সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪১ pm
আব্দুস সবুর, তানোর :
দোকানে বকেয়া মাত্র ৫২ হাজার টাকা, অথচ মামলা করা হয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার। রাজশাহীর তানোরে অসহায় আদিবাসি যুবক রতন হেমরমের উপর এমন চাঞ্চল্যকর মামলা করেন চান্দুড়িয়া বাজারের সার কীটনাশক ব্যবসায়ী মিলন। বিগত দুই বছর ধরে আদালতে হাজিরা দিতেই সংসারে ব্যাপক টানাপড়েন শুরু হয়েছে রতনের।
ঠিকমত তিন বেলা খেতে পাচ্ছিনা,আবার সন্তাদের পড়ালিখার খরচও দিতে পারছিনা। যাকে বলে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন রতন হেমরমের পরিবার। রতনের বাড়ি উপজেলার তালন্দ ইউনিয়(ইউপির) মোহর আদিবাসি পল্লীতে। সে সুশিল হেমরমের পুত্র। এঘটনায় আদিবাসি পল্লীর জনসাধারণের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমনকি এধরনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হলে মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি ঘোষনা করবেন পল্লীর জনসাধারনরা।
গত ২৩ মে মঙ্গলবার আদালত চত্বরে দেখা হয় রতনের সাথে, জানতে চাওয়া হয় আদালতে কেন, তিনি জানান, বিগত ২০১৭-১৮ সালের দিকে চান্দুড়িয়া বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী মিলনের কাছ থেকে আলু চাষের জন্য বাকিতে ৯২ হাজার টাকার সার বিষ বাকি নেওয়া হয়। আলু তুলে ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। ওই সময় আলুতে প্রচুর লোকসান হয়েছিল। তারপরও ৪০ হাজার টাকা দিই। কিন্তু সার বিষ বাকি নেওয়ার সময় জোরপূর্বক ব্যাংকে আমার নামে একাউন্ট করে কয়েকটি ফাঁকা চেক নেয় মিলন। ওই চেক দিয়ে বিগত ২০১৮ সালের দিকে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার মামলা করেন আদালতে। মামলার হাজিরা দেওয়ার কারনে সংসার চালাতে পারছিনা। পাড়ার দুজনে আলু করার জন্য জমি দিয়েছিল। আমার ছেলে মেয়ে রয়েছে চারজন।বড় ছেলে সবুজ হেমরম কলেজে পড়ে, মেয়ে বিউটি হেররমও কলেজে পড়ে ও সজিব হেমরম আগামী বছরে এসএসসি পরিক্ষা দিবে এবং ছোট মেয়ে মিঠি হেমরম ২য় শ্রেণীতে পড়ছে। মামলার কারনে আমার স্ত্রী কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিল এবং আমাকেও কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। কারন ৫২ হাজার টাকার বিপরীতে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার মামলার বোঝা নিয়ে চলতে হচ্ছে। তিন বেলা খেতেই পাচ্ছিনা, ছেলে মেয়েদের স্কুলে পড়াতে পারছিনা। ভাঙ্গাচুরা খাস জায়গায় বসবাস করছি। টাকা পরিশোধ করার কোনই ক্ষমতা নাই। পরিবার নিয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় নাই।
ছেলে সজিব জানান, টাকার টেনসনে বাবা মা ঘুমাতে পারেনা, আমরাও পড়তে পারছিনা। মরা ছাড়া উপায় নেই।
তবে মিলন জানান, কোন বাকির টাকা না, রতন আমার কাছ থেকে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। পরিশোধের জন্য একাধিকবার বলার পরও না দেওয়ার কারনে মামলা করেছি। ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে কোন এমাউন্ট না লিখে চেক নেওয়া যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান স্বাক্ষাতে কথা বললে সবকিছু বুঝতেন বলে দায় সারেন। রা/অ