বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৭ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ বাগমারায় সাবেক এমপি এনামুল হক গ্রেফতার বাগমারায় মোমবাতির আগুনে ব্যবসায়ীর দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে ছাঁই
কন্যাশিশু দিবস আজ, জানে তারা নিরাপদ নয়

কন্যাশিশু দিবস আজ, জানে তারা নিরাপদ নয়

ডেস্ক রির্পোট :
এ লেভেলে পড়ে সুমাইয়া। বাসা থেকে কোচিং হাঁটা পথ। রাত ৯টায় কোচিং শেষ হলেও গাড়ির জন্য বসে থাকতে হয়। পাঁচ মিনিট হেঁটে ফেরা গেলেও অপেক্ষা করতে হয় বাবার জন্য। গাড়ি নিয়ে এলে তারপরে বাসায় ফেরা। সুমাইয়ার যে বন্ধুদের গাড়ি নেই। তাদের অভিভাবকরা এসে যে যার মতো সঙ্গে করে নিয়ে বাসায় ফেরেন। অথচ ছেলে সহপাঠীরা স্বাধীন। নিজের মতো আসে-যায়। একটু টেলিফোনে বাসায় জানিয়ে দিলেই হয় তারা আসছে, পথে যতক্ষণ লাগে।

কেবল রাজধানী নয়, এখন মফস্বল শহরেও দলবেঁধে পড়তে যাওয়া কমে গেছে। এখন বাবা-মায়েরা সন্তানদের হাতছাড়া করতে চান না। এখন পথে কিছু ঘটলে মুরব্বিরা সামনে এগিয়ে আসতে ভয় পান। ফলে আর কোনও উপায় নেই। আমাদের কন্যাশিশুরা জানে, তারা এই সমাজে নিরাপদ নয়। তাদের নিরাপত্তা নানাভাবে নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের ঘাম ছুটে যায়।

টাঙ্গাইলের কোনও এক গ্রামে মেয়েটি স্কুলে যেতো। বয়ঃসন্ধিকালে পথে নানান বয়সী ছেলের প্রেমের প্রস্তাব পেয়ে ভালো যে লাগতো না তা নয়। কিন্তু অভিভাবকের অনুশাসনে সেসব চাপা দিয়ে কেবল একটা লক্ষ্যই ছিল—ভালো ফলাফল করলে ঢাকায় যাবে পড়তে। এসেছিলও ঢাকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই প্রেম হয় রাজনৈতিক দলের কর্মীর সঙ্গে। এরপর দ্রুত বদলে যেতে থাকে সব। ছয় মাসের মধ্যে বুঝতে পারেন যে সেই প্রেমিক তাকে নিজ স্বার্থে অন্য অনেকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিতে থাকে। নিয়ে যায় নানা আড্ডায়। একসময় নিজের অজান্তেই ঢুকে যান মাদক আর শারীরিক সম্পর্কের অন্ধকার জগতে। বিচ্ছিন্ন হন পরিবার থেকে, সমাজ থেকে।

কিংবা ধরেন বগুড়ার এক গ্রামের সপ্তম শ্রেণির এক কিশোরী। প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় পথে রোজ হয়রানি হতে হতো। একসময় গ্রামের লোকজন ‘ফতোয়া’ দেয়— দোষ সেই কিশোরীর যে কিনা পড়ালেখা করতে কলেজে যেতো। যে কিশোরী বাবা-মাকে বলতে চায়নি তার রোজকার হয়রানির কথা। একদিন পথে আটকে তার ওড়না কেড়ে নিয়ে চলে যায় বখাটেরা। দোষ হয় সেই কিশোরীর। সমাজের নানা গঞ্জনার মুখে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসে মায়ের হাত ধরে। এখন গার্মেন্টে কাজ করে।

এটা দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রাজধানী শহরে কন্যাদের বেড়ে ওঠা, পথচ্যুত হতে বাধ্য হওয়ার খণ্ডচিত্র। আমাদের সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আসলে আমাদের মেয়ে সন্তানেরা কেমন আছে? তাদের বেড়ে ওঠা কতটা নিরাপদ করতে পেরেছি আমরা? বিশ্লেষকরা বলছেন, সমাজে ঘটা অনেক হয়রানি অভিযোগ আকারে আসে না, সমাজের মানুষ নানাবিধ উপায়ে বিচার করে দেয়। এবং সেসব বিচারে ভিকটিমকেই সাজার মুখোমুখি হতে হয়।

পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সারাদেশের থানায় বিগত পাঁচ বছরে (২০১৮-২২) ২৭ হাজার ৪৭৯টি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে ৫৯ হাজার ৯৬০টি। এর মধ্যে ২০২২ সালে সারাদেশে চার হাজার ৭৬২টি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। একই বছর নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে ৯ হাজার ৭৬৮টি। সম্প্রতি কন্যাশিশুদের প্রতি বিভিন্ন মাত্রায় এবং বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে অ্যাডভোকেসি ফোরাম। তাদের তথ্য বলছে, চলতি বছর আগস্ট পর্যন্ত মোট ৩২৯ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এই সময়কালে পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ৩০ জন কন্যাশিশু। অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ১০৪ জন কন্যাশিশু। এ সময়কালে ৪৯৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এছাড়া ১০১ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ৩২২ জন, গণধর্ষণের শিকার হয় ৭২ জন কন্যাশিশু, এরমধ্যে প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু রয়েছে ৩৯ জন।

শিশুদের নিরাপত্তার এই পরিস্থিতি নিয়ে কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘কন্যাশিশুদের দুইভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। একদিকে সামগ্রিকভাবে সমাজের নিপীড়িতদের একজন হিসেবে, অন্যদিকে কেবল নারী হওয়ার কারণে, যাকে লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন বলা হয়। নির্যাতনের ক্ষেত্রে নির্যাতিত কন্যাশিশু বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও কোনও ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও, সে তুলনায় অভিযুক্তদের আটক হওয়া, ক্ষেত্রে শাস্তি পাওয়া বা ন্যায়বিচার পাওয়ার সংখ্যা নেই বললেই চলে।

শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারলে অনেক অগ্রগতি চাপা পড়ে যাবে উল্লেখ করে নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশী কবীর বলেন, আমাদের দেশে অনেকদিক থেকে এগিয়েছি কিন্তু শিশুদের নিরাপত্তাহীনতার জায়গায় ব্যবস্থা নিতে পারছি না। আমরা লক্ষ্য করছি, শিক্ষকদের হাতে কন্যাশিশুরা নিরাপদ না। বাড়িতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, নিজের পাড়ায় যদি নিরাপত্তা না পায় কোথায় পাবে। যতই অগ্রগতি হোক, এই জায়গায় যদি এত নিরাপত্তাহীনতা থাকে তাহলে আসলে কোথাও আমরা ভূমিকা রাখতে পারবো না। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.