শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:০০ am
ডেস্ক রির্পোট :
রাজধানীর উত্তরার ১৬ তলা বিশিষ্ট সাঈদ গ্র্যান্ড সেন্টারে আগুনে তিনটি ফ্লোর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ভবনটির সাত থেকে ৯ তলা পর্যন্ত এই তিনটি ফ্লোরেই আগুন সীমাবদ্ধ রেখে নিয়ন্ত্রণে আনতে সফল হয়। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে রাত ১টা ১৮ মিনিটের দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পৌঁছায়। এর পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম তদারকি করতে উপস্থিত হন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভোর ৫টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ৯ তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেখানে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। তবে আগুনের সূত্রপাত রেস্টুরেন্ট থেকে হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। এ বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
তিনি জানান, এই বিল্ডিংয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, বায়িং হাউজ রয়েছে, বিভিন্ন ধরনের অফিস রয়েছে। এছাড়া কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের অ্যাক্সেসরিজের দোকান রয়েছে, শোরুম রয়েছে। হাইলি ফ্লেমেবল ব্যাটারি রয়েছে। আমি খুবই আশ্চর্য হয়েছি এত হাইলি ফ্লেমেবল আইটেম, কিন্তু কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। তবে ভবনে ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থাপনা অল্প ছিল। সেগুলো কিছুটা কার্যকর হয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ভবনে কোনও পানি ছিল না। এ বিষয়টি আমরা চেক করে দেখেছি। হাইড্রেন্টে কিছু পানি ছিল। তিনটি ফ্লোর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাত, আট, ৯ এর মধ্যে নবম ফ্লোরটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তিন ফ্লোরের মধ্যে আগুনকে সীমাবদ্ধ রেখে নিয়ন্ত্রণ আনতে পেরেছি।
বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে— এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণ প্রথমে ঘটেনি, পরবর্তীতে ঘটেছে। হয়তো কোনও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। যদিও সে বিস্ফোরণটি হালকা হয়েছে। যে ফ্লোরে আগুনের সূত্রপাত সেখানে একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তবে আমরা বলছি না সেই রেস্টুরেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটা কি কোনও শর্ট-সার্কিট না রান্নাঘরের আগুন থেকে ঘটেছে কিনা¬— এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রেস্টুরেন্ট যেহেতু রয়েছে সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, সাঈদ গ্র্যান্ড সেন্টারের পাশেই লাগোয়া আরেকটি ভবন ছিল বিএনএস ভবন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত যে এত লাগোয়া কোনও ভবন থাকতে পারে কিনা। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশের যেভাবে পরিকল্পনা ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, ফায়ার সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করছি না। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দৃঢ়তার কারণে আগুন অন্য ভবনে ছড়াতে পারেনি। এ কারণে কিন্তু আমরা নিজেদের প্রাণকে হুমকির সম্মুখীন করছি। এ ভবনটিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ফায়ার সার্ভিস শুধু নোটিশ দিতে পারে, অ্যাকশন নেওয়ার ক্ষমতা নেই। আমরা মোবাইল কোর্ট করি। আর অ্যাকশন অথরিটি নেবে। আমরা নোটিশ দেই যে আপনারা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুই জন সদস্য আহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ওপর থেকে কাঁচ পড়ে তারা আহত হন। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, চিকিৎসা চলছে। এছাড়া ঘটনাস্থল আমরা সার্চ করেছি। কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনে যারা আনসার ছিল তারা নেমে আসতে পেরেছিল। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন