মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৪০ am
নিজস্ব প্রতিবেদক :
টানা এক সপ্তাহ থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহীর রেশম কারখানার শ্রমিকরা। ছয় মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা হলে তারা কাজে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। ফলে অচল হয়ে পড়েছে কারখানাটি।
সোমবার দুপুরে রাজশাহী রেশম কারখানার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করে তারা কর্মবিরতি পালন করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, সপ্তাহব্যাপী কর্মবিরতি পালন করলেও রেশম বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে আজ পর্যন্ত যোগাযোগ করেননি। শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের বিষয়েও তারা কথা বলেননি।
রাজশাহী রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়ের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক (ডিডি) ও কারখানা ইনচার্জ কাজী মাসুদ রেজা বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। শিগগিরই বেতন দেওয়া সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই কমকর্তা।
কারখানা শ্রমিক শামসুল আলম জানান, সব শ্রমিক মিলে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ গজ কাপড় তৈরি করেন। তারা এই সাতদিন কাজ করলে আরও ৭৭০ গজ কাপড় তৈরি হতো। কিন্তু টানা কর্মবিরতির কারণে এই পরিমাণ রেশম কাপড় তৈরি হয়নি। এই কাপড় ৭৫০ টাকা গজ হিসেবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে রাজশাহীর শো-রুমে বিক্রি হয়।
কারখানার শ্রমিক মো. লালন বলেন, এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন রাজশাহী রেশম কারখানার শ্রমিকরা। সেই দিন থেকে রেশম কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এই কদিন কাজ বন্ধ আছে।
তিনি বলেন, কর্মসূচি চলাকালে প্রথম দিন খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের হাজিরা তুলছে না কর্তৃপক্ষ। তারপরও কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। যতদিন বকেয়া বেতন না পরিশোধ করবে ততদিন কর্মবিরতি চলবে। একইভাবে রেশম বোর্ড, বোর্ডের গবেষণা ও কারখানার শ্রমিকদের বেতন বন্ধ আছে। তাই তারাও আলাদাভাবে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন বলে জানান লালন।
কারখানার শ্রমিক মাইনুল ইসলাম জানান, রাজশাহী রেশম কারখানায় অর্ধশত শ্রমিক দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেন। তারা দৈনিক ৩০০ টাকা বেতন পেলেও গত ছয় মাস ধরে তাদের সেই বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্থ সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি আরও জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১৬ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই চালু করা হয় রাজশাহী রেশম কারখানা। অর্ধশত শ্রমিক নিয়ে কারখানাটি চালু করা হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে রেশম শিল্পের সুদিন ফেরার একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, কারখানা চালু হওয়ার পর ভালই চলছিল। কিন্তু হটাৎ করে গত ছয় মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে লোকসানের কারণ দেখিয়ে ২০০২ সালে তৎকালীন সরকার এই রেশম কারখানা বন্ধ করে দেয়। তখন এই কারখানার ঋণের বোঝা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বন্ধ করে দেওয়ার সময় এই কারখানায় ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। রা/অ