রবিবর, ১০ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৩০ am
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মানুষকে নাজেহাল করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তিনি বলেছেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালাকানুনের বিরুদ্ধে বিরোধিতা আগেও করেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও তাতে হয়রানি করা বন্ধ করতে হবে।’
আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে জেড আই খান পান্না এসব কথা বলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানি বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। আয়োজকেরা অভিযোগ করেন, মানববন্ধনের আগেই তাঁদের মাইক ও ব্যানার কেড়ে নেওয়া হয়। পরে মাইক ছাড়াই তাঁরা বক্তব্য দেন।
জেড আই খান পান্না বলেন, ‘সংবাদে ভুল আসতে পারে, বক্তব্য ভুল হতে পারে, তাই বলে সাংবাদিককে জেলে ঢুকিয়ে দেবেন। এটা সভ্য দেশে হতে পারে না। এটি বর্বরতম কোনো দেশ না। লেখার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহী, দেশদ্রোহী বলবেন, এটি ঠিক না।’
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, ‘২০০৪ সালে র্যাব গঠনের সময় সেটির বিরোধিতা করেছিলাম। র্যাব যারা করেছিল, পরে তারাও সেটির বিরোধিতা করেছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মানুষকে নাজেহাল করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিক গ্রেপ্তারসহ নানা অনাচার দেখতে পাচ্ছি, এগুলো মানতে পারি না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও তাতে কাউকে হয়রানি করা বন্ধ করতে হবে।’
জেড আই খান পান্না বলেন, ‘প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের ঘটনা সবাই জানেন। রাত ৩-৪টায় গ্রেপ্তার করবে কেন? ৩৮ ঘণ্টা পর, কত নাটকীয়তা। অ্যাবসোলিউটলি অ্যাবডাকশন (পুরোপুরি অপহরণ)। ডিবি না সিআইডি নাকি পুলিশ—সাদাপোশাকে গেলে কীভাবে বুঝব। রাতের আঁধারে সাদাপোশাকে তুলে নিয়ে আসা বন্ধ করেন। এই বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি।’
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা নিয়ে আপিল বিভাগের রায় বহাল আছে জানিয়ে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘রায় অনুযায়ী গ্রেপ্তার করার তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে জানাতে হবে।
ওনারা তা তো করেন নাই। আপিল বিভাগের বিচারপতিদের কাছে জানতে চাই, এতে কি আদালত অবমাননা হয় না। পুলিশ বলে কি আদালত অবমাননার হাত থেকে রেহাই পাবেন? সুয়োমোটো রুল করেন। পুলিশ অফিসারদের ডেকে জিজ্ঞেস করেন।’
জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যারা ব্যানার ছিনতাই করেছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষে না, মানবাধিকারের পক্ষে না। তারা যে রাজনৈতিক দলেরই হোক, তাদের প্রতি ঘৃণা। সুপ্রিম কোর্টের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কক্ষের সামনে মাইক ছিনতাই হবে, এটি চিন্তাও করতে পারি না। সারা দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছে। আমাদের নিয়ে কাশিমপুর, কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢুকিয়ে দেন। একদিন এমন অবস্থা আসবে আমরা তাদের জন্যও দাঁড়াব, সেদিন বেশি দূরে নয়। তাদের আমাদের কাছে আসতে হবে। ওকালতনামা নিয়ে আসতে হবে।’ সূত্র : প্রথম আলো