সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৪২ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোরে ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম, ধীরগতি ও সাটারিংয়ে লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনমনে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁশ ব্যবহার করায় ব্রীজের স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয়রা ঠিকাদার বিএনপি মতাদর্শী সেকেন্দার আলী ও জাকির হোসেন জুয়েল শেখের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অহেলার অভিযোগ তুলে বলেন, এখানে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে নির্মাণ কাজে অনিয়মের কারণে ব্রীজের একদিকে দেবে যায়। ওই ব্রীজ অপসারণ করে সেখানে নতুন ব্রীজ নির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছে। কিন্তু এবারো ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম ও সিডিউল মোতাবেক কোনো কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নাই। ফলে এবারো তারা এই ব্রীজ দেবে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তারা বলেন, সরেজমিন তদন্ত করলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মালারমোড়-চন্দনকোঠা রাস্তার চন্দনকৌঠা বিলে ব্রীজ নির্মাণের টেন্ডার আহবান করা। প্রায় ৫০ ফিট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফিট প্রস্ত ব্রীজ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭২ লাখ টাকা। কার্যাদেশ পায় মেসার্স সেকেন্দার কন্ট্রাকশন।
আগামি ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় ব্রীজের নির্মাণে অনিয়ম ও কাজের ধীরগতিতে দুই ইউপির প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।এছাড়াও ব্রীজের সাটারিংয়ে লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ব্রীজের স্থায়িত্ব নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকেরা কৃষি উপকরণ ও মাঠের ধান কেটে নিয়ে যেতে পারেনি।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক (এসও) কর্মকর্তা বলেন, এখানে ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রীজ নির্মাণ করা সেটি দৃষ্টিনন্দন ব্রীজ হবার কথা। তবে, যেভাবে ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হবার কথা নয়। আবার সাটারিংয়ে লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার ব্রীজের স্থায়িত্ব নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার সেকেন্দার আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুরাতন ঝুকিপূর্ন ব্রীজ অপসারণে বরাদ্দ ২৫ হাজার টাকা তবে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। এছাড়াও ডাইবেশনের কোনো বরাদ্দ নাই, ডাইবেশন করতে আরো দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, ব্রীজ নির্মাণে তার লোকসান হবে, তবে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যই কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, ব্রীজের নির্মাণকাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নাই। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে ধীরগতিতে কাজ চলছে। ঠিকাদারের যদি লোকসান হয় তাহলে তিনি কেনো দরপত্রে অংশ নিয়েছেন, আসলে এসব অযৌক্তিক কথা কাজে অনিয়ম করার জন্য ঠিকাদারের এসব তালবাহানা ছাড়া কিছুই না। রা/অ