রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৩৬ am
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় ইয়াবা সেবনের অপবাদ দিয়ে এক শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীকে শিক্ষক নুরুল পিটিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আটকিয়ে রাখেন। খবর পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবা ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও মারপিট করে আটকে রাখা হয়।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১২ টার দিকে স্কুল চলাকালীন সময় স্কুলের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। পরে মোহনপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ওই শিক্ষার্থী ও তার অবরুদ্ধ বাবাকে উদ্ধার করে তাদের দুজনকেই চিকিৎসার জন্য মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ভর্তি করা হয়। ওই শিক্ষার্থীর নাম বখতিয়ার গালিব ইয়াসির। সে ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী বখতিয়ার গালিব ইয়াসির চিকিৎসা শেষে স্কুলে যায়। ওই শিক্ষার্থী স্কুলে আসার পর শিক্ষক নুরুল ইসলাম প্রথমে চড় চাপ্পর মারার পর ইয়াবা সেবনের অপবাদ দিয়ে কৌশলে কিছু শিক্ষার্থীদের দিয়ে মারপিট করান। শিক্ষার্থীদের সাথে আবারও শিক্ষক বিদ্যালয়েরর ভেতরের এলোপাতাড়িভাবে মারধর করেন। পরে আহত শিক্ষার্থী ফোনে তার বাবাকে বিষয়টি জানান। তখন বাবা সন্তানকে হাসপাতালে নিতে চাইলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ও তার অনুগত ছাত্ররা মিলে আবারো তাদের পিটিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আটকে রাখা হয়। তবে, স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না প্রধান শিক্ষক সুলতানা শাহীন।
এবিষয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীর পিতা একই উপজেলার মহব্বতপুর খানপুর ডিগ্রি কলেজের প্রদর্শক সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ ছিল। আমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারপরও মাদক সেবনের অভিযোগ তুলে আমার ছেলেকে শিক্ষক ও ছাত্ররা মিলে মারধর করেছেন। আমি এর প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকেও মারধর করতে ছাড়েনি।
পরীক্ষার্থী গালিব জানান, আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় কারেন বিদ্যালয়ে আসতে পারিনি। নুরুল স্যারের কাছে পদার্থ বিজ্ঞান পাইভেট না পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি কৌশলে এ হামলা চালিয়েছেন।
মোহনপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহা. সেলিম বাদশাহ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষার্থী ও তার বাবাকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করে তাদের মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেছি। ওই শিক্ষার্থীকে ইসিজি করে তার শারিরীক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শিক্ষক ওই ছাত্রকে পিটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযোগ পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা শাহীনকে একাধিকবার তার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরাও জানান, বিভিন্ন বিষয় জানতে প্রধান শিক্ষককে ফোন করা হলে তিনি কোন সময়ই ফোন রিসিভ করেন না।
উল্লেখ্য, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করার পরেও ফেল করানো শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ভয়ভীতি দেখানোসহ নানাবিধ অনিয়মের একাধিক অভিযোগ রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। রা/অ