শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩৬ am

সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক
যুক্তরাষ্ট্রের মুখে গণতন্ত্রের বুলি, আড়ালে স্বৈরাচারের কাছে অস্ত্র বিক্রি : সরকার জারিফ

যুক্তরাষ্ট্রের মুখে গণতন্ত্রের বুলি, আড়ালে স্বৈরাচারের কাছে অস্ত্র বিক্রি : সরকার জারিফ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র নিয়ে নসিহত করলেও বেশিরভাগ স্বৈরতান্ত্রিক দেশে দেদার অস্ত্র বিক্রি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় আসার পর ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি গণতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে যুদ্ধের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব তৈরি করবেন। তবে বাস্তবতা গভীরভাবে ভিন্ন। বাইডেন প্রশাসন ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন নথি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২০২২ সালে বিশ্বের ৫৭ শতাংশ স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলোতে অস্ত্র পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে।

স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ব্যবসায়ীদের অন্যতম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের ৪০ শতাংশ আগ্নেয়াস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। সাধারণত দুভাবে অস্ত্র রপ্তানি করে দেশটি। কখনো তারা অস্ত্র সাহায্য পাঠায়, কখনো বিক্রি করে থাকে। বিক্রির ক্ষেত্রে, বিদেশি সামরিক বাহিনীর কাছে এবং সরাসরি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে। ফরেইন মিলিটারি সেলসের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কাজ করে থাকে। প্রথমে একটি কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কেনা হয় এবং পরে সেটা বিদেশি প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়। তবে ডিফেন্স ক্লান্ডেসটাইন সার্ভিসের (ডিসিএস) পদ্ধতিটি আরও সরাসরি কাজ করে। এক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো চুক্তি হয় না।

দ্য ইন্টারসেপ্ট জানায়, ডিসিএসকে গতবছরের এপ্রিলের শেষ দিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ডিফেন্স ট্রেড কন্ট্রোলের মাধ্যমে অস্ত্র বিক্রির তথ্য প্রকাশ করে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ফরেইন মিলিটারি সেলসের মাধ্যমে (এফএমএস) ১৪২টি দেশ বা অঞ্চলে অস্ত্র সরবরাহ করেছে যার মূল্য প্রায় ৮৫ বিলিয়ন ডলার। প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের প্রথম বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রবিক্রি ২০৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। যা এর আগের ট্রাম্প সরকারের রেকর্ড ১৯২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের মুখে গণতন্ত্রের বুলি, আড়ালে স্বৈরাচারের কাছে অস্ত্র বিক্রি :
ইউক্রেন যুদ্ধে অনেক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিলেও এতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির উচ্চহার বা স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলোতে তাদের অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে কোনো যৌক্তিক ব্যাখা তৈরি হয় না। এ ছাড়া ইউক্রেনে যাওয়া বেশিরভাগ মার্কিন অস্ত্রই বিক্রি নয় বরং দানের।

সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০২২ সালে গণতন্ত্রের প্রকারভেদে বিশ্বের ৮৪টি স্বৈরাচারী অথবা কর্তৃত্ববাদী দেশের অন্তত ৪৮টিতে অস্ত্র বিতরণ ও বিক্রি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কোন দেশগুলো স্বৈরতান্ত্রিক তা বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির তথ্য এবং গণতন্ত্রের নিরিখে কোনো দেশের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন- এদুটো বিষয়ের তুলনা করা হয়েছে। মূলত চার ধরনের সরকার দেখা যায়। এগুলো হলো- স্বৈরতন্ত্র, নির্বাচনভিত্তিক স্বৈরতন্ত্র ও গণতন্ত্র এবং উদার গণতন্ত্র। প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বিবিধ ক্যাটাগরির আওতায় এনে এই অস্ত্রগুলো বিভিন্ন দেশে বিক্রি করেছে।

মজার বিষয় হলো ফ্রিডম হাউজ র‌্যাংকিং অনুযায়ী যেসব ‘দেশ মুক্ত’, ‘আংশিক মুক্ত’ এবং ‘মুক্ত নয়’ তাদের সবার কাছেই শীর্ষ ৮ রপ্তানিকারক দেশ অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নানারকম বিধি অমান্য করে বা না দেখার ভান করে ‘আংশিক মুক্ত’এবং ‘মুক্ত নয়’ এমন দেশগুলোর জন্যই বেশ যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র বিক্রিতে আগ্রহী।

এসআইপিআরআই এর তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য নেতৃস্থানীয় গণতন্ত্রগুলো বিগত বছরগুলোতে স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলোতে বেশি অস্ত্র রপ্তানি করেছে। এর ফলে দেশগুলোতে কী ভয়ংকর পরিণতি নেমে আসতে পারে সেটা তারা ভাবেনি। এটা ঠিক কাজ নাকি বেঠিক কাজ সেটিও তারা বিবেচনায় আনেনি। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের যুক্তরাষ্ট্র যখন দেশে দেশে গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা সাজছেন ঠিক তখনই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মুনাফা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে চেহারা ফিরিয়ে দিচ্ছে।

বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি অস্ত্র হস্তান্তর নীতি (সিএটি) নবায়ন করেছে। ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া এই নীতি অনুযায়ী, মার্কিন অস্ত্র যাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে তাদের বিষয়ে আরও উদ্বেগ মোকাবিলায় আরও পদক্ষেপ নেওয়া হয়। নতুন রীতিগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের চেয়ে আলাদা। এ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো অস্ত্রের কারণে এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সংঘাত বা গণতান্ত্রিক আইনের শাসনকে ক্ষুণ্ন করার বিষয়টিতে নজরদারি বাড়ানো হয়। তবে এই নির্দেশনা আগের নীতির চেয়ে কিছুটা শক্তিশালী হলেও তা অস্থায়ী এবং আইনত প্রয়োগযোগ্য নয়।

এসমস্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে সহজেই বোঝা যায়, বাইডেন গত বছর স্টেট অফ দ্য ইউনিয়নের ভাষণে বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে যেসব স্বাপ্নিক কথাবার্তার ফুলঝুরি ছুটিয়েছিলেন সেসব ছিল মিথ্যা এবং চরম স্ববিরোধী। বাইডেন গণতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের লড়াইকে স্বাধীনতা ও পরাধীনতার যুদ্ধ বলেছেন। তবে তার পূর্বসূরি ট্রাম্প সরকারের সরাসরি অস্ত্র বিক্রিতে মনোযোগী ছিলেন। রিপাবলিকান এবং ড্রেমোক্র্যাট, যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় যারাই থাকুক না কেন, বিশ্বের সেরা অস্ত্র ব্যবসায়ীর খেতাবটা তাদেরই থাকে। বাইডেন বিশ্বকে গণতান্ত্রিক আর স্বৈরতান্ত্রিক দেশে বিভক্ত করার যে খেলায় মেতেছেন তা অনেকটা ‘আমাদের সঙ্গে না থাকলে তোমরা আমাদের শত্রু’র মতো। সূত্র : পদ্মাটাইমস

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.