সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩০ pm
আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহীর তানোর পৌর সদরের বাসিন্দা হাজী ওসমানের ঝুকিপূর্ণ গোয়াল ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম মাহবুর রহমান লিয়ন (২৯)। বাড়ি পৌর সদরের কুঠিপাড়া মহল্লায়। তিনি আনেস প্রামানিকের পুত্র। আরেক শ্রমিকের নাম মমিন। তার কোমর ভেঙ্গে আহত হয়েছেন। বাড়ি শীতলীপাড়া মহল্লায়। তার পিতার নাম এন্তাজ আলী। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পৌর সদরে ওসমান হাজীর অন্ধকার গোয়াল ঘরে ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। এঘটনায় নিহত লিয়নের মা বাদি হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেন ওসি কামরুজ্জামান মিয়া।
তবে, এমন ঘটনা সম্পর্কে সিনিয়র সহকারী এএসপি গোদাগাড়ী সার্কেল সোহেল রানা বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। নিহতের মা কাউকে আসামি করে মামলা করতে রাজি হননি। আর আহত শ্রমিকের কোন অভিভাবক থানায় আসেনি। নিহতের পরিবার ইচ্ছে করলে কাউকে আসামি করে মামলা করতে পারবেন। কিন্তু পরিবারের কেউ যদি মামলা না করে সেক্ষেত্রে অপমৃত্যুর মামলাই হয় বলে জানান তিনি।
প্রতিবেশিরা জানান, এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবরে লিয়নের স্ত্রী পিতা মাতা জ্ঞান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এছাড়াও ছোট সন্তান ও গর্ভবতি স্ত্রীর কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। সন্তানের মৃত্যুতে বৃদ্ধা পিতা-মাতা নিথর হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, থানা মোড় থেকে উপজেলা পরিষদে আসার রাস্তা ও কুঠিপাড়া মোড়ের পশ্চিম উত্তরে হাজি ওসমানের করাত কল এবং তার পিছনে ওসমান হাজির পাকা বাড়ি। বাড়ির পশ্চিমে গোয়াল ঘর। গোয়াল ঘরে মাটির দেয়াল ছিল ঝুকিপূর্ণ ভাবে। দেয়ালে গরুকে পানি খড় খাওয়ানো নান্দা বা মাটির বড় পাত্র সরানো মাত্রই দেয়াল ভেঙ্গে লিয়ন নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর মমিনের কোমরের উপরে দেয়াল পড়ে কোমর ভেঙ্গে যায়। সাথে সাথে দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুর রহমান লিয়ন এবং মমিনের বেগতিক অবস্থার জন্য রামেক হাসাপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু মৃত লিয়নের মরদেহ রামেকেই রয়েছে। এখনো আনতে পারেননি ও মমিনের চিকিৎসা চলছে বলে জানান পরিবারের লোজকন।
এদিকে, গোয়াল ঘরে কোন আলো ছিল না। অন্ধকারের মধ্যে তাদেরকে কাজে লাগান ওসমান ও ছেলে বাবুল। ওসমানের স্ত্রী জানান, ঘটনার সময়ে তিনি গাভীর দুধ দিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার থেকে চারজন শ্রমিক কাজ করছিল। আর তারা সবাই বারান্দায় ছিলেন। কিন্তু দুজন বিশাল বড় নান্দা সরানো মাত্রই দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে। মৃত্যুর খবর শুনেই বাকি দুই শ্রমিক ও মালিকরা পালিয়ে যান।
তানোর কুঠিপাড়া মহল্লার বাসিন্দারা আক্ষেপ করে জানান, নিহত লিয়নের ছোট বাচ্চা আছে এবং স্ত্রীর পেটেও বাচ্চা আছে। লিয়ন কাজ না করলে তাদের পেটে ভাত জুটে না। ওসমান ও ছেলে বাবুল মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের দেখভালের অনুরোধ জানান স্থানীয়রা।
এব্যাপারে তানোর থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, সার্কেল এএসপি স্যার ও আমরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটি মর্মান্তিক। এঘটনায় নিহত মাহবুর রহমান লিয়নের মা জাহানারা বেগম বাদি হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন বলে জানান ওসি। তা/অ