বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫৫ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ বাগমারায় সাবেক এমপি এনামুল হক গ্রেফতার বাগমারায় মোমবাতির আগুনে ব্যবসায়ীর দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে ছাঁই মোহনপুরে চুরির মালামাল উদ্ধার, ১২ ঘন্টা পর চোর আটক মোহনপুরে ঈদে মিলাদুননবী (সা:) পালিত রাজশাহীতে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত
ভাষা আন্দোলনে প্রথম রক্ত ঝরেছিলো রাজশাহীতে

ভাষা আন্দোলনে প্রথম রক্ত ঝরেছিলো রাজশাহীতে

এম এম মামুন :
“মাতৃভাষা বাংলা চাই” স্নোগানে ১৯৪৮ সাল থেকেই আন্দোলনে মুখর ছিল রাজশাহী। শুরু তাই নয়, মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে প্রথম রক্ত ঝরেছিলো রাজশাহীতেই। রাজশাহীতে দেশের প্রথম শহীদ মিনার স্মৃতিস্তম্ভ হয়েছিল।

ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীতে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন কয়েকজন। আর তাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি ছিলেন রাজশাহী কলেজের ছাত্র। ভাষা আন্দোলনের সে দিনগুলোর কথা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীর সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা ১৯৪৮ সাল থেকেই সক্রিয় ছিল। ওই সময় থেকেই যেকোন আন্দোলনের সূতিকাগার ছিল রাজশাহী কলেজ। আমরা ভাষা আন্দোলনে ঢাকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে তাল রেখে রাজশাহীতে আন্দোলন-সংগ্রাম কর্মসূচি পালন করতাম।

১৯৪৮ সালে রাজশাহী নগরীর ফায়ার ব্রিগেড মোড়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে তৎকালীন মুসলিম লীগের ক্যাডার বাহিনী ও পুলিশ হামলা করে। এতে একজন শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে আহত হন। এরপর থেকেই রাজশাহীর ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত হন এবং আন্দোলন দুর্বার গতিলাভ করে। মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি বলেন, ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় ভাষার দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ২১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে আমরা দিনভর ঢাকার খবর জানার জন্য গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। কারণ, রাজশাহীর ছাত্রদের মনে গভীর আশঙ্কা ছিল ঢাকায় বড় কিছু ঘটতে পারে। সন্ধ্যার দিকে রাজশাহীতে খবর এলো ঢাকায় ছাত্রদের ওপর গুলি হয়েছে। অনেক ছাত্র আহত ও নিহত হয়েছেন। ঢাকায় ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর খবর পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী শহরে বিষাদের ছায়া নেমে আসে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। তখন সব আন্দোলনেই ছাত্রদের জমায়েত হওয়ার স্থান ছিল রাজশাহী কলেজ। সন্ধ্যার কিছুটা পরেই কলেজের নিউ হোস্টেলে একে একে রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা সমবেত হতে শুরু করে। এক পর্যায়ে কয়েকশ’ ছাত্র জমায়েত হলেন হোস্টেল প্রাঙ্গণে। সবার চোখে-মুখে ভীষণ উৎকণ্ঠা, কিন্তু দৃঢ় প্রত্যয়ে সবার কণ্ঠেই উচ্চারিত হচ্ছে, ‘ছাত্র হত্যার বিচার চাই, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।’ তৎকালীন রাজশাহী মেডিক্যাল স্কুলের (বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) সিনিয়র ছাত্র এসএম গাফ্ফারের সভাপতিত্বে শুরু হলো ছাত্রদের প্রতিবাদ সভা। সভায় দুটি প্রস্তাব গৃহীত হলো।

রাজশাহীতে দুর্বার গতিতে ভাষা আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গঠিত হলো ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও শহীদ ছাত্রদের স্মরণে শহীদ মিনার নির্মাণ কমিটি। ইট ও কাদামাটি দিয়ে যেভাবেই হোক, রাতেই শহীদদের স্মরণে একটি শহীদ মিনার তৈরি করতে হবে বলে সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হলেন মেডিকেল স্কুলের ছাত্র এসএম গাফ্ফার এবং যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন রাজশাহী কলেজের সিনিয়র ছাত্র গোলাম আরিফ টিপু (বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর) ও নাটোরের হাবিবুর রহমান। এরপর ওই রাতেই ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নির্মাণ করা হলো শহীদ মিনার। সেটি রাত জেগে পাহারাও দেয়া হলো। কিন্তু সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম লীগের কর্মীরা ও পুলিশ এসে শহীদ মিনারটি ভেঙে দিল। মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণ বা তার অবয়ব সম্পর্কে তখন আমাদের কোন ধারণা ছিল না। এ অবস্থায় সারারাত ধরে ইট ও কাদা-মাটি দিয়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করলাম। শহীদদের স্মরণে স্তম্ভের গায়ে লিখে দেয়া হলো ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’। এছাড়া স্মৃতিস্তম্ভটিতে আরও লেখা হলো কবিগুরুর বিখ্যাত কবিতার একটি চরণ- ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’

প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও শহীদ মিনারটির ছবি তোলা হলো একটি পুরনো ভাঙাচোরা ক্যামেরা দিয়ে, যা সংরক্ষিত আছে সবার কাছে । রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.