শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৫১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ ও ভাংচুরের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করে থানা পুলিশ। বুধবার ২৩ আগস্ট বেলা ১১টার সময় কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভিতরে ও রাইরে এমন ঘটনা ঘটে। পরে সংঘর্ষে জড়িতরা মামলা করবেন না মর্মে থানায় লিখিত দেন। একারণে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে মোবাইলে এমনটি জানান ওসি হরিদাস মন্ডল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়ার নামে নগদ অর্থগ্রহণ ও বিদ্যালয়ের জমি ব্যাংকে মরগেজ দেয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বুধবার সকালে মহাসড়ক অবরোধ করে মানবন্ধনের আয়োজন করে কেশরহাট বাজার বণিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজি হাবিবুর রহমান মিঠু।
খবর পেয়ে পুলিশ মানববন্ধ বন্ধ করে তাদের সরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ অন্যত্র চলে গেলে তারা কয়েকজন বহিরাগত সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বেশ কিছু লোকজন বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা দিয়ে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় বিদ্যালয় ভর্তি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
এখবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের স্থানীয় অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ছুটে এসে প্রতিবাদ করলে মিঠু কাজির লোকজনের হামলায় কেশরহাট পৌর যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি মহসিন আলী গুরুতর আহত হন। এসময় স্থানীয়দের মারপিটে কাজি হাবিবুর রহমান মিঠুও গুরুতর আহত হন। এতে বিদ্যালয় চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এঘটনায় আহত মহসিন আলী ও কাজি হাবিবুর রহমান চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে নিরাপদে পাঠানো হয়।
এসময় মিঠু কাজি উত্তেজিত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিঠু কাজির চাচা শরিফুল কাজি, চাচাতো দুই ভাই মাহাবুর কাজি এবং শাহাবুর কাজিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর জানায়, বহিরাগত লোকজন নিয়ে মিঠু কাজিরা হঠাৎ ঝাঁকি দিয়ে লাঠি নিয়ে বিদ্যালয়ে ঢুকে তখন আমাদের কøাস চলছিল। আমরা সকলে ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠি। স্যার আমাদের সাত্বনা দিতে থাকেন। পরে বিদ্যালয়ে মারামারি শুরু হয়। আমরা এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, হাবিবুর রহমান মিঠু বখাটে লোকদের নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছিল। পরে সেখানে থেকে বহুলোক নিয়ে হঠাৎ করে আমার কক্ষে ঢুকে গালিগালাজ করে অফিসে ভাংচুর চালায়। এতেও তাদের রাগ ক্ষান্ত না হয়ে আমাকে ভেতরে রেখে অফিসের গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। আমার শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা তারা কেন ঘটিয়েছে আমার বোধগম্য নয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কেশরহাট পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র রুন্তম আলী প্রামাণিক বলেন, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তাদের অভ্যন্তরিন কোনো বিষয় থাকতে পারে তাই বলে স্কুল ভরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলা অবস্থায় কাজি হাবিবুর রহমান মিঠু লোকজন নিয়ে প্রধান শিক্ষককে তার রুমের গেটে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করা খুব অন্যায় কাজ। তাদের তান্ডবের সময় শিক্ষার্থী আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করছিল। বিদ্যালয়ের এধরণের ঘটনায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং বিদ্যালয়ে জরুরি সভার আহব্বান করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধানুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয় হবে।
এবিষয়ে মোহনপুর থানার এসআই ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন, হাবিবুর কাজি মানববন্ধন করছিলেন পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে অন্য একটি ঘটনায় গেলে তারা বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা দেয়। মহসিন নামের একজন তালা দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তাকে মারধর করা হয়। এরপর তার ভাই ভাতিজাদের মারপিটে হাবিবুর কাজি আহত হয়। ওসি স্যার ঢাকা থেকে ফিরেছেন স্যারের নির্দেশ পেলে তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। রা/অ