বুধবা, ১১ িসেম্র ২০২৪, সময় : ০৬:০৮ am

সংবাদ শিরোনাম ::
হাসিনার তৈরী আইন দিয়েই তার বিচার হবে : নগর জামায়াত সেক্রেটারি ইমাজ নগরীতে ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী সেই ‘ডন’ গ্রেপ্তার আড়ালে পাচার, নারী নিরাপত্তায় মনোযোগ দরকার : উদিসা ইসলাম সীমান্ত-সংলগ্ন মিয়ানমারের ২৭০ কিমি এলাকা দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে টস হেরেছে বাংলাদেশ, একাদশে এক পরিবর্তন রাজশাহীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ১৩ এবারের বিজয় দিবসের কনসার্টে মূল চমক বেবী নাজনীন মোহনপুরে ভুল সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে প্যানেল চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন ভারতীয় বেডশিট ছুড়ে ফেললেন রিজভী, আগুন দিলেন নেতাকর্মীরা মোহনপুরে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে লীজকৃত পুকুরে মাছ ধরার অভিযোগ নগরীতে ছাত্রলীগের নেতাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সিরাজগঞ্জ কারাগারে আ.লীগ নেতার মৃত্যু ধূসর ক্লিন সিটি রাজশাহী এখন ধূলই ক্ষতিকর বস্তুকণা উদ্বেগজনক নৌযানসহ ৭৯ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড নাচোলে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে হাইব্রিড ধানবীজ বিতরণ উদ্বোধন রাবিতে পোষ্য কোটায় ভর্তি, প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখালেন শিক্ষার্থীরা বৃদ্ধের সাথে যুবলীগ নেত্রীর বিয়ে, ফুলশয্যার আগেই টাকা নিয়ে উধাও তানোরে দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস উদযাপিত দুর্গাপুরে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত নাচোলে আন্তর্জাতিক দূর্ণীতি বিরোধী দিবস উদযাপিত
দুদকের নতুন নেতৃত্ব : চ্যালেঞ্জ অনেক

দুদকের নতুন নেতৃত্ব : চ্যালেঞ্জ অনেক

নেতৃত্ব বদলে গেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের। নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার হিসেবে যোগ দিয়েছেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক। তারা দুদকের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ও কমিশনার আ ক ম আমিনল ইসলামের স্থলে এলেন। বিদায়ী চেয়ারম্যান তার সাফল্য বলতে গিয়ে বলেছেন, তার সময়ে অনেক রাঘব বোয়ালকে দুদকের বারান্দায় হাঁটতে হয়েছে। আর নতুন চেয়ারম্যান বলেছেন, আমাদের চেষ্টা থাকবে জনগণের আকাঙ্ক্ষার দূরত্ব যেন কমে আসে”।

সব ধরনের দুর্নীতি দূর করা যাবে এবং সেটা করতে সক্ষম দুদক– এটা ভাবলে ভুল করা হবে। তবে দুদকের নতুন চেয়ারম্যান তথা কমিশনের নতুন নেতৃত্বকে কিছু বিষয় এখনই ঠিক করে নিতে হবে যে, কোন পথে চলবেন তারা। যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্য তথ্য এক গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। নতুন যারা এলেন তারা এই তথ্য নিয়ে ভাবতে পারেন।

 দুর্নীতি সমাজ ও প্রশাসনের অবক্ষয়, মানবাধিকার ও সুশাসনকে খাটো করা, সামাজিক অসমতা তৈরি, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের স্বপ্নভঙ্গের জন্য দায়ী। সর্বোপরি একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতি ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলতে পারে না। 

সরকারি কর্মী কতজন গ্রেফতার হয়েছেন, কতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হয়েছে, কতজনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তার একটা তালিকা তৈরি করতে পারেন। যত অভিযোগ আসে সব নিশ্চয়ই তদন্ত পর্যন্ত গড়ায় না। কত অভিযোগের তদন্ত হয়েছে, আর তার মধ্যে কত শতাংশের ক্ষেত্রে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, সেটা জেনে নিতে পারেন। তদন্ত হওয়া ঘটনার কত শতাংশের ক্ষেত্রে দোষীর কাছ থেকে টাকা বা সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলেই মনে করি।

বিচারের আওতায় আসা মামলার কত শতাংশের ক্ষেত্রে দণ্ডাদেশ বলবৎ হয়েছে এবং বিচারাধীন বা জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে কত শতাংশের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যান ও সমীক্ষার মাধ্যমেই তারা উদ্যমী হয়ে নতুন উদ্যোগ নিতে পারেন। একটা বড় লক্ষ্যকে প্রথমেই সামনে এনেছেন নতুন চেযারম্যান। বলেছেন, দেশ থেকে অর্থ পাচার বন্ধ এবং চলে যাওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্ভবত, সবচেয়ে জটিল এবং দুরূহ কাজ হবে এটিই। আরেকটি কথা তিনি বলেছেন, আমাদের চেষ্টা থাকবে কোনো কোনো অনুসন্ধান বা তদন্তে যে দীর্ঘসূত্রিতা আছে, তা যতখানি সম্ভব তা কমিয়ে আনা। অনুসন্ধান বা তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা দুর্নীতিবাজদের সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে। এটি কিভাবে যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা যায়, সেটাই হবে প্রত্যাশিত বড় উদ্যোগ।

টাকা পাচার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করা, ক্যাসিনো কাণ্ড, উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করা, কেনাকাটায় পাঁচ টাকার পণ্য লাখ টাকায় কেনার যেসব নজির আছে সেগুলো ভাববেন নিশ্চয়ই তারা। কিন্তু সাধারণ মানুষ যে প্রতিনিয়ত ভুগছে তার সমাধান কি করা সম্ভব?

বড় আকারের দুর্নীতির তুলনায় জনসেবা স্তরে সংঘটিত দুর্নীতি আটকানো তুলনায় সহজ। সেখানে দুদকের নজরদারির বাইরে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগটাই বেশি কার্যকর। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে মানুষ সেবা নিতে গিয়ে যে পরিমাণ হয়রানির শিকার হয়, যে পরিমাণ অর্থ তারা ব্যয় করে তার দিকে রাষ্ট্রের চোখ পড়তে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের একচেটিয়া কর্তৃত্ব এবং যথেচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার মানুষকে সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত করছে। একচেটিয়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ হচ্ছে রাষ্ট্র ও মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে, কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে।

একজন ব্যবসায়ী আমাকে বলেছেন, ‘দেশে কি সৎ কর্মকর্তা আকাল পড়েছে যে, চট্টগ্রাম বন্দরে ও সেখানকার কাস্টম্স কর্মকর্তা ও কর্মীদের অসততা ও অদক্ষতায় মাসের পর মাস পণ্য খালাস করতে পারছি না, ড্যামারেজ দিতে হচ্ছে আর এতে পণ্যের দাম বেড়ে মাশুল দিচ্ছি আমরা ও জনগণ।’

সমস্যাটা এখানেই। আমরা সৎ কর্মী খুঁজছি, কিন্তু সিস্টেমতো কাউকে সৎ থাকতে দেয় না। তাই সিস্টেসের ভেতরেই দুর্নীতি প্রতিরোধক ব্যবস্থা আনতে হবে। কোন সেবা পরিষেবা পেতে সরকারি কর্মীর মুখোমুখি হওয়া মানেই তাকে সন্তুষ্ট করার উপায় সেই সরকারি লোকটি বের করে নিবেন। মানুষকে শারীরিকভাবে উপস্থিত না হয়ে অটোমেশন সিস্টেমের সাহায্য নিয়ে যদি কাজ করা যায়. তাহলে শারীরিক উপস্থিতি যেমন কমবে, দুর্নীতিও কমবে। দুঃখজনক হলো ডিজিটাল বাংলাদেশে এই জায়গায় অগ্রগতি কম। অনেক কাজ হয়েছে, কিন্তু আসলে আরও অনেক দূর যাওয়া বাকি।

পুরো প্রক্রিয়াটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতিমুক্ত একটা সমাজ গড়ে তোলার কথা যারা বলেন তারা বাস্তবতায় নেই। সেই সমাজ আর আসবে না এবং বলতে গেলে সেই সমাজ ব্যবস্থা কখনও এখানে ছিলই না। দুর্নীতি সমাজ ও প্রশাসনের অবক্ষয়, মানবাধিকার ও সুশাসনকে খাটো করা, সামাজিক অসমতা তৈরি, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের স্বপ্নভঙ্গের জন্য দায়ী। সর্বোপরি একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতি ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলতে পারে না।

ঠিক এই বাস্তবতায় জনগণ সে পর্যায়গুলোতে বেশি সেবা নিতে চায়, সেখানকার দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধ করতে হলে সেবা সরবরাহের ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণ আনা জরুরি। নানা ধরনের রক্ষাকবচের বন্দোবস্ত করতে পারলে অন্তত সাধারণ মানুষ বুঝতো যে, একটা দুর্নীতি বিরোধী ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে সরকার। সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা , প্রধান সম্পাদক, জিটিভি।

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.