মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চোলায়মদ উদ্ধারের স্বাক্ষী হতে অপরগতা প্রকাশ করায় এক এইসএসসি পরীক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর পিতা বিনা দোষে ছেলে মারধরের ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে এসআই রবিউলের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই পরীক্ষার্থীর নাম মেহেদি হাসান (১৭) তিনি পৌর এলাকার মাহালিপাড়া মহল্লার জিয়াউর রহমানের পুত্র। তিনি চলতি বছর মুন্ডুমালা ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ হতে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবেন।
লিখিত অভিযোগ ও মেহেদির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সাড়ে তিনটার সময় নিজ বাড়ি হতে রাস্তা দিয়ে হেটে মুন্ডুমালা বাজারে আসছিলেন মেহেদি হাসান (১৭)। এমন সময় মাহালিপাড়া নামক স্থানে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রবিউল ইসলাম ও এএসআই সুলতান এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদি হাসানের পথ আটকিয়ে তাকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনি সাদা কাগজে কেন স্বাকর করবেন তা জানতে চান। এ সময় এসআই রবিউল বলেন, এখানে চোলাইমদ উদ্ধার করা হয়েছে। তোকে স্বাক্ষী হতে হবে। এমন সময় মেহেদি বলেন, তিনি একজন ছাত্র তা ছাড়া তিনি কোন মদ উদ্ধার করতেও দেখেনি তাই তিনি স্বাক্ষী হতে অপরগতা প্রকাশ করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই রবিউল তার কলার ধরে প্রথমে গালে দুই তিনটা থাপ্পর লাগান। এতে ক্ষান্ত না হয়ে এসআই পাশে দোকানের কাছে পড়ে থাকা একটি মোটা পাইপ এনে তাকে বেদম পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী রোজা অবস্থায় থাকায় তিনি সেখানে গ্যান শূন্য হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তার পরিবারের সদস্যগণ তাকে উদ্ধার করে মুন্ডুমালা স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, সোমবার দুপুরে এসআই রবিউলসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য মাহালিপাড়ায় অভিযান চালাই। এ অভিযানে এক আদিবাসি বৃদ্ধ মহিলার ঘর হতে কয়েক লিটার চোলাইমদ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অন্য একবাড়িতে অভিযান চালাই, সেখানে কোন মদ উদ্ধার করতে পারেনি। তবুও সে বাড়ির অন্য মহিলাকে আটক করে চালান দেয়ার ভয় দেখায় এবং ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই রবিউল। বিষয়গুলো নিজচোখে দেখেছেন স্থানীয়রা। তাই মিথ্যে স্বাক্ষী হতে চাইনা কেউ।
মেহেদির পিতা জিয়াউর রহমান বলেন, আমার ছেলে একজন শিক্ষার্থী। তাকে বিনা দোষে এসআই রবিউল যেভাবে পিটিয়ে জখম করেছে তা এভাবে গরুকে মারে না কেউ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল হয়ে দাগ পরে গেছে। আমি ঘটনার পর তার ছেলের চিকিৎসা সেরে স্থানীয় গণ্যমান্য ও পৌরসভার মেয়রকে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান দেখায়েছি। এছাড়াও মঙ্গলবার বিকেলে ছেলেকে মারধরের প্রতিকার চেয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।
এবিষয়ে মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী মেহেদি হাসানকে অন্যায় ভাবে পিটিয়েছে এসআই রবিউল শুধু তাই নয়। পৌর এলাকাসহ আশপাশে এমন আরো ঘটনা রয়েছে এসআই রবিউল এর বিরুদ্ধে। তিনি সাধারণ মানুষের সাথে খারাচ আচরণ করেন, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেওয়াসহ এমন অনেক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তিনি এলাকায় অনেকটা বেপরোয়া হয়ে চলাফেরা করেন।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই রবিউল ইসলাম বলেন, মেহেদি হাসানকে প্রথমে ভালভাবে বোঝানো হয়েছে। সে চোলাইমদ উদ্ধার করতে দেখে কিন্তু কেন স্বাক্ষী দিবে না। তাই বড় ভাই হিসাবে সাশন করে দুইটি থাপ্পর মেরেছি মাত্র।
এবিষয়ে জানতে মঙ্গলবার রাত ৮টার সময় তানোর থানা অফিসাস ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়ার মোবাইলে একাধিবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। তা/অ