শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৩১ am

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী
ময়লার ভাগাড়ে জীবিকা

ময়লার ভাগাড়ে জীবিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : একদল কুকুর খাবার খুঁজছে। দুই পা দিয়ে ময়লা আঁচড়ে খাবার খুঁজে বের করে খাচ্ছে কুকুরগুলো। আর তার পাশেই নানাবয়সী একদল মানুষ খুঁজছেন ফেলে দেয়া জিনিসপত্র। গত মঙ্গলবার সকাল ৮টার এই দৃশ্য রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ সিটিহাটের ময়লার ভাগাড়ের। ভাগ্যের খেলায় এই ভাগাড়েই নিজেদের জীবিকার সন্ধান করে নিয়েছেন কিছু মানুষ।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের হিসাবে, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন ময়লা হয়। সারাদিন সংগ্রহের পর রাতে ট্রাকে করে নিয়ে ময়লাগুলো সিটিহাটের বিরাট এই ভাগাড়ে ফেলা হয়। এসব ময়লার সঙ্গে যায় পলিথিন, প্লাস্টিক, মোটা কাগজ, হাড়, ছোটখাট লোহার টুকরোসহ নানা জিনিসপত্র। রাতে ভাগাড়ের যে স্থানে এসব ফেলা হয় সকাল থেকে সেখানে লেগে পড়েন ২০-২৫ জন নারী-পুরুষ। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়ি। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ভাগাড়ের ভাঙ্গারি কুড়িয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

গত মঙ্গলবার সকালে ভাগাড়ে ভাঙ্গারি জিনিসপত্র কুড়াতে এসেছিলেন নগরীর বাচ্চুর মোড় এলাকার বাসিন্দা সুন্দরী বিশ্বাস (৫০)। হিসাব করে সুন্দরী বললেন, সিটিহাটের এখানে ভাগাড় রয়েছে ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে। তখন থেকেই তিনি এখানে ভাঙ্গারি জিনিসপত্র কুড়ান। সঙ্গে এখন ছেলে উজ্জ্বল বিশ্বাসও (২৩) থাকে। সারাদিন তারা এই ভাগাড়েই ময়লার ওপর থাকেন। ভাগাড়ের দুর্গন্ধ তাদের সয়ে গেছে। এখন দুর্গন্ধ তাদের নাকে আসে না।

সুন্দরী জানালেন, তার চার ছেলে আর দুই মেয়ে। সবাই যখন ছোট তখন প্যারালাইজড হয়ে যান তার স্বামী। সংসারের বোঝা এসে পড়ে সুন্দরীর কাঁধে। প্রথম দিকে মাঠে-ঘাটে কাজ করতেন। কিন্তু যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে এত বড় সংসার চলত না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েকেও কেউ কাজে নিত না। তাই তাদের নিয়ে এই ভাগাড়ে আসেন সুন্দরী। সেই থেকে সুন্দরী আজও ভাঙ্গারি কুড়ান। মেয়েদের বিয়ে দেয়ার পর তারা আর আসেন না। তিন ছেলেও এখন অন্য কাজ করেন। শুধু উজ্জ্বল বিশ্বাস এখনও মায়ের সাথে ভাগাড়েই আসেন।

সম্প্রতি উজ্জ্বল বিশ্বাস ১৪ হাজার টাকায় পুরনো একটি ভ্যান কিনেছেন। মা-ছেলে এই ভ্যানে চড়েই ভাগাড়ে আসেন। সকালে কাজ শুরুর পর দুপুরে বিরতি দিয়ে ভাগাড়ের পাশে বসেই খাবার খান। তারপর বিকাল পর্যন্ত আবারও কাজ চলে। সারাদিন যেসব ভাঙ্গারি কুড়ান সন্ধ্যায় এই ভ্যানে করেই সেগুলো বাড়ি নিয়ে যান। সপ্তাহে একদিন ভাঙ্গারির দোকানে নিয়ে এগুলো বিক্রি করেন। তখন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পাওয়া যায়।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ময়লার ভাগাড় রোগ-জীবাণুতে পরিপূর্ণ। তাই সেখানে কাজ করলে নানারকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। দীর্ঘ সময় কাজ করলে তো অবশ্যই বিভিন্ন রকম অসুখে ভুগতে হবে। সুন্দরী বিশ্বাস, উজ্জ্বল বিশ্বাসসহ আরও যারা রাজশাহীর এই ভাগাড়ে কাজ করছেন তারাও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি জানেন বলে জানিয়েছেন। তবে দু’একজন আবার বলছেন, এখনও পর্যন্ত তারা বড় অসুখে পড়েননি। ময়লা-আবর্জনা, দুর্গন্ধ তাদের শরীরে সয়ে গেছে বলেও তারা মনে করেন।

ভাগাড়ে স্বপন শেখ (৪০) নামে একজন বললেন, ‘আমরাও জানি যে এখানে কাজ করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। আমরা তো তেমন সাবধান থাকি না। শুধু কাঁচে যেন পা না কাটে তার জন্য জুতা পরি। এর বাইরে সাবধানতার কিছুই হয় না। সংসার তো চালাতে হবে, তাই এই কাজই করি।’ তিনি বলেন, ‘এই যে এখানে প্রয়োজনের জন্যই কাক, কুকুর, শকুন এসেছে। আমরাও প্রয়োজনেই এসেছি।’

এখানে আরেক ভাঙ্গারি কুড়ানি সম্ভু দাস (২৮) বলেন, ‘বড় কোন অসুখে তো পড়িনি। শুধু একটু জ্বর-জ্বালা হয় মাঝে মাঝে। এর বেশি কিছু না।’। তিনি বলেন, ‘আমরা তো এসির বাতাসে থাকি না, ফ্যানের বাতাসেও থাকি না। এটাই আমাদের এসি, এটাই ফ্যান। ভাগাড়ের ওপর সারাদিন যে রোদের নিচে থাকি, শরীর পুড়ে গেছে। এই শরীরে আর কিছুই হবে না।’ আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.