সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:২৪ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় স্থাপিত আলীতলা দাখিল মাদরাসা। এই মাদ্রসার ১২ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরিক্ষায় কেউ পাশ করতে পারেনি। এজন্য শিক্ষকদের এমপিও বন্ধের দাবি করেছেন এলাকার শিক্ষানুরাগী সচেতন মহল। গত ১ আগষ্ট মঙ্গলবার প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকাবাসীর স্বাক্ষর সংবলিত লিখিত অভিযোগ ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও চেয়ারম্যান মাদরাসা বোর্ডের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলতি বছরের এসএসসি/দাখিল পরীক্ষায় মাদরাসার কোনো শিক্ষার্থী কৃতকার্য না হওয়ায় তারা এই দাবি তুলেছেন। এবার প্রতিষ্ঠান থেকে একজনও শিক্ষার্থী পাশ না করাই ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
জানা গেছে, চলতি বছর প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফরম পূরণ করেন। কিন্ত পরীক্ষার সময় তিন জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা অংশ নেননি। মোট ১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এদিকে গত ২৮ জুলাই স্কুল/মাদরাসার এক যোগে এসএসসি-দাখিল পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে তানোর উপজেলার আলিতলা দাখিল মাদরাসা থেকে এবার কোনো শিক্ষার্থী পাশ করতে পারেনি।
ময়েনপুর মহল্লার কয়েকজন অভিভাবক প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদরাসার ১৫ জন শিক্ষকের পিছনে প্রতিমাসে সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। অথচ তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত না হয়ে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। আবার যদি মাদরাসায় উপস্থিত হন তাহলে পাঠদান না করিয়ে রাজনৈতিক চর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তারা ঠিকমতো শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করান না। প্রতিষ্ঠানে এসে বসে আড্ডা দিয়ে চলে যাই তবুও দেখার কেই নেই। দিনের পর দিন এভাবে চলছে মাদরাসার কার্যক্রম।
স্থানীয়রা বলেন, তাদের ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যত বলে কিছুই নেই এই প্রতিষ্ঠানে। আমরা অভিভাবকগণ সরকারের কাছে দাবি করছি এমন প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের এক জৈষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এটি তাদের নজরে এসেছে। তিনি বলেন, মাদরাসা সুপারকে শোকজ করা হবে এবং শোকজের জবাব দেবার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের এমপিও স্থগিত করা হবে।
এবিষয়ে মাদরাসার সুপার আব্দুল হক বলেন, আমরা খুবই মর্মহত। এই ব্যাচে কিছু ছাত্রীর বিবাহ হয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে গিয়েছিল এবং ছাত্ররা রাজমিস্ত্রি কাজে ঢাকায়। তাদের ক্লাশে না পাওয়ায় পড়াশুনা কম হয়েছে বলে স্বীকার করে মাদরাসা সুপার।
তবে, আগের কয়েক বছর এই প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ৯০ ভাগ পাশ করেছে বলে জানান তিনি। তবে এসব বিষয়ে পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, আলিতলা দাখিল মাদরাসায় কেউ পাশ করতে পারেনি এটা সত্য। তাদের মাদরাসা না থাকায় ভাল। আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো বলে জানান ইউএনও। রা/অ