শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:০৭ pm
দেশের রপ্তানি বাজারের ৭৫ শতাংশ মূলত ইউরোপে। করোনা মহামারির পর ইউরোপ থেকে বাড়তি ক্রয়াদেশ এসেছিল। সেখানে রপ্তানি বেড়েছিল। সেসব পোশাক বা জুতা নিয়ে এখন বিক্রি করতে পারছে না তারা।
ইউরোপে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এতে দেশের শিল্পকারখানায় নতুন ক্রয়াদেশ কমে গেছে। আমরা বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এখন যুক্তরাষ্ট্রমুখী হচ্ছি। সেখানকার অর্থনীতি ইউরোপের চেয়ে ভালো। সব মিলে আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে রপ্তানি বাড়তে শুরু করবে। এর মধ্যেই দেশে শুরু হয়ে গেছে হরতাল, অবরোধ।
একটা লম্বা সময় ধরে দেশে এসব হরতাল, অবরোধ ছিল না। অর্থনীতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছিল। এরপর মহামারি, যুদ্ধ মিলে বৈশ্বিক নানা কারণেই অর্থনীতি চাপে পড়েছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এখন হরতাল, অবরোধ টানা চলতে থাকলে অর্থনীতির উন্নতির প্রক্রিয়া থেমে যাবে। অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।
এখানে আমদানিকারকদের কার্যালয় আছে, তারা সবই দেখছে। এ পরিস্থিতি তাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করবে। এ ছাড়া বিশ্বে বিকল্প দেশ আছে তাদের জন্য। তারা সেদিকে চিন্তা করতে পারে। এটা দেশের অর্থনীতির জন্য শুভ নয়।
চলমান পরিস্থিতিতে খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। আগেও হরতাল, অবরোধ দেখেছি। এক দিন, দুই দিন করে পরে টানা হয়েছে এসব কর্মসূচি। এখন আবার জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়ে গেলে, এটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে; তা বোঝা যাচ্ছে না। সামনে কোনো সমাধানও দেখছি না। দেশে গণতন্ত্র আছে, এটা থাকাটা খুবই জরুরি। যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা রাজনৈতিক। সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত রাজনৈতিকভাবেই।
রাজনীতি ও অর্থনীতি দুটোই একটির সঙ্গে আরেকটি জড়িত। সব নজর এখন চলে গেছে রাজনীতির দিকে। অর্থনীতির দিকে তাকানো উচিত। তা ছাড়া হরতালে কেউ আর এখন অভ্যস্ত নয়। মানুষ এমন কর্মসূচি চায় না। জ্বালাও-পোড়াও করে কোনো সমাধান হবে না।
অর্থনীতি ধ্বংস হলে মানুষ কীভাবে বেঁচে থাকবে। সাধারণ মানুষ টিকে থাকতে পারবে না। আমাদের সমস্যা আমাদেরই ঠিক করতে হবে। সমঝোতার মধ্যে আসতেই হবে। দেশের চেয়ে রাজনৈতিক দল আগে হতে পারে না। দেশ টিকলে, দল টিকবে। সবার আগে দেশ, দুই দলকেই এটি বুঝতে হবে।
লেখক- সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, চেয়ারম্যান, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। সূত্র : পদ্মাটাইমস