শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৬ pm
এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বসত বাড়িতে ব্যাংকের মতো ভল্ট বানিয়ে মাদকদ্রব্য, মাদক বিক্রির অর্থ ও স্বর্ণালংকার সংরক্ষণ করার অপরাধে জিয়ারুল ইসলাম (৩৫) নামের এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় অভিযান চালিয়ে সিন্দুকে রাখা সাড়ে ৭ কেজি হেরোইন, ১৮ বোতল ফেনসিডিল, হেরোইন বিক্রিয় করে রাখা নগদ সাড়ে ২৪ লাখ টাকা এবং ২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। জব্দ করা হেরোইনের আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (১৮ জুন) দিবাগত রাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার আচুয়া কসাইপাড়া গ্রাম থেকে ওই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মাদক কারবারি জিয়ারুল ইসলাম (৩৫) গোদাগাড়ী পৌরসভার আচুয়া কসাইপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী পুলিশের একটি টিম গোদাগাড়ী পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের আচুয়া কসাইপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানের প্রথম পর্যায়ে জিয়ারুলের বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে ৫০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়। অধিকতর তল্লাশির এক পর্যায়ে তার বাড়িতে বিশাল একটা আধুনিক এবং সুরক্ষিত স্টিলের তৈরি সিন্দুক ভল্ট পাওয়া যায়। ভল্টের চাবির জন্য অনুরোধ করা হলেও জিয়ারুল চাবি না দেওয়ায় এবং গোয়েন্দা তথ্য থাকার কারণে ভল্ট ভাঙার জন্য ফায়ার সার্ভিসকে আহবান জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে ভল্ট ভেঙে তার ভিতর থেকে বাকি সাত কেজি হেরোইন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। তবে নগদ টাকার এবং স্বর্ণালংকারের বৈধ হিসাব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সেগুলোকে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জিয়ারুল জানায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হেরোইনের ব্যবসা করেন। তিনি সীমান্ত থেকে বাহকের মাধ্যমে হেরোইন এনে বাড়িতে মজুদসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতেন। এ ব্যবসা করে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। নিজের মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ, স্বর্ণ এবং হেরোইনের নিরাপদ হেফাজতের জন্য তিনি বছর তিনেক আগে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে এই ভল্টটি সংগ্রহ করে। জব্দ হওয়া ফেনসিডিল তিনি নিজের সেবনের জন্য সংগ্রহ করেছিল বলেও আসামি স্বীকার করেন।
রাজশাহী জেলা তথা বাংলাদেশের মাদক উদ্ধারের ইতিহাসে এত বিপুল পরিমাণ হেরোইন উদ্ধারের নজির খুব কম। মাদক নির্মুল না হওয়া পর্যন্ত মাদক বিরোধী অভিযান চলবে। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতন রাজশাহীবাসীসহ মিডিয়া কর্মীদের সহযোগিতাও কামনা করেন পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। রা/অ