সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫৩ am
ডেস্ক রির্পোট :
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ২০১৪ সালে প্রধান বিরোধী দলবিহীন নির্বাচন নিয়ে কিছু দিন সমালোচনার মধ্য দিয়ে পার করতে হয়েছিল। তবে সেই সমালোচনা আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আমরা নির্বিঘ্নে সরকার পরিচালনা করেছি। তাই বর্তমানেও আমরা কোনো কিছুতেই চাপ অনুভব করছি না। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন কোনো দৃষ্টান্ত হতে পারে না। এ নিয়ে আমাদেরও অনুতাপ রয়েছে। কোনো রাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে সেন্টমার্টিন বা কোনো ভূখণ্ড চেয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার জানা মতে কেউ চায়নি।’
গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ডিক্যাব টক’ নামের এ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন প্রতিমন্ত্রী। এতে সংগঠনের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের অবস্থান নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পৃথিবীর কোনো বন্ধুরাষ্ট্রকেই বলিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন কেন, যে কোনো বিষয়ে আমাদের কাঠামো, সংবিধান, আমাদের নির্বাচন কমিশন বা সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো মন্তব্য করতে। আমরা কখনোই এ বিষয়ে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোকে উৎসাহ দেব না। আমরা অতীতেও বলেছি আমাদের অবস্থান। তারপরও যাঁরা এটা করেন বা করে যান, আমরা কখনোই এটাকে স্বাগত জানাব না। তবে স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, তাঁর সরকার এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের বাহিনীদের যাচাই-বাছাই নিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বাংলাদেশের গর্বের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, পুলিশ বাহিনী বা সার্বিক অর্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত শান্তিরক্ষী বাহিনী গোটা পৃথিবীতে একটি উদাহরণ। চিঠি দিয়ে এই যে অর্জনকে যারা খাটো করে দেখছেন বা এ অর্জনকে ব্যর্থ করে দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন, তাঁরা বাংলাদেশের বন্ধু নন, তাঁরা শত্রু।
তিনি বলেন, যাঁরা এটা করেছেন, তাঁরা কংগ্রেসম্যান, সিনেটর, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেই হোন না কেন, তাঁরা আমাদের শত্রু। তাঁদের যাঁরা এগুলো করিয়েছেন পয়সা দিয়ে, বাংলাদেশের মানুষের সময় এসেছে তাঁদের চিনে নেওয়ার। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে নিশ্চিত থাকবেন এ ধরনের চিঠির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
বিদেশে সরকারের লবিস্ট ও পিআর ফার্ম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের একটি পিআর ফার্ম আছে, নেলসন মুলিনস। তাদের মাসিক ফি ২০ বা ২৫ হাজার ডলার।
যুক্তরাষ্ট্র এ দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র করছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে অতীতে ষড়যন্ত্র হয়েছে। বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক দল ভারতের প্রশ্ন এলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছাড় দেওয়ার দোষ দিয়ে থাকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনে জয়ী হতে না পারার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল ভারতে গ্যাস দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ। আমরা পুরো বিষয়টি জানি না, হয়তো কখনও জানব না। তবে শেখ হাসিনা যখন বলছেন, তখন অভিজ্ঞতা থেকেই বলেছেন।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা মিলে জোট ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগ দেওয়া ও মার্কিন ডলারের বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকার অবস্থান নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রিকসে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর ব্রিকসের এমন কোনো পরিকল্পনা বা ঘোষণা দেওয়া হয়নি যে তারা ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্যবস্থা নিয়ে আসবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও নিজস্ব মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করেছে, তা ডলারের বিকল্প হিসেবে নয়। ব্রিকসের মুদ্রা ব্যবস্থাটা সমান্তরাল পদক্ষেপ হতে পারে। সূত্র : সমকাল