বৃহস্পতিবর, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৪৭ am
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের আপত্তিকর ভিডিও কেলেঙ্কারির ঘটনায় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
দলীয় প্রধান বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে ডাবলু সরকারকে পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন করা হয়।
বুধবার (২৯ মার্চ) আওয়ামী লীগ সভাপতি কার্যালয়ে চিঠিটি গ্রহণ করা হয়।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরসহ নগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন চিঠিটি পাঠান।
চিঠিতে বলা হয়, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের একটি যৌন আবেদনময়ী একটি নগ্ন ভিডিও গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধমে ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীসহ আশে পাশের জেলা এবং স্থানীয়-জাতীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি মূখ্য আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
ডাবলু সরকারের এহেন নৈতিক স্খলন জনিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন তাকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ সকল কর্মকাণ্ড থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ডাবলু সরকারের এহেন কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ধ্বংস করছে। যা আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ইতিমধ্যে দলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ডাবলু সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজাকার আব্দুস সাত্তার টিপুর প্রধান সহযোগী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজাকার আব্দুর রশিদ সরকারের পুত্র বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে ডাবলু সরকারকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ সাধারণ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করতে দলীয় প্রধানের মর্জি কামনা করা হয়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সাবেক এমপি বেগম আখতার জাহান চিঠি বিবেচনার সুপারিশ করেছেন।
এছাড়াও চিঠির অনুলিপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এস এম কামাল হোসেন ও দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াকেও পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের নারীর সঙ্গে ফোনে যৌন সম্পর্ক ফাঁস’ শিরোনাম একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
যাতে তাকে নগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়।
এরপরই ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন আওয়ামী লীগ নেতা ডাবলু।
মামলায় তিনি রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে এডিটিংয়ের করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে সম্মানহানির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন।
পরে গত ২ মার্চ সকালে একই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ‘সচেতন রাজশাহীবাসীর’ ব্যানারে সাহেব বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তবে সেদিন মানববন্ধন শুরু হওয়ার পরপরই ডাবলুর লোকজন উপস্থিত হয়ে মানববন্ধনের বাধা দিতে থাকে ও ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়।
এক পর্যায়ে মানববন্ধন আয়োজকদের সাথে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে তাদের। উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ও মানববন্ধন সম্পন্ন হয়।
পরবর্তীতে ৪ মার্চ ও ৫ মার্চ একই দাবিতে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট ও কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সবশেষ গত সোমবার (২৭ মার্চ) রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের ব্যানারে নগরীর লক্ষীপুর মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ডাবলু সরকারকে নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত রাজনীতির দুষ্টক্ষত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। রা/অ