রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:২৭ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে প্লাজমা ফাউন্ডেশনের ৯ম তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন আমবাগান থেকে বাঘায় দিনমুজুরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নগরীতে জেলা কৃষকলীগ সভাপতি তাজবুল ইসলামসহ ১৫ জন গ্রেপ্তার নাচোলে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ১৪৮তম শাখা উদ্বোধন গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা : সাকি তানোরে আলু বীজে মহাসিন্ডিকেট, দ্বিগুন দামে দিশেহারা চাষীরা! দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিক সরকারের দাফন সম্পন্ন দুর্গাপুরে বিএনপি’র আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপিত মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না
মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা ঢাকামুখী, হাইকমান্ডে দেন-দরবার

মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা ঢাকামুখী, হাইকমান্ডে দেন-দরবার

ডেস্ক রির্পোট :
প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া আসনটি থেকে ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার কনিষ্ঠ মেয়ে ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বী বুবলী। তিনি ফুলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশিদ আলম সরকারের স্ত্রী।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন ঢাকামুখী। দলীয় হাইকমান্ডে করছেন শেষ মুহূর্তের দেন-দরবার। তেমনি গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় যোগাযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

গাইবান্ধার পাঁচটি আসনের মধ্যে অন্যতম একটি আসন ফুলছড়ি-সাঘাটা। এ আসনে রাজনৈতিক নেতাদের ভোটের মাঠে চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা। আগামী সংসদ নির্বাচনে কে হবেন এই আসনের কর্ণধারÑ এ নিয়ে চলছে ভোটারদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা। নিজেদের মতো করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্য চালিয়েছেন তাদের প্রচারণা।

সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। দুই উপজেলা মিলে এ আসনটিতে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ১৩ হাজার ৭৫৫ জন। আসনটিতে দেশ স্বাধীনের পর ডা. মফিজার রহমান আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে রোস্তম আলী মোল্লা সংসদে আসেন। এরপর প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া আসনটি থেকে ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেখানে তিনি ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ এই চারবার জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন। পরে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হন। মাঝে ২০০১ সালে জাতীয় পার্টি থেকে রওশন এরশাদ আসনটির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বীর কনিষ্ঠ মেয়ে ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বী বুবলী। তিনি ফুলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশিদ আলম সরকারের স্ত্রী। বাবার মৃত্যুর পর থেকে ফারজানা রাব্বী বুবলী সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় গণসংযোগ এবং প্রচার-প্রচারণা চালান। বাবা এমপি হওয়ার কারণে অনেক আগে থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। বাবার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প সময়ে তিনি এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। ফজলে রাব্বীর অনুসারীদের সমর্থন থাকায় তিনি মনোনয়ন পেলে নির্বাচিত হবেন।

ফারজানা রাব্বী বুবলী বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর তার অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য উপনির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আর নির্বাচিত হলে বাবার পথ অনুসরণ করে সাঘাটা-ফুলছড়ির সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবো।’

অনেকে মনে করছেন, ফজলে রাব্বী মিয়া ও ব্যারিষ্টার খুরশিদ আলমের পরিবার রাজনীতির মাঠে বড় ফ্যাক্টর। সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কবীর মিয়া বলেন, ‘এই উপজেলায় শুধৃু ফজলে রাব্বী মিয়ার আত্নীয় ভোটার আছে প্রায় ৫০ হাজার। যাদের অধিকাংশই কোন দল করেনা।’ অপরদিকে ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের মো সোহেল রানা বলেন, ‘ফুলছড়ি উপজেলার ব্যারিষ্টার খুরশিদ আলমের(বর্তমানে বিচারপতি) ভক্ত আছে প্রায় ৩০ হাজার এরাও কোন দল করেনা।’

স্থানীয়রা বলছেন, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার ‘অসাধারণ ক্ষমতা’ ছিল প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়ার। তিনি সেখানে দলমত নির্বিশেষে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে বার বার নির্বাচিত হন।

উদাখালি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাংঘাঠনিক সম্পাদক মো আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বরাবরই এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রী যেসব উন্নয়ন করচেন (করেছেন) এই উন্নয়ণ অব্যাহত রাখপ্যার(রাখতে) গেলে আওয়ামী লীগরে বিকল্প নেই। ‘এবার যদি সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়েকে যদি নমিনেশন দেয় তাহলে বিনা প্রচারণায় বিজয়ী হবে’ মত তার।

ফুলছড়ি উপজেলার থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাকিবুদৌলা রাজু বলেন, ‘আর এ এলাকায় এ্যডভকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার প্রতি মানুষের ভালবাসা ও সিম্প্যাথি আছে। এটার সাথে বুবলী আপা অনেক দিন ধরে রাজনৈতিক মাঠে, জণগনের সাথে সম্পর্ক রেখে চলছেন এজন্য এলাকার সাধারণ মানুষ আর আওয়ামী লীগের একটা অংশ চাচ্ছে বুবলী আপাই আসুক।’

এ আসনে আবারও মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান এমপি মাহমুদ হাসান রিপন। তিনি ২০২২ সালে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রিপন বলেন, ‘উপনির্বাচনে ভোটাররা সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করেছে। আমি নির্বাচিত হয়ে ১০ মাসে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। সেইসাথে দলীয় নেতাকর্মীদের আরো সুসংগঠিত করেছি। তৃণমূলের প্রতিটি মানুষের সাথে আমার সম্পৃক্ততা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে আসনটি নিশ্চিতভাবে তাকে উপহার দিব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভক্তি রয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগে। বিজয়ী হওয়ার পর সেকারণেই দলের একটি অংশের সঙ্গে দুরত্বও তৈরি হয়েছে তার। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুনও মনোনয়নপ্রত্যাশী দল থেকে। তিনিও এলাকায় গণসংযোগ চালিয়েছেন।এছাড়া আরও দুই একজনের নাম শোনা গেছে, যারা দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন।

দলীয় নির্দেশনা পেলে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সাঘাটা-ফুলছড়িতে জোরালো অবস্থানে থাকবেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিএনপির সাবেক নমিনি ফারুক আলম সরকার এবং কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান সোহাগ। তিনি বলেন, ‘দল যদি নির্বাচনে যায় তবে আমি নমিনেশন পাবার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদি।’

অপরদিকে, নিজেদের হারানো আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে আছে জাতীয় পার্টি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা পেলে জাতীয় পার্টির নেতারা এ আসনকে পুনরুদ্ধার করার জন্য চেষ্টা চালাবেন। এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাঘাটা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এএইচএম গোলাম শহীদ রঞ্জু ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। এএইচএম গোলাম শহীদ রঞ্জু বলেন, ‘সাঘাটা ও ফুলছড়ি জাতীয় পার্টির দুর্গ ছিল এবং আজো আছে। প্রতিবার আমাদের ষড়যন্ত্র করে হারানো হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ বিপুল সমর্থন দিয়ে জাতীয় পার্টিকে বিজয়ী করবে।’

গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চাইবেন অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসনামলে তাদের মনের প্রত্যাশানুযায়ী উন্নয়ন পায়নি। দিন দিন দুর্নীতি বেড়েই চলছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের নেতৃত্ব অত্যন্ত স্বচ্ছ। ভোটারা আমাদের প্রার্থীকেই বেচে নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

দলীয় প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান ও স্থানীয় দৈনিক জয়যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক নাহিদুজ্জামান নিশাদ। সূত্র : বাংলা টাইমস

 

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.