শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৪৫ am

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
বিসিএস কর্মকর্তার করুণ গল্প শুনে চোখের জলে হতবাক প্রধানমন্ত্রী !

বিসিএস কর্মকর্তার করুণ গল্প শুনে চোখের জলে হতবাক প্রধানমন্ত্রী !

ডেস্ক রির্পোট :
ফরিদপুর জেলার সোহানপুর গ্রামের ভূমিহীন এক কৃষক পরিবারের ছেলে পিরু মোল্লা ৪০তম বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। এই অবস্থানে আসতে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে নানান বাধা-বিপত্তি।

একসময় বাবা-ভাইদের সঙ্গে অন্যের জমিতে সেচ দেওয়া, চুক্তিতে ধান-পাট কাটা, ক্ষেত নিড়ানি দেওয়াই ছিল তার পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস। ঝড়-বৃষ্টির রাতে ছনের ঘরের চালা উড়ে যাওয়ার ভয়ে ঘুম হতো না তার। সেই অবস্থান থেকে আজ তিনি সহকারী মহা হিসাবরক্ষক, সংযুক্ত আছেন ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট একাডেমিতে (ফিমা)।

তার এই গল্প শুনেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিসিএস এ কর্মকর্তার করুণ গল্পে প্রধানমন্ত্রীর চোখে জল এসেছিল। পরে তাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিসিএস কর্মকর্তাদের ৭৫তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বপ্নবাজ এই তরুণের গল্প শোনেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে চার জন বিসিএস ক্যাডার তাদের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন। এদের মধ্যে পিরু মোল্লাও একজন। তিনি বলেন, ‘আজ আমি স্বপ্নপূরণ ও ভাগ্য বদলের গল্প বলতে এসেছি। এই স্বপ্নপূরণ আমার মতো হাজারও চাকরিপ্রত্যাশী তরুণের। এই ভাগ্যবদল চিরায়ত বাংলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কোটি প্রাণের।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে পিরু মোল্লা বলেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল প্রকৌশলী হওয়ার। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যেতে পারবো কিনা, সেই আশঙ্কা ছিল। আমার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্নটা প্রায় শেষই হতে যাচ্ছিল। যদি না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পেতাম। কেননা অর্থের অভাবে কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোথাও আমি ভর্তি পরীক্ষার ফরম তুলতে পারিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষে পড়ার সময় মাঝে-মধ্যেই আমার ভাইয়ের সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজে যেতে হতো। টিউশনি না পাওয়া পর্যন্ত প্রথমবর্ষে বেশিরভাগ সময় আমি সকালে নাস্তাও করতে পারিনি। হলে ১৫ টাকায় দুপুরের খাবার, আর ১২ টাকায় রাতের খাবার; এই মোট ২৭ টাকায় দুবেলা খাবারের খরচ মিটতো। রাতের খাবার থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৮ ঘণ্টা না খেয়ে থেকে… আমার মনে আছে, ল্যাব থেকে আসার সময় ক্ষুধায় বাঁকা হয়ে যেতাম আমি।’

এমন একটা অনিশ্চিত জীবনে থেকে উঠে এসে আজকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে কথা বলার সুযোগ পেয়ে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানান পিরু মোল্লা।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অসংখ্য তরুণের মতো আমারও স্বপ্ন ছিল সিভিল সার্ভিসের চাকরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সরকারি চাকরি প্রাপ্তিতে আপনি মেধাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার মূল্যায়ন নিশ্চিত করেছেন। ফলে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনগণের সেবায় নিয়োজিত হতে পেরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।’

কিন্তু পিরু মোল্লার গল্পটা তখনও শেষ হয়নি। তিনি বলেন, ‘২০২০ সালের আগস্ট মাসের ৩ তারিখে আমার প্রথম চাকরিতে যোগদানের দিনই বাবার ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা পড়ে। এর দুই মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমার ভগ্নিপতি মারা যান।

সন্তান সম্ভবা বোন ও তার দুই সন্তানের ঠাঁই হয়েছিল আমাদের পরিবারে। চরম আর্থিক সঙ্কটে যখন আব্বার চিকিৎসা প্রায় বন্ধ, তখন সরাসরি আপনার কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। আশা ছিল, হয়তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাড়া পাবো।

কিন্তু এত দ্রুত সাড়া পাবো, এটা ছিল কল্পনাতীত। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক আমার বাবাকে ফোন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য প্রদানের খবরটি জানান। কিন্তু চিকিৎসা শুরুর মাত্র ১৫ মাস পরেই আমার আব্বা মারা যান।

এর কিছুদিন পর মেজো ভাই ও বিধবা বোনের শরীরেও ক্যান্সার শনাক্ত হয়। পরিবারের মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনিই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমাদের বিপদে সাহায্যকারী হিসেবে বারবার আবির্ভূত হওয়ায় মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।’ রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.