শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৩ pm
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রাম আদালতে বিচারের নামে ডেকে নিয়ে এসে বিবাদী তিন ব্যক্তিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার কীত্তিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- একই ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের শাজাহান আলী ভুট্ট (৩৮), জাহিদুল ইসলাম নারু (৫৫) ও ফিরোজ হোসেন (২৭)।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মাগুরা গ্রামের শাজাহান আলী ভুট্ট ও মোহাম্মাদ আলী শাহের ছেলে হাসুসহ পাঁচজনের শরিকানায় একটি পুকুর রয়েছে। বুধবার সকালে পুকুর থেকে জোরপূর্বক শ্যালোমেশিন ভাড়া করে নিয়ে এসে পানি তুলছিলেন হাসু। শ্যালোমেশিনের মালিক একই গ্রামের আদেশ আলীর ছেলে রাসেল। এ সময় শাজাহান আলীর স্ত্রী শাহনাজ পানি উঠাতে রাসেলকে নিষেধ করেন। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পুকুরের শরিকানা মালিক হাসু লাঠি দিয়ে শাহনাজকে আঘাত করেন।
বিষয়টি শাহনাজ তার স্বামীকে অবগত করেন। পরে শাজাহান আলী ঘটনাস্থলে আসলে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে শাজাহান আলীর বাড়িতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ হাসু। বিষয়টি থানায় অবগত করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
ওই দিন বিকালে শ্যালোমেশিনের মালিক রাসেলের বাবা আদেশ আলী বাদী হয়ে গ্রাম আদালতে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গ্রাম আদালতে শাজাহান আলী ভুট্ট, জাহিদুল ইসলাম নারু, ফিরোজ হোসেন ও সাত্তারের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার সময় তাদের ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। তারা নির্দিষ্ট সময়ে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হলে তাদের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান কোনো কথা ছাড়াই একে-একে ঘর থেকে বের করে লাঠি দিয়ে তাদের মারধর করেন।
এরপর জোরর্পূবক তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন। বর্তমানে আহতরা নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত শাজাহান আলী ভুট্ট, জাহিদুল ইসলাম নারু ও ফিরোজ হোসেন বলেন, গ্রাম আদালতে বিচারের নামে চেয়ারম্যান আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে কোনো কথা ছাড়াই লাঠিপেটা করেন। অন্যায়ভাবে আমাদের নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করছি।
কীত্তিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, যাদের মারধর করা হয়েছে তারা সন্ত্রাসী প্রকৃতির ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। আইনে যদিও মারধর করার বিধান নাই; কিন্তু তাদের মারধর করা আমার দৃষ্টিতে ঠিক হয়েছে।
নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, বিচারের নামে কাউকে মারধর করার এখতিয়ার ইউপি চেয়ারম্যানের নেই। গ্রাম আদালতে চেয়ারম্যানের নির্দিষ্ট কিছু ক্ষমতা রয়েছে। প্রয়োজনে তিনি নোটিশ ও জরিমানা করতে পারেন। গ্রাম আদালতে যখন তারা পারবেন না তখন ওপরে পাঠিয়ে দেবেন।