শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:২৩ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ এবং শিক্ষক কর্মচারীগণ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কলেজের স্বাভাবিক কর্মকান্ড বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও গুঞ্জন বইছে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনোনয়ন নিয়ে এই অবস্থার সৃস্টি হয়েছে।
জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তালন্দ লোলিত মোহন ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে তানোর মহিলা কলেজের সভাপতি মনোনীত করে পত্র দিয়েছেন। কিন্ত্ত সেই নির্দেশ মানতে কালক্ষেপণ এমনকি অপারগতা প্রকাশ করে অধ্যক্ষ অনুকুল কুমার ঘোষ। এতে প্রশ্ন উঠেছে কে বড় ভিসি না একজন অধ্যক্ষ।
এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার অধ্যক্ষ অনুকুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছে।কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জৈষ্ঠ শিক্ষক বলেন, ভিসি মহোদয়ের কোনো নির্দেশনা কোনো অধ্যক্ষ এড়িয়ে যেতে পারেন না এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও বিবেচিত।
এর জন্য কলেজ ক্ষতির মুখে পড়লে তার দায় নিবে কে-? তিনি বলেন, ভিসি মহোদয় যেকোনো সময় যে কাউকে যেকোনো কলেজের সভাপতি মনোনীত বা বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন আইন করে তাকে সেই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে কোনো অধ্যক্ষ বা শিক্ষক প্রশ্ন তুলতে পারে না। কেউ করলে সেটা শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
তিনি আরো বলেন, অধ্যক্ষ অনুকুলই তাকে সভাপতি হতে উৎসাহ দিয়ে সহযোগীতা করে এখন তাকেই মানতে পারছে না এর নেপথ্যে মাযেযা কি? এমনকি ভিসির মনোনীত সভাপতির বিরুদ্ধে অনুকুল তার অনুগতদের দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দীয় ও মানহানিকর প্রচারণা শুরু করেছে। ভিসির মনোনীত সভাপতি মানে তিনি ভিসির প্রতিনিধি।
তাহলে তার প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও অবমাননা মানে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে ভিসির অবমাননা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে একজন অধ্যক্ষের খুঁটির জোর কোথায়? তিনি ভিসির নির্দেশ লঙ্ঘনের দুঃসাহস দেখায়।
জানা গেছে, তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো। সম্প্রতি তিনি বদলি হয়ে গেছেন। এদিকে, গত ৪ মার্চ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তালন্দ লোলিত মোহন ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজের সভাপতি মনোনিত করে পত্র দেয়া হয়।
অন্যদিকে, সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে সভাপতি করতে সুপারিশ করেন একজন প্রতিমন্ত্রী, একজন সিটি মেয়র, একজন এমপি ও আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা। কিন্ত্ত তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ অনুকুল কুমার ঘোষ তাকে সভাপতি মানতে অসম্মতি জানিয়ে নানা কৌশলে কালক্ষেপণ করছে। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের চরম ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছে, তাকে সভাপতির দায়িত্ব দিতে অসম্মতি জানিয়ে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সুপারিশকারীসহ ভিসির প্রতি চরম অবজ্ঞা বা অবমাননা প্রদর্শন করেছে অধ্যক্ষ অনুকুল যা একজন দায়িত্বশীল অধ্যক্ষ কখানো করতে পারেন না। অপরদিকে সভাপতি মনোনিত করা নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় কলেজের স্বাভাবিক কর্মকান্ড মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অনুকুল কুমার ঘোষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগের কমিটির মেয়াদ এখানো রয়েছে, তাছাড়া তারা সভাপতির জন্য কোনো চাহিদাপত্র দেননি। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে সভাপতি করে চাপিয়ে দিলেই তারা সেটা মানতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় এমপি মহোদয়ের অনুমতি ব্যতিত তিনি কোনো কিছু করতে পারেন না। তাই তার সঙ্গে কথা বলার পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে সদ্য বিদায়ী উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিষয়টি তার জানা নাই।
এবিষয়ে সাবেক অধ্যক্ষ সেলিম উদ্দিন কবিরাজ বলেন, তার অধ্যক্ষতা করার বয়স ৩৮ বছর। তিনি বৈধভাবে সভাপতি মনোনিত হয়েছেন। তবে, অধ্যক্ষ কেনো তাকে দায়িত্ব দিতে অসম্মতি প্রকাশ করছে সেটা তার বোধগম্য নয়। আজকের তানোর