শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৩৮ pm
মোবারক হোসেন শিশির (নিজস্ব প্রতিবেদক) দুর্গাপুর :
রাজশাহীর দুর্গাপুরে মাদকাসক্ত পাষন্ড এক স্বামীর মধ্যযুগীয় কায়দার নির্যাতনে তীব্র যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছেন গৃহবধূ রাজিয়া বেগম (৪০)। ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের পানানগর গ্রামে।
স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রাজিয়া বেগমের পিতা আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, মেয়ে জামাই দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের পানানগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম একজন মাদকাসক্ত। দীর্ঘ এক বছর থেকে কারণে অকারণে সব সময় আমার মেয়েকে অমানুষিক শাররীক নির্যাতন করে আসছে। আমার মেয়ের ওরসের একটি সন্তান থাকায় মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েও সংসার করে আসছে।
গতকাল ৯ জুন দুপুরে মেয়ে জামাই জাহাঙ্গীর আলম নেশা করে বাড়ীতে এসে আমার মেয়ে রাজিয়া বেগমকে হাত পা বেঁধে হত্যা করার উদ্দেশ্যে কাঠের ফিড়া ও লাঠিসোটা দিয়ে মধ্যযুগীয় নির্যাতন চালাতে থাকে। মারপিটের এক পর্যায়ে আমার মেয়ের কানে থাকা স্বর্নের রিং ধরে টানদিলে রাজিয়ার কান ছিঁড়ে যায়। এতে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হতে থাকলে সেখানেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আমার মেয়ে রাজিয়া।
মাদকাসক্ত পাষন্ড স্বামী জাহাঙ্গীরের হাত থেকে আমার মেয়ে রাজিয়াকে বাঁচাতে প্রতিবেশীরা আমার মেয়েকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। মেয়ের কান ছিঁড়ে যাওয়ায় তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে। আর লাঠি সোটা দিয়ে এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করে পুরো শরীর জখম করেছে এবং মাথায় কাঠের ফিড়া দিয়ে আঘাত করায় মাথার ভিতরে রক্ত জমাট বেঁধে আছে সেকারণে তীব্র যন্ত্রণা ও ব্যাথায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে আমার মেয়ে রাজিয়া বেগম।
হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের সন্তান রাজিয়া বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছে ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী চামেলী বেগম ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মাসুমা পারভীন।
বর্তমানে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত থেকে গুরুতর আহত হওয়া রাজিয়া বেগমের চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন দুই মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী।
এবিষয়ে উপজেলার পারানগর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী চামেলী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, রাজিয়া বেগমের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম একজন মাদকাসক্ত। কারণে-অকারণে রাজিয়া বেগমের ওপর মাঝে মাঝেই অমানুষিক নির্যাতন করে মাদকাসক্ত পাষণ্ড স্বামী জাহাঙ্গীর আলম। গতকাল স্ত্রী রাজিয়া বেগমকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে। স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের গুরুত্বের আহত হওয়ার রাজিয়া বেগম আমার কাছে এসে সহযোগিতা চাইলে আমি তাকে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি এবং বর্তমান সময় পর্যন্ত আমি নিজে হাসপাতালে উপস্থিত থেকে চিকিৎসা জনিত সার্বিক সহযোগিতা করছি।
এবিষয়ে থানায় অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী চামেলী বেগম বলেন, গুরুতর আহত রাজিয়া বেগম একটু সুস্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
এবিষয়ে দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা দায়ের হয়নি। তবে মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি। রা/অ