রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫০ pm
আব্দুস সবুর, ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার চাপড়া অবস্থিত মহিলা ডিগ্রি কলেজের বিএম শাখা থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শিক্ষাবর্ষে এবারে মাত্র ১৮ জন পরিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। চলতি মাসের ২৭ আগস্ট রোববার থেকে কারিগরি কলেজ শাখার পরিক্ষা শুরু হয়েছে।
উপজেলার তিনটি কলেজ থেকে ২৩২ জন পরিক্ষার্থী অংশ নেওয়ার জন্য ফরম পুরণ করলেও অংশ নিয়েছেন ২২৮ জন। মহিলা কলেজ শাখা থেকে এতো কম পরিক্ষার্থীর অংশ গ্রহনের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক সমাজে ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছে। অথচ বিএম শাখায় ১০/১২ জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতা দিব্যি তুলছেন বলে অহরহ অভিযোগ রয়েছে।
পরিক্ষার্থী এতো কমের বিষয়ে জানতে চাইলে কারিগরি শাখার কর্মচারী গোলাম রাব্বানী বলেন, ভর্তি হয়েছিল অনেক। তারপর থেকে অনেকের দেখা মিলেনে। মাত্র দুজন শিক্ষক আর আমি একজন কর্মচারী মোট তিনজন কারিগরি শাখায় কর্মরত। এসব নিয়ে খবর প্রকাশ না করায় ভালো।
তিনি আরো বলেন, মহিলা কলেজের শাখা মহিলা কারিগরি কলেজ। জেনারেলের শাখার অনেক শিক্ষক ক্লাস নেয় এবং ভবন অফিস কক্ষ সবই এক জায়গায়।
কলেজের অধ্যক্ষ অনুকুল কুমার ঘোষ বলেন, একাদশ ও দ্বাদশ মিলে ১৮ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। শিক্ষক কর্মচারী কতজন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে সাবেক প্রিন্সিপাল ইসাহাক ভালো বলতে পারবেন। আপনি কলেজ অধ্যক্ষ আর ইসাহাক আলী বিগত প্রায় ১২-১৩ বছর আগে অবসর নিয়েছেন তিনি কিভাবে বলতে পারবেন প্রশ্ন করা হলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ইসাহাক আলী বলেন, আমার জানা মতে ১০/১২ জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন তোলেন। বিএম শাখা আমার অবদান। আমার সময় অনেক শিক্ষার্থী ছিল। কারণ এক ট্রেডে নিম্নে হলেও ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। তা না থাকলে এমপিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা।
কর্মচারী গোলাম রাব্বানীকে পুনরায় ফোন দিয়ে ১০/১২ জন শিক্ষক কর্মচারীর কথা বলা হলে তিনি বলেন, স্যারের সাথে কথা বলে তিনি তবে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে চান। কিন্তু তিনি আর ফোন রিসিভ করেন নি।
জানা গেছে, উপজেলায় তিনটি কারিগরি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজের পরিক্ষা কেন্দ্র তানোর পৌরসভা টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে। তিন কলেজ হচ্ছে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন (ইউপির) কচুয়া কারিগরি কলেজ। এই কলেজ থেকে পরিক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য একাদশ ও দ্বাদশ মিলে ১০১ জন শিক্ষার্থী ফরম পুরণ করলেও অংশ নিয়েছেন ৯৭ জন। তানোর পৌরসভা টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট( টিবিএম) কলেজ থেকে ১১৩ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন এবং তানোর মহিলা কারিগরি কলেজ (চাপড়া) থেকে মাত্র ১৮ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ নেন।
একাধিক শিক্ষকরা জানান, কারিগরি কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরিক্ষা দিতে হয় কেন্দ্রে। উপজেলায় মাত্র তিন কারিগরি কলেজ রয়েছে। বিগত সময়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু মহিলা কারিগরি কলেজ সবাইকে হতাশ করে দিয়েছে। কারণ একটি ট্রেডে নিম্মে ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। কিন্তু মহিলা কলেজ এক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ জানেন না কত জন শিক্ষক কর্মচারী আছে। তাহলে শিক্ষার্থী কোথায় থেকে আসবে বলেও প্রশ্ন ছুড়ে দেন শিক্ষক মহল। এসব নিয়ে কারিগরি বোর্ড বা সংশ্লিষ্টদের সরেজমিন তদন্তের জোর দাবি তুলেছেন শিক্ষাবিদরা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভূমি আবিদা সিফাতের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। রা/অ