রবিবর, ১০ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:১৮ am
আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনটি জেলার মধ্যে অন্যতম গুরুত্ব বহন করে আসছে দেশ স্বাধীনের পর থেকে। বিশেষ করে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তেমন হ্যাবিওয়েট প্রার্থী ছিল না বললেই চলে। যদিও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিলেন। কিন্তু এ আসনে এমপি ছিলেন বিএনপির হেবিওয়েট প্রার্থী প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল।
অপরদিকে, আ’লীগ হেবিওয়েট এমপি প্রার্থী সংকটে ভুগছিলো। কারণ বিএনপির প্রার্থীর সাথে ভোটে প্রতিযোগিতা করার মত প্রার্থীই ছিল না। এমনকি সাংগঠনিক ভাবে রাজনীতির মাঠে তেমন ভাবে আন্দোলন সংগ্রামেও ভূমিকা ছিল নিথর। কিন্তু সবকিছু পাল্টে দিয়েছেন তানোরের শহীদ পরিবারের কৃতি সন্তান ওমর ফারক চৌধূরী।
যদিও প্রথমবারের মত ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি ও চমকে দেন বিরোধীদের। অবশ্য ওই নির্বাচনে ফারুক চৌধূরী পরাজিত হলেও তিনিই যে আগামীর এমপি সেটা আপামর জনতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বুঝতে পেরেছিলেন। যার ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অপ্রতিরোধ্য প্রয়াত বিএনপির হেবিওয়েট প্রার্থীকে পরাজিত করে দেশব্যাপি চমক লাগিয়ে দেন তানোরে রত্নগর্ব মায়ের শহীদ পরিবারের সন্তান উপজেলার কলমা ইউপির চৌরখৈর গ্রামের জমিদার শহীদ আজিজুল হক চৌধূরীর গর্বিত সন্তান ওমর ফারুক চৌধূরী।
তার বিচক্ষণ নেতৃত্ব নি:স্বার্থভাবে সংগঠন পরিচালনা ও জেলাসহ দুই উপজেলায় হাজার হাজার তরুণ নেতৃত্ব তৈরী করে রাজনীতিতে এক অন্যরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তিনি। একক আধিপত্য, বিভিন্ন দপ্তরে দালাল, রাজনৈতিক একক ক্ষমতা কারো হাতে তুলে দেননি। যার ফলে সকল দলের নেতাকর্মীরা শান্তিতে রাজনীতিসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ফলে একদিকে যেমন নেতৃত্ব তৈরির কারিগর, অপরদিকে সম্প্রতির রাজনৈতিক ধারক বাহক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন ফারুক চৌধুরী।
দলীয় সুত্র জানায়, এমপির রাজনৈতিক বিচক্ষনতার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ৯০ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের একক আধিপত্য রাজনৈতিক ভাবে খর্ব করতে সক্ষম হন তিনি। শুধু তাই নয় বরেন্দ্রভূমির এই সন্তানকে শিল্পপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। নিষ্ঠার সাথে সেই দায়িত্ব পালন করে নজর কাড়েন দেশরত্ন থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতাদের। তার রাজনৈতিক দক্ষতায় পুরো জেলায় আ’লীগের জয়জয়কর অবস্থা। এটা সম্ভব হয়েছে ফারুক চৌধূরীর সাহসিক নেতৃত্বে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
গত রবিবার শীবনদীর ‘টি’ বাধে চা খাওয়া অবস্থায় বিএনপির দুজন নেতা আসেন। আলাপ চারিতায় তারা বলেন, এমপি ফারুক চৌধূরীর জন্য তানোর-গোদাগাড়ীতে রাজনৈতিক কোন হানাহানি নেই, মাস্তানি নেই, দালালি নেই। তার জন্যই সব দলের নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে সকল ধরনের কাজ করছেন। প্রতিহিংসা নেই, ভিলেজ রাজনীতি নেই ফারুক চৌধূরীর মধ্যে। অতীতে বিএনপির সময়ও মানুষ এত শান্তিতে ছিল না। আমরা বিএনপি করতে পারি। কিন্তু মনের দিক থেকে চায় ফারুক চৌধূরী যাতে পুনরায় এমপি হতে পারেন। তারা আরো বলেন, রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের অনেক যোগ্য প্রার্থী তৈরি করেছেন ফারুক চৌধুরী। অথচ বিএনপি প্রয়াত ব্যারিস্টারের পরিবারের উপর নির্ভরশীল। রাজনীতিতে নেতা তৈরি করতে না পারলে কি হয় সেটা বিএনপি হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফারুক চৌধুরী সফল রাজনীতিবিদ।
তানোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার সিদ্দিক জানান, এমপি মহোদয় সব সময় ভাবেন কিভাবে নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করা যায়। তিনি কখনই পকেট বন্দি রাজনীতি পছন্দ করেন না। অতীতে অনেকে মনে করতেন এরা ওরা ছাড়া দল চলবে না। কিন্তু এমপির নতুন নেতৃত্ব তৈরি করে দলকে আরো শক্তিশালী করেছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার বলেন, এমপি মহোদয়ের ছায়াতলে থেকে রাজনীতি করতে পারছি এজন্য মহান আল্লাহপাকের কাছে শুকরিয়া আদায় করি। তিনি এমন একজন নেতা যা বলার ভাষা নেই। যেমন করেছেন উন্নয়ন, তেমনি ভাবে তৈরি করেছেন নতুন নেতৃত্ব। শুধু তানোর ও গোদাগাড়ী নয় রাজশাহী জেলাকেই বদলে দিয়েছেন। প্রতিটি ঘরে ঘরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন।
তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সংগ্রামী সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, এমপি ফারুক চৌধুরী মহোদয় রাজনীতিতে আসার পর রাজশাহীকে বদলে দিয়েছেন। তার রাজনৈতিক দক্ষতায় বিগত ২০০৮ সাল থেকে অদ্যবদি সকল আসনে আ’লীগের এমপি। স্থানীয় নির্বাচনেও দলের প্রতিনিধি। রাজশাহী এক সময় বিএনপি জামায়াতের আতুড় ঘর ছিল। সেটা রাজনীতি ভাবেই ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলেছেন। তিনি রাজনীতির বটও বৃক্ষ। কারণ বট বৃক্ষের ছায়ায় যেমন শতশত মানুষ আশ্রয় নেই, ঠিক একই ভাবে তিনি দলকে শক্তিশালী করে নতুন নতুন মুখের জন্ম দিয়েছেন। যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলেন তাদেরকে বলব ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সালের দিকে তাকান। তখন দলের কি অবস্থা ছিল এবং বিএনপি কিভাবে নির্যাতন করেছেন।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিগত ২০০৯ ও ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলেরপ্রার্থী পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু তার দক্ষতায় ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকারপ্রার্থী বিজয় হন। দল কখনো ভাবেনি পরিষদে নৌকার চেয়ারম্যান হবে। সেটা করে দেখিয়েছেন এমপি মহোদয়। দেশের ১০০ উপজেলায় সরকারি টেকনিক্যাল কলেজ হয়েছে। তার মধ্যে তানোর উপজেলা অন্যতম। সদরে কলেজ করার জন্য প্রচুর চেষ্টা ও জমির দ্বিগুন দাম দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ দেয়নি। কলেজটি যাতে নির্মাণ হয় এজন্য এমপি মহোদয়ের নিজস্ব কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি দান করেছেন। কাশেম বাজারে রাস্তা সংলগ্ন জমিতে হয়েছে পাঁচতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনসহ ওয়ার্কশপ আবাসিক ভবন তৈরির কাজ শেষ। প্রতিষ্ঠানটি হওয়ার কারণে কাশেম বাজারের চেহেরা বলদে গেছে। যারা দলকে পকেট বন্দি করে পদ ভেঙ্গে দল চালাতেন। তারা মনে করেছিল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকব। কিন্তু এমপি সেটা হতে দেন নি। দুই উপজেলায় নতুন নেতৃত্ব ও ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়েও নতুন নতুন চমকপ্রদ নেতা তৈরি করেছেন।
পরিশেষে তিনি বলেন, আমার দৃঢ বিশ্বাস যতদিন ফারুক চৌধুরী মহোদয় রাজনীতিতে থাকবেন ততদিন মাননীয় প্রধানন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার তাকেই এমপির টিকিট দেবেন। রা/অ