সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৫৮ pm
আব্দুস সবুর (নিজস্ব প্রতিবেদক) তানোর :
রাজশাহীর তানোর পৌরসভা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম মন্টুর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ বাদি হয়ে চলতি মাসের ৮ মে সোমবার রাজশাহীর বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
মামলায় আসামি করা হয়েছে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম। তাঁর বাড়ি আমশো মথুরাপুর মহল্লায়। পিতার নাম মৃৃত এবার তুল্লাহ সরদার। এমন চাঁদাবাজির মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
মামলার বিবরণ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর সদরের আমশো মহল্লায় স্থাপিত হয় তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ে বিগত ২০০৩ সাল থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরি করে আসছেন মামলার বাদি আমশো-মথুরাপুর মহল্লার বাসিন্দা মৃত চাঁন প্রামানিকের পুত্র হারুন অর রশিদ। স্কুলটি প্রথমে নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত এমপিও হয়। বিগত ২০২২ সালের জুলাই মাসে উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন বা এমপিও পায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মামলার বাদি হারুনের কাগজপত্র বাদ রেখে বেতনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন।
মামলার বাদি সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর বিনা বেতনে পাঠদান করে আসছি। সরকার উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন দেয়। কিন্তু বেতনের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র মাধ্যমিক অফিসে জমা দিতে হয়। আমাকে ছাড়া শিক্ষক আসিরুদ্দিনের কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক মামলার আসামি গোপনে জমা দেন। আমি অন্য মারফতে বিষয়টি জানতে পারি। গত মাসের ১৩ এপ্রিল স্কুলের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাব জানিয়ে দেয় ১০ লাখ টাকা পেলে তার কাজ হবে তাছাড়া হবে না। আমি বিভিন্ন ভাবে অনুরোধ করার পরও টাকা ছাড়া কোন কাজ করবে না। নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা করি। এ্যাডভোকেট রায়হানের মাধ্যমে আদালতে অভিযোগ দাখিল করা হলে বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়েছেন। টাকা চাওয়ার রেকর্ড সংযুক্ত আছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
একাধিক শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা মানে পুরো প্রতিষ্ঠানের বদনাম। হারুন দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে পাঠদান দিয়ে আসছে। আর এমপিও হবার পর বেতনের জন্য ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে এটা অমানুবিক। হারুনের স্ত্রী দীর্ঘ দিন ধরে প্যারালাইসিস রোগে ভুগছেন। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এমনকি রান্নাবাড়াও করতে হয় হারুনকে। শিক্ষক সমাজ যদি এমন হয় তাহলে জাতি সমাজ কোথাই যাবে। এসব দূর্নীতি চাঁদাবাজ শিক্ষকদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। তাহলে অন্য শিক্ষকরা এমন কর্মকান্ডে জড়িত হতে সাহস পাবে না।
উক্ত মামলার আসামি প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, বেতন অনুমোদন করতে টাকা লাগে এটা সবাই জানে। সে জন্যই তাকে বলা হয়েছিল। কিন্তু ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয়নি। রেকর্ড আছে, আপনি ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন- টাকা চেয়েছি, তাই বলে আদালতে মামলা করতে হবে এটা কোন ধরনের কথা। এটাতো প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট ছাড়া কিছুই নয়। মামলা করেছে আদালতে জবাব দেওয়া হবে।
ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল বাসার সুজন বলেন, মামলার বিষয়ে শুনেছি। আগামী বৃহস্পতিবার এসব বিষয় নিয়ে স্কুলে বসা হবে এবং সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তা/অ