বৃহস্পতিবর, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৩২ pm
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই তারা জনগণকে ভয় পায়, জনসমাবেশকে ভয় পায়। সেজন্যই কোনো কর্মসূচি দিলে পথে পথে বাধার সৃষ্টি করছে। তবে কোনো বাধায় নেতাকর্মীরা পিছপা হয়নি। সব জায়গায় আমাদের কর্মসূচিকে নেতাকর্মীরা সফল করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, আমরা এখন যে আন্দোলনে আছি তার প্রথম দাবি সরকারের পদত্যাগ। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের আন্দোলন চলছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের একটা প্রধান অংশ হচ্ছে মানুষের ভোটের অধিকার। এই অধিকার বহু দিন থেকে খর্ব করা হয়েছে। জনগণ তাদের নিজের ভোট দিতে পারে না। সরকার নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট চুরি করছে। গত জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতি হয়েছে।
ড. মোশাররফ বলেন, এরপরও আমরা স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। আশা করেছিলাম যেহেতু বিগত জাতীয় নির্বাচনটি ছিল সরকারের টিকে থাকার নির্বাচন। তাই সরকারের ইচ্ছাকে বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন কমিশন এই অপকর্মগুলো করেছে। কিন্তু স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে কোনো সরকার পরিবর্তন হয় না। সেজন্য আমরা ভেবেছিলাম নির্বাচন কমিশন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিবেন। কিন্তু এই পরীক্ষায়ও তারা পুরোপুরিভাবে ফেল করেছে। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন দিয়ে আর সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই বিএনপি স্থানীয় নির্বাচনেও না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির সদস্য সচিব ও দলের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম জানান, বিএনপির উদ্যোগে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের জন্য গঠিত জাতীয় কমিটি দেশে ও বহির্বিশ্বে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে। স্বাধীনতার মহান ঘোষক, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর আদর্শ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও উন্নয়নের রাজনীতির ১৯ দফা কর্মসূচি এবং দেশ পরিচালনায় তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির অনন্য অবদানের কথা এ দেশের নতুন প্রজন্ম তথা সাধারণ জনগণের মাঝে প্রচার ও প্রসার এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য।
তিনি জানান, রচনা/নিবন্ধ প্রতিযোগিতা ১০টি স্তরে নিম্নলিখিত বিষয়বস্তুর ওপর অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি- প্রাথমিক স্তর (সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দ), বিষয়বস্তু : শিশুদের জিয়া; ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি- মাধ্যমিক স্তর (সর্বোচ্চ ৭৫০ শব্দ), বিষয়বস্তু : মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ জিয়া; একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি- উচ্চ মাধ্যমিক স্তর (সর্বোচ্চ ১০০০ শব্দ), বিষয়বস্তু: বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও জিয়াউর রহমান; বিশ্ববিদ্যালয়- উচ্চতর স্তর (নিম্নলিখিত ৪টি বিষয়বস্তু থেকে যে কোনো ১টি বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ ১৫০০ শব্দ), বিষয়বস্তু- ১: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি ২: শহীদ জিয়া: জননন্দিত রাষ্ট্রনায়ক ৩: বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও বিএনপি ৪: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শহীদ জিয়া; উন্মুক্ত স্তর (সব বয়সের): (যে কোনো ১টি বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ ২৫০০ শব্দ), বিষয়বস্তু- ১: মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি) ২: শহীদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচি ও এর বর্তমান উপযোগিতা ৩: বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সূচনা ও বিকাশ ৪: বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরে শহীদ জিয়ার অবদান; ইংলিশ মিডিয়াম: প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি: (সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দ) Subject: Children’s Zia; ইংলিশ মিডিয়াম: ‘ও’- এবং ‘এ’- লেভেল (সর্বোচ্চ ৭৫০ শব্দ) Subject: Bangladeshi Nationalism and Ziaur Rahman; বহির্বিশ্ব: (‘এ’- লেভেল পর্যন্ত; বাংলা অথবা ইংরেজি যে কোনো ভাষায় সর্বোচ্চ ১০০০ শব্দ), Subject: Bangladeshi Nationalism and Ziaur Rahman (বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও জিয়াউর রহমান); বহির্বিশ্ব: (বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত; বাংলা অথবা ইংরেজি যে কোনো ভাষায় সর্বোচ্চ ১৫০০ শব্দ) Subject: golden Jubilee of Independence: Expectation and Achievement (স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি) এবং বহির্বিশ্ব: (উম্মুক্ত স্তর: সব বয়সের) (বাংলা অথবা ইংরেজি যে কোনো ভাষায় সর্বোচ্চ ২৫০০ শব্দ), Subject: Liberation War and Independence: Expectation and Achievement (মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি)।
ড. ওবায়দুল ইসলাম জানান, রচনা পাঠানোর শেষ তারিখ ৩১ মে। [email protected] ই-মেইল ঠিকানায় রচনা/নিবন্ধ এর সফট কপি pdf file আকারে প্রেরণ করতে হবে। রচনা জমাদানকালে কভার পেইজে প্রতিযোগীদের নাম, পিতার নাম, শ্রেণি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা, ই-মেইল ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর অবশ্যই স্পষ্ট করে লিখতে হবে। বিশেষজ্ঞ বিচারক প্যানেল কর্তৃক প্রবন্ধসমূহ মূল্যায়ন করা হবে। বিচারক প্যানেল কর্তৃক নির্বাচিত বিভিন্ন স্তরের বিজয়ী প্রতিযোগীদের মধ্যে নিম্নলিখিত সময়সূচি অনুযায়ী পুরস্কার বিতরণ করা হবে। জেলা পর্যায়ে পুরস্কার বিতরণ: ৩১ জুলাই, বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কার বিতরণ ৩১ আগস্ট।
তিনি আরও জানান, এছাড়াও বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে ২য় পর্যায়ে রচনা আহ্বান করা হবে এবং ৩১ অক্টোবরের মধ্যে রচনা জমা দিতে হবে। জমাকৃত রচনার মধ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হবে। জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে ১৬ ডিসেম্বর।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় কমিটি সদস্য সচিব আবদুস সালাম, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক ড. ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ড. এমদাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. শফিকুল, হাসান মামুন, ড. শামসুজ্জামান মেহেদী. একরামুল হাসান, মামুনুর রশীদ মামুন, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। সূত্র : যুগান্তর। আজকের তানোর