এলাকার হিমাগারগুলোতে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে খাবার আলু বীজ আলু হিসেবে প্যাকেট করা হয়েছিল। সেই আলুর বীজ বাজারে এসেছে। এ কারণে ভালোমন্দ আলুর বীজ চিহ্নিত করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এবার জেলায় অনেক কৃষকের আলুর বীজ জমিতে পচে যাচ্ছে। আবার বীজের চারা উঠছে না।
কলিঙ্গা গ্রামের কৃষক তোরাব আলী বলেন, আমি আগাম বুকিং দিয়ে ক্ষেতলালের ইটাখোলা বাজারের ওসমান উজ জামানের দোকান থেকে ব্র্যাকের কারেজ জাতের আলু কিনে তিন বিঘা জমিতে রোপণ করেছিলাম। রোপণের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও আলুর বীজের চারাগাছ গজায়নি। প্রতি বছর ডিলার ওসমান উজ জামানের দোকান থেকে ব্র্যাকের আলুর বীজ কিনে জমিতে রোপণ করি। আগে কখন এ রকম হয়নি।
একই মাঠের কৃষক ইনসান ফকির বলেন, আমি আড়াই বিঘা জমিতে একই ডিলারের কাছ থেকে ক্যারেজ আলুর বীজ কিনে রোপণ করেছি। রোপণের পর মাটির ভেতর বীজ আলু পচে গেছে। এ মাঠের ১০-১২ জন কৃষকের ৩০ বিঘা জমির আলুর গাছ গজায়নি। এবার জেলার হিমাগারগুলোতে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোড়কে খাবার আলু বীজ আলু হিসেব প্যাকেট করা হয়েছে। আমাদের মতো সাধারণ কৃষকদের ভালোমন্দ বীজ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
কৃষক ছানাউল মন্ডল বলেন, সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ক্যারেজ আলু বীজ রোপণ করেছিলাম। বীজ আলু পচে গাছ গজায়নি। নতুন করে তিন বিঘা জমিতে গ্যানুলা আলু রোপণ করেছি।
এ বিষয়ে ইটাখোলা বাজারের ডিলার ওসমান উজ জামান বলেন, চলতি মৌসুমে ব্র্যাকের এ গ্রেড ১৯৩ বস্তা, বি গ্রেড ৪০৩ বস্তা কারেজ আলুর বীজ পেয়েছি । এ দুটি গ্রেডের আলুর বীজ ৬৯ জন কৃষক আলুর বীজ কিনেছেন। এরমধ্যে ১০ জন কৃষকের অভিযোগ করেছেন। আলুর বীজ সঠিক ছিল। কৃষকরা রোপণের সময় কোনো ক্রুটি করার কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে মনে করছি। ব্র্যাকের বীজ কোম্পানি টেরিটরি কর্মকর্তা আলুর ক্ষেতে গিয়েছিলেন তিনি ভালো বলতে পারবেন।
ব্র্যাকের টেলিটরি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েক কৃষকের জমি দেখেছি। কৃষকেরা আলু রোপণের পর দেরিতে সেচ দিয়েছেন। আবার অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন। তারা কেটে আলু বীজ রোপণ করেছিলেন। কাটা আলুর বীজে রাসায়নিক সারের সংস্পর্শে আলু নষ্ট হয়েছে। কৃষকেরা তাদের নিজের দোষ স্বীকার করছেন না। এ ছাড়া সব আলুর বীজ ব্র্যাকের নয়। রা/অ