রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৪৪ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
খাবার পানির সংকট দূর করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মেয়র সাইদুর রহমান। বরেন্দ্র অঞ্চলের খরাপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভা। এখানে খাবার পানির সংকটে মানুষের মধ্যে হাহাকার ছিল। স্বাভাবিক ভাবে পেত না বিশুদ্ধ সুপ্রিয় খাবার পানি। পানির জন্য একমাত্র ভরসা ছিল পেট্রোল পাম্পের মটর। সেখান থেকে পানি নিতে পরিবার প্রতি গুনতে হত ২৫০ টাকা করে। তাও ইচ্ছেমত পানি নিতে পারতো না অনেকে। এঅবস্থায় তিনটি বরিং বসিয়ে সাপ্লাই পানির লাইন করে দেয়া হয়। এতে করে চরম স্বস্তিতে খাবার পানি খাচ্ছেন আদিবাসীপল্লীর মানুষ।
জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে খাবার সুপিয় পানির সংকটে ভুগছিল মুন্ডুমালা পৌর এলাকার পাঁচন্দর ও মাহালীপাড়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। ভোটের আগে শুধু প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দিলেও খাবার পানির সুব্যবস্থা করেননি কোন প্রতিনিধি। কিন্তু মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সাইদুর রহমান কিভাবে খাবার পানির ব্যবস্থা করা যায় সেটি নিয়ে অভিজ্ঞ মহলের সাথে ও ভূগর্ভস্থ পানি বিশেযজ্ঞদের দারস্থ হন। কারণ মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় ভূগর্ভের পানি নেই বললেই চলে। তানোর পৌর সদর এলাকায় ১৭০ থেকে ১৮০ ফিটের মধ্যে ভূগর্ভ থেকে পানি পাওয়া যায়। কিন্তু মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় এর দ্বিগুণ খনন করেও পানি মিলে না। সেই অসাধ্যকে সাধন করে তিনটি বরিংয়ের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৩০০ অধিক পরিবারকে খাবার পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
ওই পল্লীর জনসাধারণ বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আধা ও এক কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি আনতে হত। তাও নিজের স্বাধীনতায় নয়। মটর মালিক যখন মটর চালাবেন তখন পানি আনতে হবে। সকালে পানি আনা হয় সারা দিনের জন্য। ওই পানি বিকেলে খাওয়া যেত না। কারণ আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠী। আমাদের বাড়িতে ফ্রিজ নেই। যে সকালের পানি বিকেলে কিংবা রাতে খেলে ঠান্ডা থাকবে। অন্যের মটরে পানি নিত হত লাইন ধরে। যার কারণে সময়ও লাগত অনেক। কিন্তু মেয়রের একান্ত প্রচেষ্টায় এখন পানির ট্যাপ বাড়ির আঙ্গিনায়। এখন আর লাইন ধরে পানি নিতে হবে না। ইচ্ছেমত খাবার পানি ও গোসল করাসহ যাবতীয় কাজ করা যায়। এসুবিধা মেয়র সাইদুর রহমানের জন্য আমরা পেয়েছি।
পানির ব্যবস্থা করে মেয়র তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সুপিয় খাবার পানির ব্যবস্থা করা। মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহের বানীতে পাঁচন্দর ও মাহালীপাড়া আদিবাসীপল্লীর জনসাধারণের খাবার পানির ব্যবস্থা করতে পেরেছি। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি গ্রামে সুপিয় খাবার পানির ব্যবস্থা করা হবে।
রোববার খাবার পানি সাপ্লাইয়ের উদ্বোধন করে আদিবাসী জনসাধারণের সাথে মতবিনিময় করেন মেয়র সাইদুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে ৪০০ ফিট খনন করে তিনটি বরিং বসানো হয়েছে। পৌরসভা ও ডাসকো এবং বাংলাদেশ এনজিওর প্রায় ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দে বরিং ট্যাংক ও সাপ্লাই লাইন দেয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩০০ অধিক পরিবার সুপিয় পানির সুবিধা পাবেন। পর্যায়ক্রমে পৌর এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে সুপিয় খাবার পানির ব্যবস্থা করা হবে। কারণ পৌরবাসীর অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যে আশায় আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন আমি যেন তাদের আশাগুলো পুরুণ করতে পারি এটাই আমার প্রত্যাশা ও কামনা। রা/অ