শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৪৭ am
এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে তিনজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীরা হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির মহানগরের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন মুরশিদ আলম ফারুকী।
তাঁদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে শুধুমাত্র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাইফুল ইসলাম স্বপন। এর বাইরে আর কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকে। আর অপর প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকীকে তো মাঠেই দেখা যায়নি।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও জাতীয় পার্টি (জাপার) মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী মনোনয়ন পত্র উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার দেলোয়ার হোসেন।
তিনজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে নানাভাবে নির্বাচনী মাঠ দখল করে উন্নয়নমূল লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, অনেকটায় চাপমুক্ত থেকে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লিটন। এর আগে তিনটি নির্বাচনে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হয় তাঁকে। এমনকি ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তখনকার মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে পরাজিত করতে অনেক বেগ পেতে হয় লিটনকে। সেই লিটনই এবারের নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এর কারণ হিসেবে, নগরবাসী দেখছেন গত পাঁচ বছরের উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন শহর।
নগরীর রেলগেট এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দিয়ে কি হবে? এর আগের পাঁচ বছরে দেখেছি কোনো উন্নয়ন হয়নি রাজশাহী শহরে। এমকি নগর ভবনের কর্মচারীদেরই ঠিকমতো বেতন দিতে পারেনি। বেতনের দাবিতে মাঝে মধ্যেই সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা আন্দোলন করতেন। কিন্তু গত নির্বাচনের পরে আমি আর কখনোই এ দৃশ্য দেখিনি। আমার দোকানটি নগর ভবনের গেটের সামনেই। এখানে বসে নগর ভবনের অনেক খবরই আমি পাই। সেই দিক থেকেই বলছি, এবার নগর ভবনের বিএনপিপন্থি কর্মচারীরাও মেয়র লিটনের পক্ষে মাঠে নামবেন। এ কারণে তিনি এবার অনেক এগিয়ে।’
নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা মোজাহার হোসেন বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে রাজশাহী নগরীতে কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। আমরা এতো উন্নয়ন কখনো দেখিনি। দল যায় করি, আর ভোট যাকেই দিই এটি অস্বীকার করার সুযোগ নাই। এতো উন্নয়ন যখন অন্য কারো আমলে হয়নি, কাজেই আগামীতেও মেয়র লিটনই ক্ষমতায় আসছে এবার এটা প্রায় নিশ্চিত। এ কারণে মেয়র পদের নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো বাড়তি চাপ আছে বলে মনে হয় না।’
সচেতন নাগরিক কমিটির রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন বলেন, ‘একটা মানুষ কাজ করতে গেলে নানা ভুল হবেই। কিন্তু আমাদের ভবিশ্যতক প্রজন্মের কথা চিন্তা করে এ নগরীর উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। সেদিক বিবেচনা করে আমি বলবো এবার মেয়র লিটন সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী নগরবাসীর কাছে।’
তিনি বলেন, ‘আগের সবকটি নির্বাচন দেখার সৌভাগ্যে হয়েছে আমার। এতো আগে-ভাগেই কোনো নির্বাচনে মেয়র পদে কে জিতবেন সেটি বলা যেত না। চরমপ্রতিদ্বন্দি¦তা করেই মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এর আগের মেয়ররা। তবে এবার মনে হচ্ছে, নির্বাচন এক তরফা হবে। বর্তমান মেয়রের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি আমরা এখন পর্যন্ত কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। মাঝে যে কয়দিন সময়, তাতে নতুন করে শক্ত প্রার্থী মাঠে নামলেও তাঁর পক্ষেও পরিস্থিতি সামলে উঠা কঠিন হয়ে পড়বে।’
এদিকে, চাপমুক্ত থেকেও মেয়রপ্রার্থী লিটন প্রতিদিনই নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ভোটের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল সোমবারও তিনি সকালে দলিল লেখক এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সঙ্গে ঘরোয়া মতবিনিময় করেন। এভাবে প্রতিদিনই কোনো না কোনো কর্মসূচির মধ্যে ঘোরায়াভাবে ভোটের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সেদিক থেকেও পিছিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঘোষণা দেওয়া অপর দুই প্রার্থী। রা/অ