সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৫৭ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে বাড়িতে ডেকে জামাই ও তার আপন ভাইকে পিটিয়ে আহত করেছে শ্বশুর, শালা-শমন্দি ও চাচা শ্বশুর। আহত জামাই তানোর পৌর এলাকার জিওল মহল্লার আজাহার মেম্বারের পুত্র রবিউল ইসলাম রুবেল (৩০) ও তার ভাই মিজানুর রহমানকে (৩৫) রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তানোর পৌর এলাকার আমশো তাঁতিয়ালপাড়া মহল্লায়। এঘটনায় রুবেলের পিতা আজাহার মেম্বার বাদি হয়ে রোববার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার জিওল মহল্লার বাসিন্দা আজাহার মেম্বারের পুত্র রবিউল ইসলাম রুবেল প্রায় ৮ বছর আগে স্বর্নাকে (২৪) বিয়ে করে। স্বর্নার পিতার বাড়ি তানোর পৌর এলাকার আমশো তাঁতিয়ালপাড়া মহল্লায়। তার পিতার নাম স্যানিটেশন ব্যবসায়ী আজাদ কবিরাজ।
তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই পুত্র সন্তান হয়। এঅবস্থায় ঈদুল ফিতরের দিন দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়া হয়।ওইদিনই বিকেলে স্বামী রুবেলের অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী স্বর্না আপন ভাই আরজুকে ডেকে দুই পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে পিতার বাড়িতে চলে আসে। সঙ্গে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ও স্বর্ণ অলঙ্কার নেয়া হয় বলে দাবি করে রুবেল।
এরপর থেকেই স্বামী রুবেল তার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে বাড়িতে আসতে বলে। কিন্তু স্ত্রী স্বর্না বেগম কৌশলে তার পিতার বাড়িতে রুবেলকে আসতে বলে। পরে স্বামী রুবেল বিষয়টি তার শ্বশুর আজাদকে অবহিত করেও স্ত্রী স্বর্না বেগমকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়।
সম্প্রতি গেলো বুধবার রুবেল আবারো তার শ্বশুর আজাদ কবিরাজের সাথে যোগাযোগ করে। তখন শ্বশুর আজাদ জামাই রুবেলকে তার ভাইসহ নিকট আত্নীয়দের নিয়ে বাড়িতে আসতে বলে। এরই প্রেক্ষিতে ২০ মে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামাই রুবেল তার ভাই এমদাদুল, মিজানুর ও চাচাতো ভাই হাবিবুরকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যায়।
এসময় উভয়পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে ঘোরয়াভাবে শালিস বৈঠক বসে। বৈঠকে স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন ছিলেন। এহেন সময় শালিসে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এক পর্যায়ে জামাই রুবেল তার শ্বশুর আজাদ কবিরাজের কাছে ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা প্রার্থনা করে হাত-পা ধরার জন্য শ্বশুরের কাছে যায়। এতে শ্বশুর আজাদ ক্ষিপ্ত হয়ে জামাই রুবেলকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে।
ঘটনার সময় পাশে থাকা শ্যালক আরজুু ও জয় এবং চাচা শ্বশুর আজিম উদ্দিনসহ আরো বেশ কয়েকজন লাঠি সোটা দিয়ে পেটানোর একপর্যায়ে হাসুয়া দিয়ে আঘাত করে। ফলে জামাই রুবেলের দুই হাতের কবজিতে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে তার ভাই মিজানুর উদ্ধারে এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়। এসময় আরেক ভাই এমদাদুল ও চাচাতো ভাই হাবিবুর সেখান থেকে পালিয়ে রক্ষা পায়। পরে তার আত্নীয়-স্বজনসহ মহল্লার লোকজন তাদেরকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা জামাই রুবেল ও মিজানুর বলেন, এতোদিন চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তাই রোববারে থানায় অভিযোগ করেন তাদের পিতা আজাহার মেম্বার বলে জানান তারা।
এবিষয়ে শ্বশুর আজাদ কবিরাজের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কি কারণে মারপিট করা হয়েছে তারাই ভালো জানে। তিনি মারপিট করেননি বলে অস্বিকার করেন। তবে, জামাইয়ের মার খাওয়া তিনি রক্ষা করতে পারেনি বলেও আক্ষেপ করেন শ্বশুর আজাদ।