শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:০৪ am
নজরুল ইসলাম বাচ্চু, চারঘাট :
রাজশাহীর চারঘাটে আশংকাজনক ভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। জেলায় চারঘাট উপজেলাকে ডেঞ্জারজোন হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। বর্তমানে চারঘাট হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন ২৪ জন রোগী। এদের মধ্যে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভার এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। ফলে চরম হতাশা ও উদ্বিগ্নের মধ্যে রয়েছেন উপজেলাবাসী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র এর দেয়া তথ্য মতে, উপজেলা হাসপাতাল ও বেসরকারী হাসপাতাল মিলে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ শত জন রোগীর ডেঙ্গু টেষ্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক রোগী এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আতিকুর হক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৮ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছেন এবং প্রায় ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে ভর্তি রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হয়ে রোগী আসছে। দিনরাত সমানে মশারীর ভিতরে রোগীদের থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালে স্যালাইন না পাওয়ায় বাইরে থেকে অধিক মূল্যে স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে। এতে গরিব রোগীদের চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। পর্যাপ্ত কিট না থাকার কারনে ডেঙ্গু পরিক্ষার জন্য রোগীরা বেসরকারী হাসপাতালে যাচ্ছে ফলে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশি দিয়ে টেষ্ট করতে হচ্ছে বলে জানান একাধিক রোগী।
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বাকড়াঁ রায়পুর এলাকার মোতলেব বলেন, গত রোববার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসলে ডেঙ্গু পরিক্ষার জন্য বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। পরে ৫শত টাকায় ডেঙ্গু পরিক্ষা করলে এ রোগ সনাক্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। রোগীর মেয়ে রিনা বেগম জানান হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে না কোন স্যালাইন। বাধ্য হয়ে বাইরে একটি স্যালাইন ৩শত টাকা দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে। এতে আামাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনা বৃদ্ধি, বাড়ির আশে পাশে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, জমে থাকা পানিতে ব্লিচিং পাওডার ও মশক নিধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র এর প:প: কর্মকর্তা ডা: আশিকুর রহমান।
এদিকে চারঘাটে আশংকাজনক ভাবে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির খবরে ছুটে আসেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক। সোমবার সকালে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র এ ডেঙ্গু কর্নারে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। এসময় তিনি রোগীদের বিভিন্ন ধরনের ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে পরামর্শ দেন। এসময় স্থানীয় সাংবাদিকরা সিভিল সার্জনের ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলায় চারঘাট-বাঘা ও পুঠিয়া ডেঞ্জারজোন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এসব এলাকায় আশংকাজনকভাবে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। অধিকতর চাপ সামলাতে হাসপাতালে টেষ্ট কিট ও স্যালাইন সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে সোমবার ১২টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন ও ডেঙ্গু রোগীদের খোজখবর নেন। পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এর পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনা বৃদ্ধি করা এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমানের স্যালাইন প্রদান করেন ইউএনও সোহরাব হোসেন। রা/অ