শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৪১ pm
মাতৃভাষা বাংলার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে ১৪৪ ধারা ভাঙার কর্মসূচিতে ছাত্রীরাও অংশ নিয়েছিলেন। পুলিশের লাঠিপেটায় ও কাঁদানে গ্যাসে আহত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে রওশন আরা বাচ্চু, সারা তৈফুর, বোরখা শামসুন, সুফিয়া ইব্রাহীম, সুরাইয়া ডলি ও সুরাইয়া হাকিম ছিলেন অন্যতম। সেদিনের আহতদের চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রীরা। আহতদের চিকিৎসার সাহায্যের জন্য বাসাবাড়িতে থাকা গৃহবধূরা ছাত্রীদের হাতে চাঁদা তুলে দেন। আন্দোলনের খরচ চালানোর জন্য গৃহবধূ কর্তৃক শহীদ মিনারের পাদদেশে অলংকার খুলে দেয়ারও তথ্য পাওয়া যায়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, জব্বাররা শহীদ হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে তৎকালীন ঢাকা জেলার মহকুমা নারায়ণগঞ্জ। বাংলা ভাষার দাবিতে আন্দোলন করায় নারায়ণগঞ্জের মর্গান বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম গ্রেপ্তার হয়ে জেল-নির্যাতন ভোগ করেন। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার হন মমতাজ বেগমের দুই ছাত্রী আয়েশা আক্তার বেলু ও ফিরোজা।
নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন মমতাজ বেগম। আন্দোলন করার দায়ে মমতাজ বেগমের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া তারই ছাত্রী আয়েশা আক্তার বেলুর সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, বায়ান্নর ২২ ফেব্রুয়ারি মমতজা বেগম স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সংগঠিত করেন। সেদিন ঢাকায় ছাত্র হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় তোলারাম কলেজে বিরাট জনসভা হয়। সভায় সাড়া জাগানো বক্তৃতা দেন মমতাজ বেগম।
স্মৃতিচারণায় আয়েশা আক্তার জানান, ২২ ফেব্রুয়ারি জনসভায় মমতাজ বেগম বলেন, ‘বাংলা ভাষা আমাদের মায়ের ভাষা। এটা ওরা বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। আমাদের মুখের ভাষা যদি উর্দু হয়, বাঙালির সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাবে।’ তারই অনুপ্রেরণায় ছাত্রীরা রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে নামেন। ট্রাকে চড়ে মিছিল শুরু করেন। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, নুরুল আমীনের কল্লা চাই’ স্লোগান দিতে দিতে শহর প্রদক্ষিণ করেন। একই ট্রাকে করে ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও স্লোগান দেন। তখনকার রক্ষণশীল সমাজে মেয়ে-ছেলে ট্রাকে করে একসঙ্গে মিছিল ও বিক্ষোভের ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। নারায়ণগঞ্জ শহরে একদম আলোড়ন পড়ে যায়।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকার ২৪ ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকায় পুলিশের গুলি ও হত্যার প্রতিবাদে ২৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। হরতালের কর্মসূচিতে মহকুমার ১৫ হাজার শ্রমিক অংশ নেন। ওই দিন বিকেলে শ্রমিকনেতা ফয়েজ আহম্মদের সভাপতিত্বে জনসভা হয়। এতে ২০ হাজার জনতা অংশ নেন। আন্দোলনকে আরও সুসংগঠিত করার জন্য স্থানীয় রাজনীতিক এবং শ্রমিকদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন মমতাজ বেগম। আদমজী জুট মিলের শ্রমিকদের সঙ্গেও কয়েক দফা বৈঠক করেন। শ্রমিকনেতাদের সহযোগিতায় তিনি তাদের বুঝাতে সক্ষম হন যে, এ আন্দোলন সফল না হলে শুধু ভাষা-ই নয়, বাঙালিদের অস্তিত্বও বিপন্ন হবে।
নেতৃত্বের গুণাবলির কারণে মমতাজ বেগম এতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, শুধু বাংলা ভাষার দাবির আন্দোলন করার অজুহাতে পুলিশের পক্ষে তাকে গ্রেপ্তার করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ এই অজুহাতে গ্রেপ্তার করলে শ্রমিক-অধ্যুষিত এবং অধিকারসচেতন নারায়ণগঞ্জ মহকুমার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এ জন্য হীন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয় পাকিস্তান প্রশাসন। স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ করার মিথ্যা অভিযোগ এনে স্কুলের গভর্নিং বোর্ড দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করানো হয়। আসল উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জে ভাষা আন্দোলনকে দুর্বল করা। এরপর নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্য খান সাহেব ওসমান আলীর বাসা থেকে মমতাজ বেগমকে ১৯৫২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই দিন ওসমান আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তারের খবর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে। ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে জনতা। মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অন্যদের সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণ ঘেরাও করেন স্কুলছাত্রীরাও। মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার ও নারায়ণগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের তীব্রতা অনুভব করা করা যায় তৎকালীন দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ১ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটির বক্তব্য ছিল এ রকম- “স্থানীয় পুলিশ নারায়ণগঞ্জের মর্গান বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষয়িত্রী মিসেস মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করে মহকুমা হাকিমের আদালতে হাজির করে। সংবাদ পেয়ে একদল ছাত্র ও নাগরিক আদালতে হাজির হয় এবং বিনা শর্তে শিক্ষয়িত্রীর মুক্তি দাবি করে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। মহকুমা হাকিম ইমতিয়াজী তখন বাইরে এসে ছাত্রদের বলেন, শিক্ষয়িত্রীকে স্কুলের তহবিল আত্মসাতের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সঙ্গে তার গ্রেপ্তারের কোনোরূপ সম্পর্ক নাই। কিন্তু জনতা তা বিশ্বাস না করে বলতে থাকে, মিসেস মমতাজ বেগম নারায়ণগঞ্জে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রধান কর্মী ছিলেন বলেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। সুতরাং তাকে বিনা শর্তে মুক্তি না দিলে তারা কোর্ট প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাবে না। পুলিশ তখন মৃদু লাঠিপেটা করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। বিকেলে পুলিশ মমতাজ বেগমকে নিয়ে ঢাকা রওনা হলে জনতা চাষাঢ়া স্টেশনের নিকটে তাদের গমনপথে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং পুলিশ পুনরায় লাঠিপেটা করে। ফলে উভয় পক্ষে প্রায় ৪৫ জন আহত হন।
বাংলা ভাষার দাবির প্রশ্নে আপসহীন মমতাজ বেগমের সঙ্গে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তার দুই কিশোরী ছাত্রীকেও। মমতাজ বেগমের দুই ছাত্রী জেলে যান স্বেচ্ছায়; তারা ইচ্ছা করলে অবশ্য গ্রেপ্তার এড়াতে পারতেন। উচ্চরক্তচাপের রোগী ছিলেন মমতজা বেগম। পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটা ও সংঘর্ষের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে মমতাজ বেগম একসময় অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে সেবা দেয়ার জন্য পুলিশের ট্রাকে ওঠেন দুই ছাত্রী।
আয়েশা আক্তার বেলু বলেন, ‘একপর্যায়ে মমতাজ আপাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে আমরা ধস্তাধস্তি শুরু করি। ওনার হাইপ্রেসার ছিল। টানাটানির মধ্যে উনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পুলিশ তখন বলল, মমতাজ বেগমকে দ্রুত ঢাকায় হাসপাতালে নিতে হবে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়- মমতাজ আপাকে সেবা করার জন্য দু-তিনজন মেয়েকে গাড়িতে তুলে দেয়ার জন্য। আমি আর ফিরোজা মমতাজ আপার সঙ্গে গাড়িতে উঠি। অন্যরা গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে এগোতে থাকেন।’
মমতাজ বেগমের সঙ্গে দুই ছাত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্য পাওয়া যায় ভারতের দি স্টেটম্যান পত্রিকার প্রতিবেদনে। দি স্টেটম্যান-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৩ মার্চ। মমতাজ বেগমসহ গ্রেপ্তার ছাত্রীদের রাখা হয় ঢাকা জেলের পাগলা গারদে। সেখানে আগে থেকেই গ্রেপ্তার ছিলেন নাচোলের রানী ইলা মিত্র। মমতাজ বেগমসহ গ্রেপ্তার ছাত্রীদের রাজবন্দির মর্যাদা দেয়ার জন্য জেলেই আন্দোলন শুরু করেন ইলা মিত্র। পরে জেল কর্তৃপক্ষ এই দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়।
কারাগারেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন মমতাজ বেগম। জেলে ছাত্রীদের সাধারণ হাজতিদের খাবার দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করেন মমতাজ বেগম। তিনি জেলারকে বলেন, ‘এই খাবার আমার মেয়েরা খাবে না। ওদের ভালো খাবার দেয়া হোক। আমার মেয়েদের ভালো বিছানা দাও।’ তারপর ছাত্রীদের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। মমতাজ বেগম তত দিনে কারাগারের সবচেয়ে আলোচিত কয়েদি।
জেলবন্দি নারীদের নিয়ে আরেক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় পুলিশ। ‘তোমরা স্বেচ্ছায় ওই আন্দোলনে অংশ নেওনি। তোমাদের জোর করে আনা হয়েছে’ এই বিবৃতি দিয়ে বন্ড সই করলে জেল থেকে মুক্তি দেয়ার কথা বলা হয়। মমতাজ বেগমসহ গ্রেপ্তারকৃতদের বন্ড সই দিতে চাপ দিতে শুরু করে প্রশাসন। বিবৃতি এবং বন্ড সই দিতে অস্বীকৃতি জানান মমতাজ বেগম এবং তার দুই ছাত্রী। তাই তাদের মুক্তি বিলম্বিত হয়। এক মাস পর মমতাজ বেগমের ছাত্রী আয়েশা আক্তার বেলু ও ফিরোজাকে আলাদা দিনে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু মুক্তি মেলেনি মমতজা বেগমের।
বন্ড সই ইস্যুতে ফাটল ধরে মমতাজ বেগমের দাম্পত্য জীবনে। তার স্বামী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নাফ ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। তিনি চেষ্টা করেছিলেন মমতাজ বেগম যেন সরকারের প্রস্তাব মেনে নেন। কিন্তু দেশপ্রেমিক মমতাজ বেগম তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। যার কারণে আব্দুল মান্নাফকেও চাকরি হারাতে হয়। মমতাজ বেগমের মেয়ে সাহানা বেগম খুকু স্মৃতিচারণায় লেখেন, ‘তাদের ছিল সুখের সংসার। মা জেলে গেলে বাবার ওপর সরকারিভাবে প্রচণ্ড চাপ দেয়া হয়, মা যেন মুচলেকা দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন এবং আর কোনো সময় আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করেন। … বাবা মাকে বন্ড সই করে জেল থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব করলে মা তা অস্বীকার করেন। সেই থেকেই আমার মায়ের সঙ্গে বাবার দূরত্ব ও দ্বন্দ্ব শুরু হয়। বাবার সরকারি চাকরিরও শেষ রক্ষা হয়নি। মায়ের জেলজীবন এবং আন্দোলনের কারণে তাকেও চাকরি হারাতে হয়। পরে আইন পেশা শুরু করেন।’
মমতাজ বেগম ১৯৫৩ সালের মে মাসে জেল থেকে মুক্তি পান। মুক্তির পর সামাজিক জীবন থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হয়। মর্গান স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার চাকরিটাও হারান। স্বামী তখন ফরিদপুরে চলে যান ওকালতি করতে। নারায়ণগঞ্জে একাই বেশ কিছুদিন থাকেন মমতাজ বেগম। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা নির্বাচনে মমতাজ বেগমকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেন।
সাহানা বেগম খুকু স্মৃতিকথায় লেখেন, ‘১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে পুরান ঢাকা থেকে মাকে নমিনেশন দেয়ার একটা প্রক্রিয়া চলতে থাকে। বাবা এ কথা জানতে পেরে মওলানা ভাসানী ও শেরেবাংলার সঙ্গে দেখা করেন। মাকে নমিনেশন না দেয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেন। বাবা তাদের বলেন, এমনিতেই ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার কারণে আমার সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম। আবার রাজনীতিতে জড়ালে আমার সংসার ভেঙে যাবে। আব্বার কান্নাকাটি ও অনুরোধের পর তারা ব্যাপারটি বুঝতে সক্ষম হন এবং মাকে আর নমিনেশন দেয়া হয়নি।’
পরে স্বামী আব্দুল মান্নাফের সঙ্গে মমতাজ বেগমের দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে। ১৯৫৯ সালের ১৫ নভেম্বর আব্দুল মান্নাফের সঙ্গে মমতাজ বেগমের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটে। ভাষাসংগ্রামী মমতাজ বেগম ১৯৬৭ সালের ৩০ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। ভাষা আন্দোলনে অনবদ্য ভূমিকা রাখায় মহীয়সী এই নারীকে বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে তার অবদানের প্রতি সম্মান জানায়।
বাংলা ভাষা দাবির আন্দোলনে অকুতোভয় ও অবিচল থাকার কারণে জেল-নির্যাতনের শিকারের পাশাপাশি সবকিছুই হারান মমতাজ বেগম। প্রথম আঘাত আসে তার সততা ও আত্মসম্মানের ওপর। অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আঘাত করা হয় তার পেশাজীবনকে। এরপর বন্ডসই ইস্যুতে স্বামীকে দাবার ঘুঁটি বানিয়ে আঘাত করা হয় তার দাম্পত্য জীবনে। এতকিছুর পরও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি মমতাজ বেগম। তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন বাঙালি সমাজে নারীর এমন সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া সহজ ছিল না। তাই বাঙালি নারীর অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার ঘটনা নারায়ণগঞ্জের মমতাজ বেগমের অবদান। মমতাজ বেগম এবং তার ছাত্রীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সূচনা পর্বের সাহসী অংশীদার, জাতীয় বীর। লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।