রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:২৩ am
ডেস্ক রির্পোট :
নওগাঁর নিয়ামতপুরের রামগাঁ-সাহাপুর (আরএস) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার (১৫ মার্চ) নওগাঁ জেলা প্রশাসক বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রামগাঁ-সাহাপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার এবং বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পরস্পরের যোগসাজশে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অধিক অর্থ আদায়, রশিদ ছাড়া অর্থ আদায়, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন এবং নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই বললেই চলে।
রামগাঁ এলাকার সিদ্দিক হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, সভাপতির বাড়িতে বোর্ড বসিয়ে গোপনে নিয়োগ প্রদান করা হয়। অফিস সহায়ক, লাইব্রেরিয়ান ও নৈশ প্রহরীসহ বিভিন্ন পদে ৪০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের আনুমানিক ১ লাখ টাকা মূল্যের গাছ বিক্রি সে টাকাও আত্মসাৎ করেন। এসব টাকা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির পকেটে। ৫ বছর আগে প্রধান শিক্ষক নিয়োগেও ১৩ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপুল রানা বলেন, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। করোনার কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় সরকার ফরম পূরণের টাকা ফেরত দিয়েছে। অথচ প্রধান শিক্ষক আমাদের কোনো টাকা ফেরত দেয়নি। ফরম পূরণের জন্য প্রধান শিক্ষক বোর্ডের নির্ধারিত ফি থেকেও ২ হাজার ৫শ টাকা বেশি নিয়েছে।
উজ্জ্বল কুমার নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, পিয়ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে প্রধান শিক্ষক ৪ লাখ টাকা নিয়েছেন। অথচ আজ পর্যন্ত আমার চাকরি হয়নি টাকাও ফেরত দেননি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য রতন মণ্ডল বলেন, বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অথচ কোনো কাজ না করেই এসব টাকা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর যৌথ নামে বিদ্যালয়ের হিসাব খোলা হয়। তখন আহ্বায়ক কমিটি থাকার কারণে টাকা উত্তোলন করা যায়নি। এ বছরের জানুয়ারিতে নতুন কমিটি হয়েছে। কয়েকদিন আগে থেকে টাকা উত্তোলন করে ফেরত প্রদান করা হচ্ছে।
গাছ বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, মাঠে এত বড় গাছ ছিলো না। একটি ছোট গাছ ছিল তা ঝড়ে পড়ে গিয়েছিলো। সেটা এলাকাবাসী নিয়ে চলে গেছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মামুনুর রশীদ বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। স্কুলেই বোর্ড বসিয়ে মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। নিয়োগে অর্থের কোনো লেনদেন হয়নি। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কিছু লোক এমন অভিযোগ করেছেন।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি। নিয়োগ বোর্ড সম্পর্কে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিদ্যালয়ের সবার সামনেই নিয়োগ বোর্ড বসে বিধি অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। সূত্র : ইত্তেফাক