রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৪৫ am
এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া স্কুলশিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিনের ছেলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে ফরিদার ছেলে রাফিউল বাশার (১৮) মারা যান। রাফিউলের শরীরের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রাফিউলের মৃত্যুর খবর তাঁকে রাতেই দেওয়া হয়েছে। এরপর রাতেই মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়েছে।
নিহত রাফিউলের বড় ভাই রাশেদুল বাশার (২৫) এখনো শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরের ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত বলে স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান বাগমারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোরে বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামের মাদারীগঞ্জ বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে ঘরেই দগ্ধ হয়ে মারা যান রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শিবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন। আর দগ্ধ হওয়ার পর তিনতলা থেকে লাফ দিয়েছিলেন তাঁর দুই ছেলে। তাঁদের মধ্যে ছোট ছেলে শুক্রবার রাতে মারা যান।
আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রাশেদুল রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। আর নিহত রাফিউল উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তাঁদের বাবা এজাজুল বাশার স্বপন দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী।
স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনার সময় এজাজুল বাশার স্বপন বাড়িতে ছিলেন না। ঈদ করতে তিনি গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। এই পরিবার যে বাড়িতে থাকে, সেটি ‘আশা’ নামের একটি সিনেমা হল ছিল। হল বন্ধ হওয়ার পর এজাজুল সেটি কিনে নেন। এর তৃতীয় তলায় তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন। এই ভবনে কয়েকজন ভাড়াটেও ছিলেন। তবে ঈদে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন। এ ছাড়া ভবনের বিভিন্ন স্থান নানা পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বাগমারা স্টেশনের কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান, ভবনের দ্বিতীয় তলায় রান্নাঘর ছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভবনে আগুন লাগার পর স্থানীয়রা তা নেভানোর চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে তৃতীয় তলার একটি কক্ষে থেকে স্কুলশিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাড়ির নিচে আহত অবস্থায় পড়ে থাকা দুই ছেলে উদ্ধার করে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পরে অবস্থা অবনতি হলে দ্রুত ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে হস্তান্তর করা হয়। শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফিউল মারা যান। রা/অ