সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৩৯ pm
আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের এমপি প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আক্তার ডালিয়া তানোর থানা মোড়ে মতিচুরের লাড্ডু বিতরণকালে রাজশাহী-১ আসনের বর্তমান এমপি ফারুক চৌধুরী বিরোধী কথাবার্তা বলে বিষাদগার করে বক্তব্য দেয়া মাত্রই স্থানীয় আ’লীগ নেতাকর্মীদের তোপের মুখে সটকে পড়েন তিনি। এছাড়াও স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে দ্রুত পালিয়ে যান বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
শনিবার দুপুরের দিকে তানোর থানা মোড়ে ঘটে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। হয়তো পরবর্তীতে মাঠে আসলে গণরোষে ফেলবেন বলেও তৃনমূল ও সিনিয়র নেতারা নিশ্চিত করেন। কারণ মনোনয়ন চাইতেই পারে তাই বলে এমপির বদনাম ও উপজেলা জেলা কমিটির কেউ জানবে না। আর তিনি এসে গোছানো মাঠ নষ্ট করবেন এটা হতে পারে না। অথচ কমিটির অনুমতি ছাড়া কেউ কোন সভা বা গণ সংযোগ করা সংগঠন বিরোধী। কারণ এমপিরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি। তাদের নামে গীবত বা বদনাম করা মানে প্রধানমন্ত্রীকে হেয় ও খাটো করা ছাড়া কিছুই নয়।
দলীয় সূত্র জানায়, বিগত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগ থেকে তানোর-গোদাগাড়ী উপজেলায় এমপির বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তি মনোনায়ন দাবি করেন। এমনকি ফারুক চৌধুরীর এমপির বিরুদ্ধে সেভেনস্টার গঠন করা হয়। সকল ষড়যন্ত্র বিচক্ষন নেতৃত্বে সব মোকাবিলা করে পুনরায় নৌকা পেয়ে এমপি হন বরেন্দ্র ভূমির পোড়া মাটির শহীদ পরিবারের সন্তান।
তৃনমূলের ভাষ্য, নির্বাচন এলেই এমপির বিরুদ্ধে সুবিধাবাদী মৌসুমী নেতাদের আবির্ভাব ঘটে। আসলে তারা তো ভোট করতে আসে না। তারা কিছু পাওয়ার জন্য আসে। তারা রাজনীতির মাঠে এক প্রকার জোকারে পরিণত হয়েছেন। আসলে এরা দলকে শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ না করে লবিং গ্রপিং এবং এমপিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু তাদের জানা উচিত ফারুক চৌধূরী রাজনীতির বট বৃক্ষ ও পরিপক্ব রাজনৈতিক নেতা। আর ডালিয়া জেলা বা উপজেলা কিংবা কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ নয়। নিশ্চয় তিনি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এসব করছেন। যদি ভাগ্যে সংরক্ষিত আসন পাওয়া যায়। কিন্তু এটা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ। যোগ্যতা নিয়ে রাজনীতি করতে হয়। স্বামীর পরিচয়ে যদি এমপি টিকিট পাওয়া যেত তাহলে তো এমপি মন্ত্রীর স্ত্রীরাই রাজনীতি করত।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার বলেন, কেউ এমপি মনোনায়ন চাইতেই পারে। তাই বলে বহিরাগত বাহিনী নিয়ে মানুষকে দিল্লিকা লাড্ডু দিয়ে আর স্বামীর পরিচয়ে রাজনীতি হবার নয়। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কোন পদে নেই অথচ কিভাবে মনোনায়নের দাবি তুলেন ডালিয়া তা বোধগম্য নয়। আমার তো মনে হয়, এসব করে যদি সংরক্ষিত কোটা পাওয়া যায়। কিন্তু সেটাও কেন দিবে দল। তিনি তানোরে গোপনে আসেন গোপনে লুড্ডু বিলি বিতরণ করে আবার এমপি ফারুকের বিরুদ্ধেও কথা বলেন। তিনি যা করছেন সেটা দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী। কারণ তিনি তানোরে আসলে কমিটিকে অবহিত করতে হবে এবং এমপিদের বিরুদ্ধে কোন গীবত বা সমালোচনা করা যাবে না। এটা কেন্দ্রের নির্দেশনা রয়েছে। আসলে তিনি তো রাজনীতি করতে আসে না। ফ্যাশান করাই তার লক্ষ্য বলে মনে হয়।
আয়েশা আক্তার ডালিয়া বলেন, আমি রাজশাহী-১ আসনে এমপি প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে চাই। এজন্য গণসংযোগ করছেন। কিন্তু উপজেলা কমিটি বা কোন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা নেই কেন প্রশ্নে তিনি জানান, ভয়ে আসছে না। কার ভয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সময় হলে সবাই আসবে। আপনি দলের কোন পদে নেই তাহলে কিভাবে এমপির টিকিটের দাবি করেন প্রশ্ন করা হলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে সটকে পড়েন।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানান, এরা রাজনীতির ফড়িয়া। যেমন আলু মৌসুমে ফড়িয়া দালালদের দেখা যায়। এদের কাজ থাকে না, কি করবে, এজন্যই আসে। এটা আওয়ামী, অন্য কোন দল নয়। আর ফারুক চৌধুরী এমন এক নেতা তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না। সুতরাং যারা সুবিধার জন্য এসব করছেন তারা বোকার রাজ্যে আছেন। ফারুক চৌধুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন আগামীতেও করবেন ইনশায়াল্লাহ। রা/অ