শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৫২ am
এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বের জেরে স্কুলের প্রাতিষ্ঠানিক কাজসহ শিক্ষাকার্যক্রম মারাত্নক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একাধিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটাচ্ছে বিদ্যালয়টি পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিক। ফলে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্কুলটির শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম যোগদানের পর স্কুলের জমি উদ্ধার করে দুটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করেন। যেখান থেকে স্কুলের বাড়তি আয় শুরু হয়। সেই আয়ের টাকা দিয়ে মার্কেটের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে দুটি মার্কেটের ভাড়ার অর্থ ও কর্মচারী নিয়োগের বিষয় নিয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক একে অপরকে মানক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।
বুধবার (৪ অক্টোবর) বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়।
সম্প্রতি গত ২৮ সেপ্টেম্বর পরিচালনা কমিটির আলোচনা করে নোটিশের মধ্যেমে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার একটি চেক প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি স্বাক্ষর করেন। পরর্বতীতে গত ১ অক্টোবর অগ্রণী ব্যাংক রায়ঘাটি শাখায় দেবাশীষ নামের এক ব্যক্তি টাকা উত্তোলন করতে যান। ওই সময় অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান খান স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে ফোন করলে তিনি বলেন- আমি ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার চেকে স্বাক্ষর করিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি মাত্র ৯৩ হাজার টাকার চেকে স্বাক্ষর করেছি। এর কিছুক্ষণ পর সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিক তার লোকজন নিয়ে ব্যাংকে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষক শফিকুলকে লাঞ্ছিত করে অবরুদ্ধ অবস্থা রাখেন। পরে মোহনপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেন। পরে অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেকটি হেফাজতে রেখে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বরাবর একটি লিখিত দেন করেন।
সেখানে এক অংশে লেখা ছিল চেকটি যথাযথভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং টাকার পরিমাণ ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা মাত্র মর্মে নিশ্চিত করেছেন। ওই ঘটনার পর থেকে স্কুলটি নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা ঝড়।
এব্যাপারে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রুস্তম আলী প্রামানিক বলেন, প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রুস্তম আলী প্রামানিক স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত আমার বিরুদ্ধে লোকজন দিয়ে বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ করেছেন।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, সম্প্রতি একটি চেকে স্বাক্ষর করার পরে সেটি তিনি অস্বীকার করে অগ্রণী ব্যাংক রায়ঘাটি শাখায় গিয়ে তার লোকজন নিয়ে আমাকে লাঞ্ছিত করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রা/অ