সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৫১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবাসহ বিভিন্ন কার্ড দেয়ার নামে এক নারী মেম্বার ব্যাপক টাকা বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত ও বিচারের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ২০ আগস্ট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু অভিযোগের ৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোন কার্যকরি পদক্ষেপ নেননি ইউএনও। এতে হতাশ হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগিরা। ফলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া শুরু করেছেন মেম্বারসহ তার লোকজনরা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।
এখানেই শেষ নয়, যতটুকু বরাদ্দ পেয়েছেন তার অধিক ব্যক্তির নিকট টাকা আদায় করে ঘাপটি মেরে আছেন মেম্বার রশিদা বেগম। তিনি উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার এবং ধানোরা গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী। এভাবে টাকা আদায়ের ঘটনায় প্রতিবন্ধী সুফিয়া, আঙ্গুরা বেগম ও মোজাফফর নামের বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীরা লিখিত ও মৌখিক ভাবে চলতি মাসের ২০ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগে টাকা আদায়কারী মেম্বারের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন ওয়ার্ডসহ ইউপিবাসী। ফলে দ্রুত এমন টাকা খোর জনপ্রতিনিধির বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন জনসাধারণ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মহিলা মেম্বার রশিদা বেগম বলেন, সমাজসেবা অফিসের কিছু কর্মকর্তারা টাকা ছাড়া কোন কাজ করে দেন না। বিশেষ করে মুনতাজ ও রবিউল মাঠকর্মী টাকা নিয়ে কাজ করতেন। আমি যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি সবার কার্ড হয়েছে। আপনারা কি টাকার বিনিময়ে কার্ড দিতে পারেন জানতে চাইলে তিনি জানান, ভোটের সময় কেউ তো বিনা টাকায় ভোট দেয়নি, তারা ভোটের সময় নিয়েছে আমি এখন নিব এবং টাকা ছাড়া কোন কাজ করব না বলেও দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
অনেকে টাকা দিয়েও কার্ড পায়নি এমন প্রশ্নে মেম্বার উত্তরে বলেন, আমার চাহিদামত যারা টাকা দিয়েছে তাদের কার্ড হয়েছে। আর যারা দেয়নি তাদের হয়নি।
অভিযোগে উল্লেখ, গত প্রায় এক দেড় বছর আগে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়ার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র ও ৭ হাজার টাকা করে নেয় মেম্বার রশিদা। কিন্তু এখনো কার্ড হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন মেম্বার। ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী সুফিয়া বেগম, আঙ্গুরা ও মোজাফফর বলেন, আমাদের কাছ থেকে মেম্বার কার্ড দিবে বলে ৭ হাজার টাকা করে নেয়।
কিন্তু কার্ড দেয়নি। আমরা গরীব অসহায় প্রতিবন্ধী। টাকা ফেরত চাইলে নানা ভাবে হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
ওয়ার্ড বাসীরা জানান, দুয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিলে হয়। অনেকের কাছে বিপুল পরিমান টাকা আদায় করেছেন মেম্বার। এমনকি যারা কার্ড পাওয়ার যোগ্য তাদের কাছেও নিয়েছেন। আর যারা যোগ্য নয়, তাদের কাছ থেকেও আদায় করেছেন টাকা। এমন টাকা খোর জনপ্রতিনিধিদের জন্য সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য গুলোতে ছাঁই পড়ছে। এদেরকে সাসপেন্ড অথবা শাস্তি মুলুক কিছু ব্যবস্থা করা দরকার, তাহলে অন্যরা ভয় পাবে।
উপজেলার কামারগাঁ ইউপির চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি ফরহাদ বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ফেরত দিতে বলেছি এবং এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সিফাতের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ করেন নি তিনি। রা/অ