শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:২৮ pm
শহিদুল ইসলাম (নিজস্ব প্রতিবেদক) নাচোল :
‘চলো যাই উৎসবে, ফিরে যাই শৈশবে’ স্লোগানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মুন্সী হযরত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের নাম রেজিস্ট্রেশন শুরু উপলক্ষে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ৩০ জুন শুক্রবার রেল স্টেশন মাঠে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আয়োজনে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নাম রেজিস্ট্রেশন শুরুর উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন আলী।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট মইনুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান, উদযাপন কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের খোকন, সদস্য সচিব (অর্থ) প্রভাষক শফিকুল আলম, উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম।
নাচোল রেল স্টেশন সংলগ্ন অবস্থিত ১৯৭৩ সালে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী মুন্সী হযরত আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গত ৫০ বছরে বহুগুণী, স্বনামধন্য ও সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা লেখাপড়া সম্পূর্ণ করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাদের অনেকেই নিজ এলাকায়, দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন পেশাগত দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।
৫০ বছর পূর্তির এই আনন্দঘন মুহূর্তে তারা অনেকেই দূর দুরান্ত হতে কৈশোরের সোনালী স্মৃতি মাখা প্রান্তরে উপস্থিত হতে নাম রেজিস্ট্রেশন শুরু করেছেন। এদিন প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী তাদের নাম রেজিস্ট্রেশন করেন।
সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু তাহের খোকন ও সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব (অর্থ) প্রভাষক শফিকুল আলম সহ উদযাপন পরিষদের সদস্য বৃন্দ দ্বিধাহীন চিত্তে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে প্রাক্তন ও নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের নাম রেজিস্ট্রেশন করে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব সফল করার আহ্বান জানান। এছাড়া বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্ররা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নিজেদের সোনালী কৈশরকে স্মরণ করবে এবং আগামীতে বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্রদের জন্য শিক্ষামূলক কর্মসূচির উদ্যোগ নেবে।
বিশিষ্ট সমাজসেবী মুন্সি হযরত আলী ১৯৭৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানের জমি দান করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মরহুম মাহতাব উদ্দিন এরপর ইয়াসিন আলী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
স্বনামধন্য এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা এ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নানা আয়োজনে মুখর করে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অনন্য স্মরণীয় দিন হিসেবে উপহার দেওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্যবৃন্দরা । প্রথমবারের মতো এ পুনর্মিলনীতে সারা দেশ ও বিদেশে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
৩০ জুন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় রেলস্টেশন মাঠে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে নাম রেজিস্ট্রেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধন করেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন আলী। তিনি বলেন, এতে করে স্কুল কলেজ জীবনের হারিয়ে যাওয়া বাঁধভাঙ্গা বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছদকে আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ মিলবে।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আবু তাহের কখন বলেন, আমরা গত কয়েক বছর থেকে এই প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলিত করার চেষ্টা চালিয়ে আসছি। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রঘন আসছে। আমার বিশ্বাস ফেলে যাওয়া শৈশব ফিরিয়ে দিতে পারব আমরা।
সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে থাকবে আনন্দ,শোভাযাত্রা, সারাদিন আলোচনাসভা, স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিকহ আরো নানান অনুষ্ঠান। আমি সবাইকে অনুরোধ করব রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে অংশগ্রহণ করে অভূতপূর্ব এক আনন্দঘন পরিবেশে শামিল হতে।
প্রতিষ্ঠানের জমিদাতা মুন্সি হযরত আলী ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিনসহ অদ্যবধি যে সকল শিক্ষক কর্মচারী অবসরে গিয়েছেন তাদের প্রতি আনুষ্ঠানিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই আমরা।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম বলেন, সুবর্ণজয়ন্তীর এমন আনন্দঘন মুহূর্তে নিঃসন্দেহে নিজেকে গর্ববোধ করছি। বিদ্যালয়ের শুরু থেকে এই অঞ্চলের মানুষদের আলোকিত করতে ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের সহযোগিতায় কারিগরি শিক্ষা চালু করা হয়েছে এবং আমি আগামী দিনগুলোতেও আপনাদের সাথে থেকে শিক্ষা সেবা দিয়ে যেতে পারি সে সহযোগিতা কামনা করছি।
অনুষ্ঠান আয়োজনে বিন্দুমাত্র শুন্য রাখতে চান না আয়োজক কমিটির সদস্যরা এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই সুবর্ণজয়ন্তীর দিনটিকে বড় স্মৃতি হিসেবে উপহার দিতে চাই। আমরা মিলিত হবো আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠে যেখানে ফেলে এসেছিলাম আমাদের কৈশরের কত শত মধুর স্মৃতি, যে মাটির গন্ধের উন্মাদনা আজও খুঁজে পাই আমার রক্তে, যেখানে আমার, আপনার শেকড়। সুবর্ণ জয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠানটি আগামী নভেম্বর মাসের শেষ দিকে উদযাপিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উদযাপন কমিটি। রা/অ